স্থানীয় ট্রেনে বসন্ত উত্সব পণ্যের দোকান
2024-01-31 09:56:24

চীনের বৃহত্তম উত্সব - ঐতিহ্যবাহী বসন্ত উৎসব আসন্ন। এ উৎসব উপলক্ষ্যে দেশটির কুইচৌ প্রদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে চলাচলকারী একটি ট্রেনে নতুন কিছু পরিবর্তন এসেছে।

৫৬৪০/৫৬৩৯ নম্বরের এ পুরান ট্রেনটি নতুন করে সাজানো হয়েছে। জানালায় লাগানো হয়েছে ড্রাগন বর্ষের কাগজ কাটা শিল্পকর্ম এবং পুরো ট্রেনে ঝুলানো হয়েছে লাল লণ্ঠন ও বসন্ত উত্সবের গাথা।

বিকেলে ৩টার দিকে এ ট্রেনটি কুইচৌ প্রদেশের খাইলি শহরের লিউ ক্য চি স্টেশনে পৌঁছায়। এখানে কয়েকজন গ্রামবাসী ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। তারা শাকসবজি, মাছ, মুরগি, হাঁস ও অন্য বৈশিষ্ট্যময় কৃষিপণ্য নিয়ে ট্রেনে ওঠেন।

এ ট্রেনটি চালু হয়েছিল ১৯৯৭ সালে এবং গত ২০ বছরে ট্রেনটি কুই ইয়াং ও ইউয়ু পিং – এ দুটি জায়গার মধ্যে চলাচল করে। এ রুটে ১০টি ছোট স্টেশন আছে। এ অঞ্চলের অধিবাসীরা ট্রেনটিকে সমৃদ্ধির ট্রেন হিসেবে গণ্য করে।

এ ট্রেনযোগে গ্রামবাসীরা বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে যান, তাদের কৃষিপণ্য জেলায় নিয়ে বিক্রি করেন।

আটত্রিশ বছর বয়সী উ মো বিয়াও নিয়মিত এ ট্রেনে চড়েন। আজ তিনি শাকসবজি চাষকারী কৃষকের জন্য নির্ধারিত বিশেষ কেবিনে উঠেছেন। তিনি ৫০ কেজি স্ট্রবেরি নিয়ে এসেছেন। তার স্ট্রবেরির সুগন্ধ সারা ট্রেনে ছড়িয়ে পড়েছে এবং অনেক যাত্রী তার কাছ থকে স্ট্রবেরি কিনছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তার স্ট্রবেরির অর্ধেক বিক্রি হয়ে যায়। তিনি জানান, সেদিন তার আড়াই হাজার ইউয়ানের মতো উপার্জন হতে পারে। এ ট্রেনের মাধ্যমে তিনি আরও দূরে তার স্ট্রবেরি বিক্রি করতে পারেন। প্রতি বছর ৬ লাখ ইউয়ান মূল্যের স্ট্রবেরি বেচেন তিনি। তার স্ট্রবেরি ক্ষেতের আয়তন ৪ গুণ বেড়ে ১ দশমিক ১ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। তিনি জানান, এখন অনলাইনেও স্ট্রবেরি বিক্রয় করা যায়, যে কারণে তিনি গ্রামের মানুষদের নিয়ে স্ট্রবেরি চাষ আরও উন্নত করার কথা ভাবছেন।

অন্যদিকে ৩৪ বছর বয়সি পান সিয়াও তার বন্ধুর সঙ্গে ফ্রি-রেঞ্জ মুরগি অর্থাৎ উন্মুক্ত জায়গায় পালা মুরগি ও ডিম বিক্রি করছেন। তারা মূলত ট্রেনে চড়ে খাইলি শহরে গিয়ে মুরগি ও ডিম বিক্রি করেন। তবে যাবার পথেই তাদের বেচা-বিক্রি শুরু হয়ে যায়। তারা প্রতিদিন ১০০টি মুরগি নিয়ে বাজারে যান এবং কয়েক ঘন্টার মধ্যে সবগুলো বিক্রি হয়ে যায়। এ বছর তারা ৪০ হাজারের বেশি মুরগি পালছেন এবং তাদের বিক্রির পরিমাণ ৮ লাখ ইউয়ানে পৌঁছতে পারে।

ট্রেনের প্রধান হু কুই ছুয়ানকে ট্রেন দোকানের মালিক বলে ডাকেন স্থানীয়রা। তিনি এ ট্রেনে ২৮ বছরের মতো কাজ করছেন। তিনি ট্রেনের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিনা খরচায় কৃষকদেরকে পণ্য বিক্রিতে সাহায্য করেন।

তিনি বলেন, “আমরা মন দিয়ে এ ট্রেনটি সাজিয়েছি এবং আশা করি আরও বেশি মানুষ গ্রামীণ পুরুজ্জীবনের এ ট্রেনে যোগ দেবেন।”(শিশির/রহমান/রুবি)