সহজ চীনা ভাষা: ড্রাগনের চোখ আঁকা
2024-02-06 10:00:04

চীনের চান্দ্রপঞ্জিকায় প্রত্যেক যুগকে ১২টি প্রাণীর নামে চিহ্নিত করা হয়। আসন্ন চীনের নতুন বছর হল ড্রাগন বর্ষ। ড্রাগন চীনের একটি কাল্পনিক ও পৌরাণিক প্রাণী যা কালক্রমে চীনা জাতির টোটেম ও প্রতীকে পরিণত হয়েছে। পাশ্চাত্যের ড্রাগনের মত নয়, চীনা সংস্কৃতিতে ড্রাগনের আকার সাপের মত, গায়ে আঁশ আছে, মাথায় হরিণের মত সিং আছে, চোখ বাঘের চোখের মত, নাক সিংহের নাকের মত আর কান গরুর কানের মত। যা শক্তিশালী ও রহস্যময় প্রাণী, যা ক্ষমতা, শক্তি, মর্যাদা, মঙ্গল, সমৃদ্ধি, সৌভাগ্যের প্রতীক। ড্রাগন চীনা লোকদের মধ্যে ব্যাপকভাবে আরাধনা করা হয়। চীনা ভাষায় ড্রাগন সম্পর্কিত শব্দ অনেক। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা ড্রাগন সম্পর্কিত যে ছেং ইয়ু শেখাবো, তা হল ‘画龙点睛’, বা ‘ড্রাগনের চোখ আঁকা’।

এই গল্পে বলা হয়, নান পেই ছাও রাজবংশ আমলে একজন বিখ্যাত চিত্রকর ছিলেন। তার নাম চাং সেং ইয়াও। তার আঁকা ছবি খুব প্রাণবন্ত, মানুষ বেশ পছন্দ করত। ধনী ব্যবসায়ী ও রাজকীয় অভিজাতরা তার চিত্র কেনার জন্য অনেক টাকা ব্যয় করত। একবার সম্রাটের নির্দেশ অনুযায়ী তিনি নতুন নির্মিত একটি মন্দিরের জন্য ড্রাগনের ছবি আঁকেন। কিছু দিনের মধ্যে তিনি মন্দিরের দেয়ালে ৪টি প্রাণবন্ত ড্রাগন আঁকেন। এসব ড্রাগন এত প্রাণবন্ত যে দূর থেকে দেখে সত্যি ড্রাগন বলে মনে হয়। যা অনেক মানুষকে আকর্ষণ করে। তবে যখন কাছে যায় তখন মানুষরা আবিষ্কার করে যে, এসব ড্রাগনের চোখ নেই। সবাই খুব বিভ্রান্ত হয়, চাং সেং ইয়াওকে জিজ্ঞেস করে কেন ড্রাগনের চোখ আঁকেন না। তিনি জবাব দিয়ে বলেন: “চোখ আঁকা সহজ, কিন্তু চোখ আঁকলে ড্রাগন প্রাণ পাবে, উড়ে যাবে।” মানুষরা তার কথা শুনে হেসে উঠল। আঁকা ড্রাগন কিভাবে উড়ে যেতে পারে? সবাই মনে করে তিনি ঠাট্টা করছেন। সবার চাপে পড়ে চেং সেং ইয়াকে দুটি ড্রাগনের চোখ আঁকতে হয়। চোখ আঁকার পর এ দুটি ড্রাগন তার কথা মত প্রাণ পায় এবং দেয়াল ভেদ করে আকাশে উড়ে যায়। সবাই এই অবিশ্বাস্য দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে যায়। এ থেকে এসেছে ছেং ইয়ু ‘画龙点睛’ বা ‘ড্রাগনের চোখ আঁকা’। পরে মানুষ এই শব্দটি দিয়ে ‘কথা বলা বা প্রবন্ধ লেখার সময় কিছু বাক্য দিয়ে মূল বিষয়কে হাইলাইট করে, কথা ও প্রবন্ধ আরো শক্তিশালী হওয়ার আচরণ’ বর্ণনা করে।

