থাই মেয়ে আমুন্ডিলা কুছেং-এর প্রেমে পড়েছিল: কুছেং-এর দীর্ঘ ইতিহাসে চীনা প্রজ্ঞা ও আকর্ষণ অন্বেষণ
2024-01-02 14:58:24

থাই মেয়ে আমুন্ডিলা কুছেং-এর প্রেমে পড়েছিল: কুছেং-এর দীর্ঘ ইতিহাসে চীনা প্রজ্ঞা ও আকর্ষণ অন্বেষণ

 

কুছেং-এর শব্দ মৃদু ও দীর্ঘ, সুরের মাধ্যমে চীনা দর্শন এবং জ্ঞান প্রকাশ করা হয়। থাইল্যান্ড থেকে আসা আমুন্ডিলা, ছোটবেলা থেকেই এই শব্দ ও সুরের প্রতি গভীর প্রেমে পড়েন এবং এজন্য চীনে এসে তা শেখার প্রবল ইচ্ছা পোষণ করেন।

“এত দক্ষতা অর্জনের জন্য আপনি কতদিন ধরে কুছেং অনুশীলন করছেন?

আমুন্ডিলা: "আমি প্রায় দুই সেমিস্টার ধরে এটি অধ্যয়ন করেছি। আমি যতবারই অধ্যয়ন করি, আমি তার খুব কাছাকাছি অনুভব করি এবং এর কমনীয়তা ও সৌন্দর্য আরও ভালভাবে অনুভব করতে পারি।"

থাইল্যান্ডের আমুন্ডিলার একটি কাব্যিক চীনা নাম "ইয়াংলিউ" রয়েছে। তার লম্বা, ঘন কালো চুলগুলো তার কানের কাছে চুপচাপ ঝুলে থাকে। যখন সে কুছেং বাজায়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা শান্ত সৌন্দর্যের অনুভূতি দেয়।

ইয়াং লিউ বর্তমানে বেইজিং ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়ন করছে, ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অফ চাইনিজ ল্যাংগুয়েজে চীনা ভাষায় মেজর করছেন। চীনের সঙ্গে তার গল্প এবং কুছেং-এর সঙ্গে তার ভাগ্য নিয়ে কথা বলার বিষয়টি তিনি স্মরণ করে বলেন:

"যখন আমি উচ্চ বিদ্যালয়ে ছিলাম, আমি চীনা সংস্কৃতি ও ইতিহাস অধ্যয়ন করতাম এবং শিক্ষক আধুনিক চীনের অর্থনীতি এবং উন্নয়ন সম্পর্কেও কথা বলতেন। বিশেষ করে আমাদের রাজকন্যা, সে চীনা সংস্কৃতি খুব পছন্দ করে। তার কুছেং ১০ লেভেলের পরীক্ষা পাস হয়েছে, তাই এটি আমার প্রথমবার যখন আমি বেইজিং ভাষা ও সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি, আমি দেখতে চেয়েছিলাম যে, সেখানে কোনো কুছেং ক্লাস আছে কি না? আমি দেখলাম সেখানে একটি ক্লাস আছে।"

প্রথমবার যখন তিনি কুছেং বাজান, ইয়াং লিউ কুছেং-এর স্বচ্ছ ও সুরেলা ধ্বনিতে মগ্ন হয়ে যান। হাজার বছরের আবেগ বহনকারী শব্দটি ছিল আত্মার গোঙানির মতো, তার আত্মাকে স্পর্শ করে। ইয়াং লিউ এর মতে, এই সবই ভাগ্য ছিল, তাই তিনি কুছেং শেখার জন্য তার সব প্রচেষ্টা রেখেছিলেন এবং তিনি তার শিক্ষকের স্বীকৃত পেয়েছেন। মাত্র তিন মাস অধ্যয়নের পরে, ইয়াং লিউ মঞ্চে অভিনয় করার সুযোগ পান।

