ফেব্রুয়ারি ১৫: বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য সরবরাহ সমৃদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চীনাদের বসন্ত উত্সব উদযাপনের পদ্ধতিও অনেক পরিবর্তন হয়েছে। চলতি বসন্ত উত্সবটি চীনারা বর্ণাঢ্যভাবে উদযাপন করছেন। যা অনেকের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে।
অনেক মানুষ ডাম্পিং তৈরি করা, ‘ফু’ অক্ষর লেখা ও গান গাওয়াসহ নানা পদ্ধতিতে এ উত্সব কাটাচ্ছেন। চীনের খুন মিং থেকে লি চিয়াং যাওয়ার দুতলা ট্রেনে ভ্রমণ করার মাধ্যমে লি ইয়ু লুন পরিবার উত্সব কাটানোর পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন। ৭০০জন তাদের মতো উত্সব উদযাপন করছেন, যা লি ইয়ু লুন’র কল্পনার বাইরে।
লি ইয়ু লুন বলেন, ট্রেন যেভাবে সেজেছে, তা উত্সবমুখর। অসাধারণ একটি উত্সব কাটাচ্ছি আমরা।
ধীর গতির ট্রেনে বৈশিষ্ট্যময় উত্সবের স্বাদ নিতে পেরে খুব আনন্দিত তার মেয়ে। এভাবে উত্সব কাটানো যায়, অতীতে তা কোনোভাবেই ভাবা যেত না বলে মন্তব্য করেন লি ইয়ু লুন। তিনি বলেন, ৭ ঘণ্টা ধরে অব্যাহতভাবে চীন-লাওস ট্রেনে যাতায়াতের পর লুয়াং প্রাবাং রাজ্যে পৌছানো যায়।
যখন আমাদের সাংবাদিক তাঁর সাক্ষাত্কার নিচ্ছিলেন, তখন ট্রেনের কনডাক্টর এক নম্বর বগিতে গালা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানাতে আসেন। বসন্ত উত্সবের সময় সব বগিতে মানুষ ভরা। গভীর উত্সবমুখর পরিবেশ অনুভব করেছেন সব যাত্রী।
চীনের জাতীয় রেল কোম্পানির খুন মিন ব্যুরোর খুন মিং অংশের কনডাক্টর ছেন চিং জানিয়েছেন, আগে বসন্ত উত্সবের সময় ট্রেনে যাত্রীর চেয়ে কর্মীর সংখ্যা বেশি থাকতো। এখন এটা পরিবর্তন হয়েছে এবং উত্সবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ট্রেনে উত্সবের আওয়াজ গ্রামের বাড়ির চেয়ে ভালো।
এই ধীর গতির ট্রেনে গালা অনুষ্ঠানে চারদিকে আসা পর্যটকরা সমবেত হয়ে আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করেন।
বসন্ত উত্সব চলাকালে দশটিরও বেশি বৈশিষ্ট্যময় ট্রেনযোগে চীনারা বিশাল চীনে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং অসাধারণ বসন্ত উত্সবের কাটানোর অভিজ্ঞতা নিয়েছেন।
কেবল বাড়িতে নয়, বরং অন্য স্থানেও পুনর্মিলন করা যায়।
২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৪ সালের বসন্ত উত্সব চলাকালে যাত্রীর সংখ্যা ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। হিসাব অনুযায়ী, নতুন ১৪ হাজার উত্তপ্ত ভ্রমণ লাইনের জন্ম হয়েছে। তা থেকে বেশ কিছু বৈচিত্র্যময় উত্সব কাটানোর পদ্ধতি হয়েছে।
উত্তর চীনের তুষার ও বরফ ঢাকা স্থানে বসন্ত উত্সব চলাকালে প্রতিদিন ১১ লাখের বেশি পর্যটক ভ্রমণ করছেন। তাঁরা বেশিরভাগই দক্ষিণ চীনের মানুষ। চীনের চ্যচিয়াং প্রদেশের উ জেন শহরে নদীর ওপর ভাসানো ভোজ উপভোগ করেন পর্যটকরা। টিকিট সংক্রান্ত পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, বৈশিষ্ট্যময় সিটিতে উত্সব কাটাতে যাওয়া পর্যটকের তিন ভাগের এক ভাগ বড় শহর থেকে এসেছেন।
বসন্ত উত্সবের সময় ৪ হাজার ৬শ পর্যটক চীনের তৈরি জাহাজে করে বিশ্ব ভ্রমণ করছেন। বিস্ময়কর বিশ্ব দেখার পাশাপাশি তাঁরা নিজের তৈরি জাহাজ নিয়ে গৌরব বোধ করেন।
চীনের ছেং তু জায়ান্ট পান্ডা লালন কেন্দ্রের আশেপাশে হোমস্টে হোটেল বুকিংয়ের পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ গুণ বেড়েছে। জায়ান্ট পান্ডার সঙ্গী হয়ে বসন্ত উত্সব কাটানো বর্তমানে একটি নতুন শৈলীতে পরিণত হয়েছে।
এ বসন্ত উত্সবে সোশাল মিডিয়ায় ‘বসন্ত উত্সবের নতুন পদ্ধতি’ সংশ্লিষ্ট সার্চের পরিমাণ ৩৩ লাখ ছাড়িয়েছে। বিদেশে ভিসামুক্ত ভ্রমণ, সমুদ্র সৈকতে সার্ফ করাসহ নানা অনুষ্ঠান সার্চের শীর্ষে রয়েছে।
বৈশিষ্ট্যময় পদ্ধতিতে বসন্ত উত্সব কাটানোয় জীবন-যাত্রার নতুন পরিবর্তনের মাধ্যমে যুগের নতুন প্রাণশক্তি অনুভব করছেন চীনারা।
রুবি/তৌহিদ