যুক্তরাষ্ট্রের ‘চীনকে পরিবর্তন করার’ ইচ্ছা বন্ধ করা উচিত
2024-02-06 19:51:57


ফেব্রুয়ারি ৬: সম্প্রতি, মার্কিন প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক সহকারী জ্যাক সালিভান ওয়াশিংটনে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বুঝতে পেরেছে যে, কয়েক ডজন বছর ধরে চীনকে পরিবর্তন করতে মার্কিন প্রচেষ্টা সফল হয় নি।’


এটা হচ্ছে মার্কিন সরকার প্রকাশ্যে স্বীকৃতি যে, গত কয়েক ডজন বছর ধরে ‘চীনকে পরিবর্তন করার’ মার্কিন কৌশল ব্যর্থ হয়েছে। তাদেরকে হতাশ করেছে যে, চীন সবসময় নিজের পথে চলছে, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বিপুল অগ্রগতি লাভ করেছে, দেশ শাসনের মান অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে এবং চীনা জাতির পুনরুত্থানে কেউ বাধা দিতে পারবে না। 


বাস্তবতার সামনে, যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ‘চীনকে পরিবর্তন করার’ ইচ্ছা বন্ধ করতে হবে। চীনের সাথে সমানভাবে সহাবস্থানের উপায় খুঁজতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পথ ভিন্ন, আগেও ছিল, ভবিষ্যতেও তেমন থাকবে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের উচিত এ বিষয়ে সম্মান করা। দু’পক্ষের পারস্পরিক ব্যবস্থা পরিবর্তন করার ইচ্ছা থাকা উচিত নয়। 


আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সবসময় এক ধরনের ‘বিভ্রম’ রয়েছে। তা হলো যুক্তরাষ্ট্র মনে করে বিশ্বকে শাসন করার অধিকার রয়েছে তাদের। মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন আগে বলেছিলেন, ‘বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অংশগ্রহণের পর চীন আরও বেশি পণ্য আমদানি করার বিষয়েই রাজি হয়নি, বরং আমাদের সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া মূল্যবোধ তারা আমদানি করতে রাজি হবে।’ মার্কিন কিছু কৌশলবিদ দৃঢ়ভাবে মনে করেন যে, সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙন এবং পূর্ব ইউরোপে নাটকীয় পরিবর্তনের পর, আরেকটি ঘটনা ঘটবে চীনে। তবে, বিশ্ববাসী দেখেছে এরপর ২০ বছর পার হয়েছে, চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। চীন সুষ্ঠুভাবে একটি চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নের পথ খুঁজে পেয়েছে। 


যুক্তরাষ্ট্র এখন বিবেচনা করছে ‘কেন চীনকে পরিবর্তন করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে?’ তবে, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত এ বিষয় বিবেচনা করা-‘কেন তারা মনে করে যে, তারা চীনকে পরিবর্তন করতে পারবে?’ ব্রিটেনের পণ্ডিত মার্টিন জ্যাকুইস জানান, যুক্তরাষ্ট্র চীনের আচরণ সঠিকভাবে বুঝতে পারে না। এর কারণ হল, যুক্তরাষ্ট্র চীনের ইতিহাস ও সংস্কৃতি অবহেলা করে আসছে।


‘চীনের উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাকে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় অতিরিক্ত ধারণা করেছে। মার্কিন পণ্ডিত কার্ট ক্যাম্পবেল ও ইলি র‍্যান্টার একটি যৌথ প্রবন্ধে এ কথা লিখেছেন। আসলে চাপ প্রয়োগ করে চীনের উন্নয়নের পথ পরিবর্তন করা যাবে না। চীন যা করেছে, তা সব দেশের উন্নয়ন ও জণকল্যাণের ওপর ভিত্তি করে।


চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বের শান্তি ও উন্নয়নকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রয়েছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক মানবজাতির ভবিষ্যতের ভাগ্য ও কল্যাণের সঙ্গে জড়িত। ‘দ্য ফাইন্যানশ্যল টাইমসের’ একটি প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ‘চীন সবসময় থাকবে’, যুক্তরাষ্ট্রকে তা উপলব্ধি করতে হবে। তবে, চীনকে আত্মসমর্পণ করানো আসলে কোনো কৌশল হবে না।’

(আকাশ/তৌহিদ/ফেইফেই)