"‘বুক রিদম’ হল উত্তর চীনের একটি সুর। এটি ‘পর্বত এবং প্রবাহিত জলের’ একটি অংশ। এটি খুব উত্তেজনাপূর্ণ শোনায় এবং এতে প্রাণবন্ত আবেগ রয়েছে। এতে ছন্দের অনুভূতি রয়েছে। আপনি যখন এটি বাজাবেন, তখন আপনি একটি প্রাচীন মানুষ পড়ার সময় মাথা নাড়ছে- এমন গানের মতো শুনবেন। এই ধরনের ছন্দ খুবই আকর্ষণীয়।"

"আমি এখন প্রায় দুই সেমিস্টার ধরে এটি অধ্যয়ন করছি। যতবার আমি এটি অধ্যয়ন করি, আমি এটির কাছাকাছি অনুভব করি এবং এর কমনীয়তা ও সৌন্দর্য আরও ভালভাবে অনুভব করি। আমি প্রথমবার মঞ্চে খুব নার্ভাস ছিলাম, কিন্তু পারফরম্যান্সটি মসৃণভাবে হয়েছিল এবং আমিও অনেক বিদেশি ও চীনা বন্ধুদের প্রশংসা পেয়েছি, যা আমাকে আগের চেয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী করে তোলে এবং আমাকে উষ্ণ ও আনন্দিত করে তোলে।"

কুছেং শেখার মাধ্যমে, ইয়াং লিউ চীনা সংস্কৃতি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছেন। তিনি বলেছিলেন যে, প্রতিটি সংগীত প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত চীনের কিংবদন্তি তুলে ধরে এবং তারা চীনা সংস্কৃতির বাহক। যখন কুছেংয়ের শব্দ হয়, তিনি সবসময় ইতিহাসের দীর্ঘ নদীতে প্রবাহিত চীনা জ্ঞান অনুভব করতে পারেন। ইয়াং লিউ বলেন,

"আমার জন্য, কুছেং শেখার সময়, আমি চীনা সংস্কৃতিকে আরও ভালভাবে বুঝতে পারি। বিভিন্ন সুরের নিজস্ব গল্প এবং প্রকাশের উপায় রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কুছেং বাজানোর ছন্দ- উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে আলাদা। দক্ষিণের শব্দ আমার হৃদয়কে মৃদু প্রভাবিত করে। কিন্তু উত্তরের শব্দ অন্য ধরনের অনুভূতি দেয়।"

"জার্নি টু দ্যা ওয়েস্ট" চলচ্চিত্রের থিম সং একটি গান- যা ইয়াং লিউ খুব পছন্দ করে। এটি ভালবাসা ভেঙ্গে দেওয়ার গল্প বলে। তিনি বলেছিলেন যে, তিনি যখন থাইল্যান্ডে সিনেমাটি দেখেছিলেন তখন তা গভীরভাবে স্পর্শ করেছিল এবং চীনা কিংবদন্তিদের কল্পনায় পূর্ণ ছিল।

তিনি বলেন,

"'জার্নি টু দ্য ওয়েস্ট' বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কিত গল্প। কিন্তু মুভিটি সান উকং অভিনীত এবং বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে অনেক জীবনদর্শন তুলে ধরে। একজন ব্যক্তির জীবনে অবশ্যই অনেক অসুবিধা থাকবে এবং আপনাকে অবশ্যই অধ্যবসায় করতে হবে। হাল ছেড়ে দেওয়ার সময় জানতে হবে। এটি একটি খুব মর্মস্পর্শী এবং প্ররোচনামূলক গল্প। অবশ্যই, চীনে অনেক কিংবদন্তি ও গল্প রয়েছে এবং আমি সেগুলি সত্যিই পছন্দ করি।"

