উজবেকিস্তানের স্থানীয় বাজারে নতুন প্রাণ এনেছে চীনা প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প
2024-02-06 15:49:04

কর্মীরা কারখানার উপকরণ এলাকা, উপকরণ নির্বাচন এলাকা এবং গুদাম এলাকায় সুশৃঙ্খলভাবে কাজ করছেন। এটি চীনের বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত গ্লাস উৎপাদান ও প্রক্রিয়াকরণ প্রতিষ্ঠান মিং ইউয়ান সিলু শিল্পের দৃশ্য।

কোম্পানিটি জিজাক শিল্প পার্কে প্রতিষ্ঠিত প্রথম কারখানা। কোম্পানিটি শুধু উজবেকিস্তানের গ্লাসওয়্যার উত্পাদনের শূন্যস্থান পূরণ করেনি, বরং কার্যকরভাবে স্থানীয় খনি শিল্প, উপকরণ, জ্বালানি, লজিস্টিক, পরিবহনসহ বিভিন্ন শিল্পের উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়া এবং প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশটির স্টার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক লি ওয়েনমিং ২০১৬ সালে কারখানা প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে এখানে কাজ করছেন এবং এখনও পর্যন্ত প্রথমদিকের কঠিন সময়ের কথা তাঁর মনে আছে। তখন প্রয়োজনীয় অবকাঠামো প্রতিষ্ঠিত হয়নি, আশপাশে কয়েক কিলোমিটার ছিল কেবল ধু ধু মরুভূমি। একেকটি ইট যোগ করে তারা পুরো কারখানা নির্মাণ করেন। লি ওয়েনমিং বলেন, জিজাক শিল্প পার্ক চীন ও উজবেকিস্তানের উত্পাদন দক্ষতা সহযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। উজবেক সরকার ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের’ আওতায় বিনিয়োগকে উৎসাহ দিতে বেশ কিছু সুবিধাজনক নীতি কার্যকর করে। সরকারের কর্মকর্তারা বার বার কারখানাটি পরিদর্শন করতে আসেন এবং প্রকল্পের নির্মাণের প্রশংসা করেন।

বর্তমানে ৩০ হেক্টরের প্রকল্পটিতে দুটো ভিন্ন রকমের গ্লাস উত্পাদন লাইন আছে। নির্মানাধীন তৃতীয় পর্বের উত্পাদন লাইন চালু হবার পর প্রকল্পটি মধ্য এশীয় অঞ্চলের বৃহত্তম ফ্ল্যাট কাচের কারখানা হবে। এ কারখানায় উত্পাদিত গ্লাস শুধু উজবেকিস্তান ও নিকটবর্তী দেশগুলোর বাজারের চাহিদা পূরণ করে না, পোল্যান্ডের মতো ইউরোপীয় দেশেও যায়। রপ্তানির মাধ্যমে উজবেকিস্তানের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বড় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে এ কোম্পানিটি।

জাজিক শহরের সাবেক মেয়র আবখাহার তুচতায়েভ বলেন, “বিশ্বের নেতৃস্থানীয় প্রযুক্তি এবং আধুনিক ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা আছে চীনা প্রতিষ্ঠানের, যা স্থানীয় বাজারের জন্য নতুন প্রাণশক্তি যুগিয়েছে এবং পাশাপাশি জাজিকের মতো সিল্করোডের গুরুত্বপূর্ণ শহরটিকে আরও উজ্জ্বল করেছে।”

প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে এখানে কাজ করছেন স্থানীয় অধিবাসী শাহবোজ। একজন সাধারণ কর্মী থেকে কারখানার উত্পাদন দলের নেতা হয়েছেন তিনি। শাহবোজ বলেন, “চীনা প্রতিষ্ঠান এখানে বিনিয়োগ করে কারখানা প্রতিষ্ঠা না করলে, আমাকে শুধু বাসায় কৃষিকাজ করতে বা বাড়ি থেকে দূরে কোথাও কাজ করতে হতো। চীনা প্রতিষ্ঠানের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা ভালো। উত্কৃষ্ট কর্মীদের বিদেশে বিনিময় বা প্রশিক্ষণের সুযোগও আছে। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, চীনা সহকর্মীদের কাছ থেকে আমি সর্বশেষ প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে ও শিখতে পারি। এটা আমার ভবিষ্যত ক্যারিয়ার উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বেগবান করার পাশাপাশি মিং ইউয়ান সি লু শিল্প কোম্পানি ইতিবাচকভাবে সামাজিক দায়িত্ব পালন করেছে, সরকারি বিভাগের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে স্থানীয় মহামারী প্রতিরোধ, দুর্যোগোত্তর পুনর্গঠন ও অবকাঠামো নির্মাণসহ বিভিন্ন কাজে অংশ নিয়েছে এবং সুনাম অর্জন করেছে।

লি ওয়েনমিং বলেন, “প্রকল্পটি চীনা প্রতিষ্ঠানের প্রাণবন্ত ও পরিবেশ সংরক্ষণকে প্রতিনিধিত্ব করে। উজবেক পক্ষের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতায় পারস্পরিক কল্যাণ অর্জিত হয়েছে এবং যৌথভাবে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ নির্মাণের জন্য অবদান রেখেছি আমরা।” (প্রেমা/রহমান)