জানুয়ারি ২৬: গতকাল (বৃহস্পতিবার) চীনের ‘নিউজ ফিডে’ বলা হয়, ২০২৩ সালে চীনের ‘প্রকৃত অর্থনীতি’ ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন ক্ষেত্রগুলোর নানা পরিসংখ্যানের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির শক্তিশালী চালিকাশক্তি তুলে ধরা হয় এতে।
চীনের জাতীয় আর্থিক নিয়ন্ত্রণ প্রশাসন থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ চীনে উচ্চ-প্রযুক্তির শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ঋণ সংক্রান্ত উদ্বৃত্ত ২০২২ সালের একই সময়ের তুলনায় ২০ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। একই সময়ে নির্মাণ শিল্পের ঋণ সংক্রান্ত উদ্বৃত্ত বাড়ে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ঋণ উদ্বৃত্ত বাড়ে ২৩ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং কৃষি শিল্পে ঋণ উদ্বৃত্ত ২০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এগুলো বিভিন্ন ঋণ প্রকল্পের গড় প্রবৃদ্ধি হারের চেয়ে বেশি।
২০২৩ সালের শেষ নাগাদ চীনে ব্যাংকিং খাতের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থের মোট পরিমাণ ছিল ৪১৭ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, যা ২০২২ সালের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। বিমা কোম্পানিগুলোর মোট অর্থ দাঁড়ায় ২৯ দশমিক ৯৬ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে, যা ১০ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। পরিসংখ্যানে আরও বলা হয়, ব্যাংক ও বিমা খাতের অর্থের মোট পরিমাণ সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীলতায় বজায় রেখেছে। এর প্রবাহেও উচ্চ গতি রয়েছে।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) চীনের সাধারণ শুল্ক প্রশাসন জানায়, ২০২৩ সালে গোটা চীনে নতুন করে কর হ্রাসের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২২৮ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ইউয়ান, যার চার ভাগের তিন ভাগ ছিল বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের করদাতাদের।
এদিন চীনের বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রশাসন এক্সপ্রেস ডেলিভারি শিল্পের পাঁচটি জাতীয় মানদণ্ড প্রকাশ করে। এর মধ্যে প্রধানত এক্সপ্রেস ডেলিভারি প্যাকেজ সাজানো এবং পরিষেবার গুণগত মান - এই দুটো বিষয় রয়েছে। একই দিন চীনের জাতীয় জ্বালানি প্রশাসন থেকে প্রকাশিত তথ্য-উপাত্তে দেখা যায়, ২০২৩ সালে বিশ্বে নবায়নযোগ্য জ্বালানির নতুন নতুন স্থাপনার উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৫১০ মিলিয়ন কিলোওয়াট। এর মধ্যে চীনের অবদান ৫০ শতাংশেরও বেশি। চীনের বায়ুবিদ্যুৎ ও ফটোভোলটাইক পণ্য ইতোমধ্যেই বিশ্বের ২ শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে রপ্তানি হচ্ছে।
২০২৩ সালের শেষ নাগাদ গোটা চীনে ৬ হাজার ৩২৮টি হাইওয়ে পরিষেবা কেন্দ্রে চার্জিং ব্যবস্থা বসানো হয়েছে। একই সঙ্গে সারা চীনে নতুন জ্বালানি সঞ্চয় প্রকল্পের দক্ষতা ৩১ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন কিলোওয়াটে পৌঁছেছে।
চীনের প্রাকৃতিক পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালে চীনে প্রিফেকচার স্তর এবং তার উপরে শহরগুলোতে পিএম২.৫-এর গড় ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে ছিল ৩০ মাইক্রোগ্রাম। গত বছর চীনের বাতাসের গুণগতমান ভাল ছিল বছরের ৮৬ দশমিক ৮ শতাংশ সময়ে।
এদিন বেইজিংয়ে চীন ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে ভিসামুক্ত চলাচল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিটি আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হবে। এ চুক্তির আওতায় এক দেশের নাগরিকরা পর্যটন, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ বা ব্যবসাসহ বিভিন্ন কারণে অপর দেশে ৩০ দিন ভ্রমণ করতে পারবেন কোন প্রকার ভিসা ছাড়া।
চীনের সংস্কৃতি ও পর্যন্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের বসন্ত উত্সব চলাকালে ‘আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করা এবং ভ্রমণ করা’ একটি জনপ্রিয় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে, চলতি বছরের বরফ ও তুষার মৌসুমে চীনের বিভিন্ন বিনোদন কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা প্রথমবারের মতো ৪০০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এ বছর এ খাত থেকে আয় হবে ৫৫০ বিলিয়ন ইউয়ান।
আজ (শুক্রবার) থেকে ২০২৪ সালের বসন্ত উত্সবের পরিবহন শুরু হয়েছে। পরিবহন মন্ত্রণালয় জানায়, আগামী ৪০ দিনে চীনে ছোট-বড় মিলিয়ে ৯ বিলিয়ন ভ্রমণ হবে। (ওয়াং হাইমান/রহমান)