 

কথোপকথন---চীনা রাশিচক্র

চীনের চান্দ্রপঞ্জিকায় প্রত্যেক যুগকে ১২টি প্রাণীর নামে চিহ্নিত করা হয়। শুরুতে যা সময় পরিমাপের জন্য, লোকবিশ্বাসের সঙ্গে মিশ্রিত ছিল। ১২টি প্রাণী ক্রমে ক্রমে বিভিন্ন অর্থ গ্রহণ করা হয় এবং চীনা সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়েছে। বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা চীনা রাশিচক্রের সঙ্গে আপনাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেবো এবং এ সম্পর্কিত কিছু চীনা ভাষা শেখাবো।

生肖 shēng xiāo চীনা রাশিচক্র 十二生肖 shí èr shēng xiāo ১২টি চীনা রাশিচক্র

১২টি চীনা রাশিচক্র হল:

鼠 shǔ ইঁদুর 牛 niú গরু  虎 hǔ বাঘ 兔tùখরগোস 

龙 lóng ড্রাগন  蛇shé সাপ  马mǎ ঘোড়া 羊 yáng ছাগল  

猴 hóu বানর  鸡 jī মোরগ  狗 gǒu কুকুর  猪 zhū শুয়োর

你属什么?/ nǐ shǔ shěn me?

你的生肖是什么?nǐ de shēng xiāo  shì shěn me ? তোমার রাশিচক্র কি?

我属龙 wǒ shǔ lóng  আমার রাশিচক্র ড্রাগন

প্রাচীনকালে রাজবংশগুলোর রাজারা নিজেদের ড্রাগনের মূর্ত প্রতীক বলে মনে করতেন। তাই চীনে ড্রাগন ক্ষমতার প্রতীক। যাদের রাশিচক্র ড্রাগন, তারা প্রতিভাবান, উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও নেতৃত্বের দক্ষতা আছে বলে ধারণা করা হয়। অন্যান্য রাশিচক্রের মানুষেরও নিজের বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন চীনারা সাধারণত মনে করে:রাশিচক্র ইঁদুর, তারা স্মার্ট, ধারণা বেশি;গরু, পরিশ্রমী ও ইচ্ছাশক্তি দৃঢ়; বাঘ, শক্তিশালী ও সাহসী;খরগোস, কোমল ও আবেগপূর্ণসাপ, রহস্যময় ও শান্ত;ঘোড়া, ইতিবাচক ও রোমান্টিক;ছাগল, বন্ধুত্বপূর্ণ ও যুক্তিসম্মতবানর, তীব্র কৌতূহল ও উচ্চ শেখা দক্ষতামোরগ, প্রতিযোগিতামূলক ও বিতর্কে ভালোকুকুর, আনুগত্য ও ন্যায়নিষ্ঠশুয়োর, সহানুভূতিশীল ও অন্যদের সাহায্য করতে ইচ্ছুক।

এ ১২টি রাশিচক্রে বারো বছর করে পর্যায়ক্রমে আসে। প্রতি ১২ বছর পর নিজের রাশিটি আবার ফিরে আসে। যখন সেই বছরের রাশি আপনার রাশি হয়, তখন চীনা ভাষায় সেই বছর ‘本命年(běn mìng   nián )’ কে বলা হয়।

今年是我的本命年 jīn nián shì wǒ de běn    mìng nián  এ বছরের রাশিচক্র আমার রাশিচক্র একই

明年是他的本命年 míng nián shì tā de běn    mìng nián  আগামী বছর রাশিচক্র তার রাশিচক্র হবে।

চীনারা মনে করে যদি ‘本命年’ আসে তাহলে সৌভাগ্যও আসবে। আর তা স্বাগত জানানো এবং স্বাস্থ্য ও শান্তি কামনার জন্য মানুষরা নিজের ‘本命年’ লাল পোশাক পরে।

যাই হোক, আশা করি সবাই নতুন বছরে ভালো ও সুস্থ থাকবে, সুন্দর জীবন কাটাবেন।