নরওয়েতে চীনের বরফ-ভাস্কর্য ও বসন্ত উত্সব
2024-01-30 14:07:33

জানুয়ারি ৩০: এই শীতে হারবিনে বরফের ভাস্কর্য অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এখন নরওয়ের রাজধানী অসলোতেও বরফের ভাস্কর্য সেখানকার বাসিন্দাদের দৃষ্টি আকর্ষণও করছে। ‘হ্যালো, চায়না’ শিরোনামের একটি বরফের লণ্ঠন শিল্প প্রদর্শনী উদ্বোধন হয়েছে সেদেশে।

বরফের ভাস্কর্য দেখতে হারবিনে যাওয়া অনেক চীনা পর্যটকের শীতকালীন ভ্রমণের অপরিহার্য অংশে পরিণত হয়েছে। এখন নরওয়ের রাজধানী অসলোতেও হারবিনের বরফের ভাস্কর্য কাছ থেকে দেখতে পারছেন দর্শকরা। ‘হ্যালো! চায়না’ শিরোনামে বরফের লণ্ঠন শিল্প প্রদর্শনী সম্প্রতি নরওয়ের রাজধানী অসলোতে উদ্বোধন হয়। নরওয়েতে হারবিনের বরফের ভাস্কর্য শিল্পীদের দ্বারা বিশেষভাবে তৈরি বরফের ভাস্কর্য এবং সিছুয়ান প্রদেশের চিকোংয়ের লণ্ঠনগুলো স্থানীয় অনেক লোককে আকৃষ্ট করেছে এবং তাদের প্রশংসাও কুড়িয়েছে।

এবারের প্রদর্শনীটি নরওয়েতে চীনা দূতাবাসের উদ্যোগে আয়োজিত হয়। এটি চলবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। নরওয়েতে চীনের রাষ্ট্রদূত হৌ ইউ এবং ইনোভেশন নরওয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট এলবিসাবেথ মায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। হৌ ইউ অনুষ্ঠানে বলেন, চীন ও নরওয়ে রঙিন বরফ ও তুষার সংস্কৃতির দেশ। বরফ ও তুষারের প্রতি অভিন্ন ভালোবাসা ভাগ করে নেওয়ার জন্য, চীন বিশেষভাবে হারবিন আইস অ্যান্ড স্নো ওয়ার্ল্ডের শিল্পীদের নরওয়েতে আমন্ত্রণ জানায়। তাঁরা বরফ কেটে ড্রাগন ও জায়ান্ট পান্ডার ভাস্কর্য তৈরি করেছেন। সাথে আছে অন্যান্য শিল্পকর্মও। এসব বরফের ভাস্কর্যের মাধ্যমে নরওয়ের বন্ধুদের বসন্ত উত্সবের শুভেচ্ছা জানায় চীন।

কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে, দু’দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান জোরদার হবে, পর্যটন সহযোগিতা জোরালো হবে, এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে নতুন জীবনীশক্তি যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর অনেক স্থানীয় লোক বরফের ভাস্কর্য এবং রঙিন লণ্ঠনের সৌন্দর্য উপভোগ করেন এবং সেগুলোর সাথে ছবি তোলেন। ইনোভেশন নরওয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট এলবিসাবেথ মায়ের বলেন, এশিয়ায় চীন হলো নরওয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার। ভবিষ্যতে দু’দেশ আরো ব্যাপক সহযোগিতা চালাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,

 “আমি বরফের ভাস্কর্য ও লণ্ঠনের এই চমত্কার প্রদর্শনী দেখে খুব চমত্কৃত হয়েছি। এটি অসলোকে চীনের দেওয়া খুব সুন্দর ও মূল্যবান উপহার। আমরা দুই দেশের মধ্যে ভবিষ্যতের সহযোগিতার প্রত্যাশায় রইলাম। আমাদের দুই দেশের সহযোগিতার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তবে, আমরা অভিন্ন চ্যালেঞ্জেরও মুখোমুখি হয়েছি ও হচ্ছি। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে আমাদের নতুন সমাধানের পদ্ধতি খুঁজে বের করা উচিত। চীন এশিয়ায় আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার। আমাদের সহযোগিতা নিয়ে অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। আমি সকল চীনা বন্ধুকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাই এবং তাদের জন্য ড্রাগন-বর্ষের শুভ কামনা জানাই।”

ইনোভেশন নরওয়ের এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের প্রধান ওলে হেনায়েস বলেন,

 “এই অনুষ্ঠান দারুণ চমত্কার এবং এটি মহান পদ্ধতিতে চীনের সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে চীনা বাজারের উন্নয়ন অনেক আধুনিক ও উন্নত। চীনা বাজারের সাথে খাপ খাইয়ে আমাদের উদ্ভাবনী ব্যবসার প্রশিক্ষণ নিতে হবে। একটি সত্যিকারের সফল ব্যবসা কেবল নরওয়েজিয়ান কোম্পানির জন্যই কল্যাণ বয়ে আনে না, বরং চীনা সমাজকেও উপকৃত করে। আমি সকলের সুস্বাস্থ্য এবং ড্রাগন-বর্ষের শুভ কামনা জানাই।”

চীনে নরওয়ের দূতাবাসের সাবেক কালচারাল কাউন্সিলর রিগমোর জনসনও চীনাদের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন,  “ড্রাগন-বর্ষে আমি আপনাদের জন্য শান্তি, সুস্বাস্থ্য, সুখ, এবং কল্যাণ কামনা করি।” (লিলি/আলিম)