জানুয়ারি ৩১: গত বছর চীনের কোনো কোনো জায়গায় বন্যা ও ভূমিকম্পসহ নানান প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানে। সেসব জায়গার পুনর্নির্মাণকাজ এখনও চলছে। বসন্ত উত্সব আসন্ন। এ সময় দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর অবস্থা কী?
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর কানসু প্রদেশের চিশিশান জেলায় রিখটার স্কেলে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের পর ৫৮ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ প্রিফ্যাব ঘরে স্থানান্তরিত হন। আসন্ন বসন্ত উত্সবের সময়টা তাঁরা পুনর্বাসন সাইটেই কাটাবেন। তাদের বসন্ত উত্সবের আমেজ দিতে জেলার সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা ‘ভিলেজ গালার’ আয়োজন করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্য ‘ভিলেজ গালার’ আয়োজন ছাড়াও, তাদেরকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও অর্থ দেওয়া হচ্ছে।
বর্তমানে কানসু প্রদেশে দুর্যোগপরবর্তী পুনর্নির্মাণের কাজ সুশৃঙ্খলভাবে এগিয়ে চলেছে এবং চলতি বছরের অক্টোবর মাসের আগে বাসিন্দাদের বাড়িঘরের পুনর্নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
গত বছরের আগস্ট মাসে সুপার টাইফুন ডকসুরির প্রভাবে হেলোংচিয়াং প্রদেশের হারবিনের শাংচি শহরে ব্যাপক ঝড়বৃষ্টি হয়। গোটা এলাকার ১৬৩টি গ্রামের মধ্যে ১৬১টি গ্রামের ৪২৪০টি বাড়িঘর বিভিন্ন মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সম্প্রতি সিএমজি’র সংবাদদাতা শাংচি শহরের লোংওয়াংমিও গ্রামে গিয়ে খোঁজ-খবর নেন। গ্রামে প্রবেশের পর তিনি ঝড়বৃষ্টির পরের কোনো ক্ষয়ক্ষতির কোনো চিহ্ন দেখেননি। দুর্যোগ ঘটার পর শহর, জেলা ও থানা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা একাধিক কর্মগ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন এবং গ্রামের পুনর্নির্মাণ কাজে ও কৃষির উত্পাদানে ঝাঁপিয়ে পড়েন। বর্তমানে শাংচি শহরের ৪২৪০টি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরের পুনর্নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে এবং সেখানকার গ্রামবাসীরা উষ্ণ ঘরে শীত কাটাচ্ছেন। আসন্ন বসন্ত উত্সবে শতাধিক গ্রামবাসী বাইরে থেকে গ্রামে ফিরে উত্সব উদযাপন করবেন। পরের কয়েকদিনে গ্রাম আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস করা যায়।
গত বছর হ্যপেই প্রদেশের চুওচৌ শহর ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে সেখানকার উত্পাদন পরিস্থিতি ও জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়েছে। সম্প্রতি সিএমজি’র সংবাদদাতা চুওচৌ শহরে পুনর্গঠনের কাজ খতিয়ে দেখেন।
চুওচৌ শহরের একটি বড় আকারের মুদ্রণশালায় ৮০টি মেশিন চালু আছে। শ্রমিকরা নানান কাজে ব্যস্ত। তাঁরা বসন্ত উত্সবের আগের সর্বশেষ অর্ডারের কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন। মুদ্রণ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, গত বছর ঝড়বৃষ্টির সময় কর্মশালার সকল মেশিন বন্যায় নষ্ট হয়ে যায়। বন্যা শেষ হওয়ার পর সরকারের সাহায্যে মেরামতকাজ শুরু হয়। তাঁরা ৫০ লাখ ইউয়ান ঋণ গ্রহণ করেন এবং এই ঋণ দিয়ে নতুন মেশিন কেনেন। গত বছরের অক্টোবর মাসেই শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উত্পাদন পুনরুদ্ধার হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আরও বলেন, এখন পর্যন্ত তারা অনেক অর্ডার পেয়েছেন এবং তাদের ভবিষ্যত আরও সুন্দর হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
চুওচৌ শহরের প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন ব্যুরোর সূত্র থেকে জানা গেছে, সেখানে ২২৭টি প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন শিল্পপ্রতিষ্ঠান আছে। গত বছরের বন্যায় ২১৩টি বিভিন্ন মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধারাবাহিক পুনর্গঠন ও সাহায্য এবং ত্রাণব্যবস্থার কারণে বর্তমানে এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক উত্পাদন চলছে। (লিলি/আলিম)