ইয়াং লিউ-এর পর্যবেক্ষণে, বৈশ্বিক উন্নয়ন চিত্রে "চীনা ছাপ" এর ক্রমবর্ধমান সংখ্যা চীন ও বিশ্ব নতুন যুগে উদ্ভাবন এবং জয়-জয় সহযোগিতায় হাত মেলানোর ফলপ্রসূ ফলাফল। তিনি বলেন যে, থাইল্যান্ড ও চীনের মধ্যে পারস্পরিক সমর্থন এবং বন্ধুত্বপূর্ণ উন্নয়নের বাস্তব ফলাফলের পিছনে রয়েছে জনগণের মধ্যে বন্ধনের শক্তি, যা দুই দেশের জনগণের জীবন ও অভিজ্ঞতার মিথস্ক্রিয়া থেকে উদ্ভূত হয়েছে। ইয়াং বলেন,

"বিশ্বের ছোট থেকে বৃহত্ সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রয়োজন। চীন এবং অনেক দেশ একে অপরকে সাহায্য করে এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় করে। আমি জানি যে, থাইল্যান্ড ও চীনের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে সম্পর্ক খুব ভালো। ক্রমাগত শেখা ও পর্যবেক্ষণ থেকে আমি আরও দেখতে পেলাম যে, আমাদের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। যদিও অনেক পার্থক্য আছে, আমরা একে অপরকে অন্তর্ভুক্ত করি এবং সম্মান করি, যা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের সবসময় সাংস্কৃতিক বিনিময় ছিল। বলা যেতে পারে যে, আমরা সত্যিকারের বন্ধু।"

 

ইয়াং লিউ বলেন যে, চীন এমন একটি দেশ যেখানে উচ্চ মানের শিক্ষার সংস্থান, ক্রমাগত অপ্টিমাইজ করা এবং উন্মুক্ত নীতি বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিশ্বকে দেখার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে। তিনি আশা করেন যে, এই সুযোগগুলিও কাজে লাগাবেন, তার ব্যক্তিগত ক্ষমতা বাড়াবেন এবং নতুন যুগে উভয় দেশের ক্রমাগত উন্নয়নে অবদান রাখবেন। তিনি বলেন,

"চীনে অনেক সুযোগ রয়েছে এবং আপনি প্রতিদিন চীনের অগ্রগতি এবং উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছেন। তাই আমাকে অবশ্যই কঠোর অধ্যয়ন করতে হবে, বিশেষ করে চীনাভাষা ভালভাবে শিখতে হবে, কারণ অনেক দেশ এখন চীনা ভাষাকে খুব গুরুত্ব দেয়। যার মধ্যে থাইল্যান্ডের অনেক মানুষ রয়েছে। চীনা ভাষা স্থানীয়ভাবে ব্যবহৃত হয়, তাই চীনা ভাষা ভালোভাবে শেখার মাধ্যমে আমাদের দুই দেশের বন্ধুত্ব আরও উন্নত করা যাবে এবং দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের দূত হিসেবে কাজ করা যাবে।"

 

"হ্যালো! চীন"--আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক ও পর্যটন শিল্পের লোকেরা চীনের পর্যটন বাজারের সম্ভাবনা সম্পর্কে আশাবাদী

চীন আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা সম্প্রতি "হ্যালো! চায়না" থিম নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সিনহুয়া নিউজ এজেন্সির সাংবাদিকদের সাক্ষাত্কার দেওয়ার সময় সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক ও পর্যটন অংশগ্রহণকারী পেশাদাররা বলেন, চীনের পর্যটন বাজারের উন্নয়নের সম্ভাবনা এবং তাদের ইচ্ছার বিষয়ে তাদের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। চীনের সঙ্গে পর্যটন বাজারকে আরও গভীর করার জন্য পণ্য, তথ্য ও পরিষেবার মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিনিময় ও সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক।

