ফেব্রুয়ারি ১৪: চীনের সিনচিয়াংয়ের কাজাখ জাতির সংগীতজ্ঞ আরশেং পাহাথি গত ১২ ফেব্রুয়ারি ট্রেনযোগে আলেথাই শহরে পৌঁছেছেন। কয়েকদিন আগে তিনি চায়না মিডিয়া গ্রুপের ২০২৪ সালের বসন্ত উত্সবের গালা অনুষ্ঠানে কাশি পার্শ্ব অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। সে মুহূর্তের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আমি অনেক ভাগ্যবান যে, টানা দু’বছর সিএমজি’র বসন্ত উত্সবের মঞ্চে হাজির থাকতে পেরেছি। সংগীতের মাধ্যমে সবাইকে সিন চিয়াং অঞ্চলের কাছে নিয়ে আসতে চাই।”
গত ৯ ফেব্রুয়ারির গালা অনুষ্ঠানে সিন চিয়াংয়ের কাশি পার্শ্ব অনুষ্ঠানের মঞ্চে ‘নৃত্য ও সংগীতে সিন চিয়াং’ শীর্ষক পরিবেশনে বৈশিষ্ট্যময় সিন চিয়াংয়ের দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে; যা দ্রুতভাবে স্যোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। অনেক নেটিজেন বলছেন, এ পরিবেশনায় সিন চিয়াংয়ের বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক সৌন্দর্য প্রতিফলিত হয়েছে। এটা তারা আরও দেখতে চান।
সিন চিয়াংয়ের পার্শ্ব অনুষ্ঠান কাশি পুরানো সিটিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুরানো সিটির দর্শনীয় অঞ্চলকে মঞ্চের ব্যাকগ্রান্ড হিসেবে স্থাপন করা হয়। প্রধান মঞ্চের পাশে ১২টি স্থাপনার চূড়ায় ছোট মঞ্চ স্থাপিত হয়। এরই মধ্যে একটি মঞ্চে আরশেং ঐতিহ্যবাহী কাজাখ জাতির পোশাকে আরেকজন উইগুর ড্রামারের সঙ্গে ‘নৃত্য ও সংগীতে সিন চিয়াং’ শীর্ষক পরিবেশনার কাজ করেন।
এক মাস আগে আরশেংকে চায়না মিডিয়া গ্রুপের ২০২৪ সালের বসন্ত উত্সবের গালা অনুষ্ঠানের সিন চিয়াংয়ের কাশি পার্শ্ব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আলেথাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন আরশেং। তিনি প্রথমবারের মতো দক্ষিণ সিন চিয়াংয়ের কাশি এবং কাশির পুরাতন সিটির দর্শনীয় স্থানে এসেছেন। তিনি বলেন, “আমি বিশেষভাবে তথ্য চেক করেছি। এটি বসতি স্থানের পাশাপাশি দর্শনীয় স্থান। স্থানীয় সরকার সংস্কার প্রকল্প চালু করেছে। যার ফলে আগেকার মূল বৈশিষ্ট্য বজায় রাখার ভিত্তিতে এখানকার অধিবাসীদের আরামদায়ক ও নিরাপদ জীবন রক্ষা করা হয়েছে। বাস্তব জীবনের দৃশ্যে মঞ্চ বসানো হয়েছে। এটি খুব চমত্কার।”
অনুষ্ঠানের রিহার্সাল করায় খুব ব্যস্ত ছিলেন আরশেং। তবে তাঁর ক্লান্ত লাগে নি। রিহার্সালের ফাঁকে তিনি মাঝেমধ্যেই কাশি পুরানো সিটিতে ঘুরে বেড়ান। তিনি বলেন, ‘কেবল চায়না মিডিয়া গ্রুপের বসন্ত উত্সবের মঞ্চে পরিবেশনের জন্য আনন্দিত নয়, বরং কাশি’র সৌন্দর্য উপভোগ করতে পেরেছি আমি। যখন কাশি পুরানো সিটির আরামদায়ক রোদে প্রবীণ ও হৈ চৈ করা শিশু ও ঝুলন্ত লণ্ঠন দেখি, তখন আমার ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।”
কাশি পুরানো সিটির দর্শনীয় স্থানে পার্শ্ব অনুষ্ঠানের মঞ্চ স্থাপনে স্থানীয় বাসিন্দারা খুব আনন্দিত। আরশেং বলেন, ‘এখানকার মানুষ আমাকে বলেছেন, বসন্ত উত্সবের সময় চীনজুড়ে এমন কি বিশ্বজুড়ে সবাই তাদের বাসস্থানে আয়োজিত একটি চমত্কার অনুষ্ঠান দেখতে পেয়েছেন। যা খুব গৌরবময় একটি ব্যাপার।’
গত ২০২৩ সালের বসন্ত উত্সবের গালা অনুষ্ঠানের প্রধান মঞ্চে আরশেং ও বেশ কয়েকটি জাতির সংগীতজ্ঞ ‘আমার গ্রামের বাড়ী’ শীর্ষক গান গেয়েছেন। সে থেকে এক বছর পর তিনি আবার গ্রামের বাড়ী-সিন চিয়াংয়ে সিএমজি’র গালা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরেছেন, যা অসাধারণ! তিনি বলেন, ‘এ বছর আমাদের অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশকের সংখ্যা দুই শতাধিক। এ অনুষ্ঠানের সময় বেশি নয়। তবে বিভিন্ন জাতির বৈশিষ্ট্য প্রদর্শিত হয়েছে।” এ গালা অনুষ্ঠানের দর্শকরা অবশ্যই নৃত্য ও সংগীতানুষ্ঠানের মাধ্যমে সিন চিয়াংকে পছন্দ করবেন বলে তিনি আস্থাবান।
সিন চিয়াং অঞ্চলের আলেথাইয়ের সংগীত ও নৃত্য দলের একজন সদস্য হিসেবে আরশেং প্রায়ই জেলা-থানায় পরিবেশনার জন্য যান। তিনি বলেন, “সিন চিয়াং প্রকৃত সংগীত ও নৃত্যের বাড়ি। তাই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বিশেষভাবে জনপ্রিয়। মঞ্চ বড় বা ছোট যাই হোক না কেন, আমি সংগীত ও পরিবেশনার মাধ্যমে সিন চিয়াংয়ের বর্ণিল সংস্কৃতি প্রদর্শন করবো। সুযোগ পেলে, আবার সিএমজি’র গালা অনুষ্ঠানের মঞ্চে উঠতে চাই।”
(রুবি/তৌহিদ/লাবণ্য)