৭০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের পর্যটন প্রচার সংস্থা, সংশ্লিষ্ট উদ্যোগ এবং ৮ বেশি আন্তর্জাতিক ট্রাভেল এজেন্ট প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যটন বিনিময় এবং সহযোগিতা জোরদার করতে এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করেছে। বাণিজ্যমেলা চলাকালীন অনুষ্ঠিত গ্লোবাল ট্রাভেল এজেন্ট কনফারেন্সে, চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের জাতীয় পর্যটন চিত্র চালু করেছে- "হ্যালো! চায়না" (চীনা ভাষায় "Nihao! China"), এবং এই চিত্রটিকে ঘিরে চক্রাকার কার্যক্রম প্রচার করা হবে, যাতে চীনের জাতীয় পর্যটন চিত্রের আন্তর্জাতিক প্রভাব ও খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।

"থাইল্যান্ড অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, বিনিয়োগ, শিক্ষা ও বিশেষ করে পর্যটন খাতে চীনের সঙ্গে সহযোগিতাকে অনেক গুরুত্ব দেয়।" থাইল্যান্ডের পর্যটন ও ক্রীড়ামন্ত্রী সুথাওয়ান বলেন যে, চীনের পর্যটন শিল্পের বৃহত্তম মেলা হিসাবে পর্যটন মেলা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। থাই ট্রাভেল এজেন্টরা তাদের চীনা সমকক্ষদের সঙ্গে এটি যোগাযোগের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম, চীনা পর্যটকদের কাছে নতুন থাই পর্যটন পণ্য প্রচার করে এবং চীনের বাজারের অংশীদারিত্ব সম্প্রসারণ করে।

থাইল্যান্ড এ বছরের পর্যটন বাণিজ্যমেলার অতিথি দেশ, যেখানে ২০টিরও বেশি থাই ট্রাভেল এজেন্সি অংশগ্রহণ করেছে। এই পর্যায়ে, থাইল্যান্ড প্রায় পাঁচ মাসের জন্য (২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ ২৯ ফেব্রুয়ারি) চীনা পর্যটকদের জন্য ভিসা-মুক্ত নীতি বাস্তবায়ন করছে।

 

"থাইল্যান্ড চীনা পর্যটকদের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যগুলির মধ্যে একটি। থাই জনগণও চীন ভ্রমণে খুব আগ্রহী।" সুথাওয়ান বলেন যে, চীন-লাওস রেলপথের উদ্বোধন থাইল্যান্ড ও চীনের পর্যটন শিল্পের বিকাশ আরও উন্নীত করবে। তিনি আশা করেন, দুই দেশের জনগণ পর্যটন সম্পদ ভাগাভাগি করার এই সুযোগ নিতে পারে।

 

মিয়ানমারের হোটেল ও পর্যটনমন্ত্রী ডেডেকাই বলেন যে, চীনা পর্যটকরা ২০১৯ সালে মিয়ানমারের অন্তর্মুখী পর্যটনের ৩৪ শতাংশ এবং মিয়ানমারের পর্যটকদের বৃহত্তম উত্স ছিল। তিনি বলেন, এবারের পর্যটন মেলায় অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে চীনের সঙ্গে পর্যটন সংক্রান্ত তথ্য আদান-প্রদান করা এবং চীনের পর্যটকদের কাছে মিয়ানমারের খাদ্য, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক দৃশ্য ইত্যাদি পরিচিত করা।

দক্ষিণ আফ্রিকার পর্যটনমন্ত্রী প্যাট্রিসিয়া ডেলিলাই বলেন: "পর্যটন মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে, আমরা চীন থেকে উন্নত পর্যটন ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা শিখতে এবং পর্যটন ও সংস্কৃতিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার আশা করি।"

একটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভ্রমণ এবং অবকাশকালীন চেইন গ্রুপ ক্লাব মেডের গ্লোবাল প্রেসিডেন্ট হেনরি গিসকার্ড ডি'ইস্টাইং চীনা পর্যটনের সম্ভাবনা সম্পর্কে আশাবাদী। তিনি বলেন, চীন তার বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত এবং অভ্যন্তরীণ পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন যে "চীনের অন্তর্মুখী পর্যটন একটি বিশাল প্রত্যাবর্তনের সূচনা করবে।"

ডি'ইস্টাইং আরও বলেন যে, পর্যটন মেলায় সব প্রদর্শক এবং পর্যটকদের জন্য পর্যটন শিল্পে বাণিজ্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি চমত্কার সুযোগ দেবে। তিনি ভবিষ্যতে চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আশা করেন। চীনের অন্তর্মুখী পর্যটন বাজারের উন্নয়ন এগিয়ে নেওয়ার প্রচার করবে।

তিনি বলেন, "আগামী দুই বছরে, আমরা সারা বিশ্বে প্রায় ১৫টি রিসোর্ট খোলার পরিকল্পনা করছি, যার অর্ধেক চীনে রয়েছে।”

হাঙ্গেরির ন্যাশনাল ট্যুরিজম অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক সেগনা জুরাও বলেন, গত জানুয়ারি থেকে হাঙ্গেরি বিপুল সংখ্যক চীনা পর্যটককে স্বাগত জানিয়েছে। হাঙ্গেরিতে অনেক চীনা পর্যটক দেখে তিনি খুবই খুশি।

 

সেগনার বলেন যে, চীনে ভিসা আবেদনের সময়, তিনি অনেক হাঙ্গেরিয়ান পর্যটককে চীন ভ্রমণে আগ্রহী দেখেছিলেন। তিনি বলেন, হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে এখন বেইজিং, শাংহাই, নিংবো এবং ছংছিং-এর সরাসরি ফ্লাইট-রুট রয়েছে এবং আরও দুটি এয়ারলাইন্স চীনের অন্যান্য স্থানে সরাসরি যাচ্ছে। "আমরা আন্তরিকভাবে চীনা অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে উন্মুখ।"

 

নিংসিয়া মিউজিয়ামে সূক্ষ্ম প্রাচীন সিরিয়ান সাংস্কৃতিক নিদর্শনের প্রদর্শনী আনুষ্ঠানিকভাবে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত

নিংসিয়া মিউজিয়ামে সূক্ষ্ম প্রাচীন সিরিয়ান সাংস্কৃতিক নিদর্শনগুলির দুই মাসের প্রদর্শনী আনুষ্ঠানিকভাবে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল।

এই প্রদর্শনীটি সিরিয়ার ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ দামেস্ক, আলেপ্পো মিউজিয়াম, দেইর ইজ-জোর মিউজিয়াম থেকে মোট ৯৯ সেট মূল্যবান সাংস্কৃতিক নিদর্শন একত্রিত করে। যেমন- পাথরের হাতিয়ার, ব্রোঞ্জ, মূর্তি ইত্যাদির মতো একাধিক বিভাগে ভাগ করা যায়। সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ একটি বিশাল যুগ বিস্তৃত বলে আয়োজক এই প্রদর্শনীটি দর্শকদের সিরিয়ার সংস্কৃতি এবং ইতিহাস আরও ভালভাবে বোঝানোর ক্ষেত্রে একটি সময় বর্ণনা পদ্ধতি গ্রহণ করে।

 

সিরিয়া এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের সংযোগস্থলে অবস্থিত। যেখানে বিভিন্ন সংস্কৃতি বিনিময় ও একীভূত হয়। এটি বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতার জন্মস্থানের মধ্যে একটি। এই ড্রপ আকৃতির হাতের কুড়ালটি প্রায় পাঁচ লাখ বছরের পুরানো। হাতের কুড়ালের সামনে, পিছনে, বামে ও ডানদিকে সুস্পষ্ট একটি চিহ্ন রয়েছে। এতে বোঝা যায়, এটি কীভাবে তৈরি করা হয়েছিল। এতে আরও দেখা যায় যে, সেই সময়ে প্রাচীন মানুষ কারুকার্য-খচিত পাথর তৈরির দক্ষতা আয়ত্ত করেছিল।

এ ছাড়া, প্রদর্শনীতে মাটির ট্যাবলেট, চমত্কার গহনা, ভাস্কর্য ইত্যাদি বিভিন্ন সময়ের সাংস্কৃতিক নিদর্শনগুলির মাধ্যমে দর্শকরা শুধু দৃশ্যই উপভোগই করে না, বরং একটি ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতাও দেয়।

 

ইনছুয়ান নাগরিক সুই ইউয়ান বলেন যে, সিরিয়ার সেই সময়ের ইতিহাসে সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক নিদর্শন সম্পর্কে আমাদের আরও বিশদ ধারণা রয়েছে। আমাদের সম্পূর্ণ প্রদর্শনী আমাদের জাতীয় সংহতি এবং আধুনিক সময়ের জন্য শিক্ষাগত তাত্পর্য বহন করে।

প্রদর্শনী হলের শেষে কাচের ক্যাবিনেটে সামান্য রুক্ষ চকচকে মৃত্পাত্রের বাটিটি সিরিয়ায় পাওয়া গিয়েছিল। সিরিয়ানরা সেই সময় চীনের চীনামাটির বাসন তৈরির প্রযুক্তি রপ্ত করেছিল। যদিও প্রযুক্তিটি তখনও চীনামাটির বাসন তৈরির প্রযুক্তির মানদণ্ডে পৌঁছায়নি, তবে সে সময়ে ব্যাপকভাবে উত্পাদিত হয়েছিল।

নিংসিয়া মিউজিয়ামের একজন কর্মকর্তা লি সিউছিন বলেন, "এটি রঙ হোক বা ফুল, এটি একটি আলংকারিক থিম যা প্রায়শই কেন্দ্রীয় সমভূমিতে ব্যবহৃত হতো। সেই সময়ে, আমরা চীনে চীনামাটির বাসন ভালোমতো তৈরি করার প্রযুক্তি শিখেছিলাম। একটি ভিন্ন সংস্কৃতি ও প্রযুক্তির বিনিময় প্রতিটি দেশের সভ্যতার বিকাশকে উত্সাহিত করে।

 

এ ছাড়া একই সময় প্রদর্শন করা হয় মধ্য এশিয়া এবং পশ্চিম এশিয়া থেকে উত্তর-পশ্চিম চীনে পাওয়া মূল্যবান সাংস্কৃতিক নিদর্শন, যা সভ্যতাগত মিথস্ক্রিয়া, পারস্পরিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং সাংস্কৃতিক সংমিশ্রণের প্রাণবন্ত ইতিহাস নিশ্চিত করার জন্য ‘সাংস্কৃতিক অবশেষ সংলাপের’ ফর্ম ব্যবহার করে।

 

নিংসিয়া মিউজিয়ামের ডিরেক্টর ওয়াং সিয়াওচুন বলেন যে, আমরা এ সময় সিরিয়ার প্রাচীন সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ প্রদর্শন করছি। আমরা আমাদের নিংসিয়া মিউজিয়াম এবং গুইউয়ান মিউজিয়ামের সংগৃহীত কিছু ধ্বংসাবশেষও প্রদর্শন করি যা সোনা, রূপা এবং কাচের পাত্র-সহ চীন-পশ্চিমা বিনিময় এবং চীন-পশ্চিমা সাংস্কৃতিক বিনিময়ের পরিস্থিতি প্রতিফলিত করে।

জানা গেছে, সূক্ষ্ম প্রাচীন সিরিয়ার সাংস্কৃতিক নিদর্শনের প্রদর্শনী ২০২৪ সালের ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত অর্থাত্ দুই মাস ধরে চলবে।

 

জিনিয়া/তৌহিদ