২০২৩ সালে চীনের শিক্ষাদানের অগ্রগতির সারসংক্ষেপ
2024-01-01 14:30:57

শিক্ষা একটি দেশের উন্নয়ন ও সমাজের অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তিস্তম্ভ। ২০২৩ সালে চীনের শিক্ষা খাতে অনেক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এ বছর বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষাদানের কাজ সুষ্ঠুভাবে চলেছে, অনার্স ডিগ্রীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের স্নাতকপত্রের প্রশাসনিক ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ও স্নাতকপত্রের মান নিশ্চিত করা হয়েছে। চীনের বুদ্ধিমান গণশিক্ষা প্ল্যাটফর্ম ডিজিটাল শিক্ষার সংস্কারে কার্যকর অভিজ্ঞতা সরবরাহ করেছে এবং মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলের শিক্ষার মান সার্বিকভাবে উন্নত হয়েছে।

 

চীনা বৈশিষ্ট্যময় শিক্ষার আধুনিকায়ন চীনা জাতির মহান পুনরুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন কর আসছে।

এপ্রিল মাসে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ ৫টি সরকারি বিভাগের উদ্যোগে ‘সাধারণ উচ্চশিক্ষার বিভাগ স্থাপন ও সমন্বয়ের সংস্কার প্রস্তাব’গৃহীত হয়। তাতে ২০২৫ সালে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের ২০ শতাংশ বিভাগ উন্নত করে নতুন প্রযুক্তি, শিল্পের চাহিদা মেটানোর বিভাগ ও মেজর চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং অর্থনীতি ও সমাজের উন্নয়নের তুলনায় পিছিয়ে পড়া বিভাগগুলো বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়।

 

এ সম্পর্কে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চশিক্ষা বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, বর্তমানে চীনের সাধারণ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনার্স বিভাগের মোট সংখ্যা ৬৬ হাজারটি, যা ২০১২ সালের চেয়ে ১৭ হাজারটি বেশি এর সঙ্গে সঙ্গে প্রায় ১০ হাজারটি বিভাগ বাতিল বা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, বার্ষিক সমন্বয়ের পরিমাণ প্রায় ৫ শতাংশ।

 

পুরনো বিভাগ বাতিলের সাথে সাথে নতুন বিভাগ স্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। এআই প্রযুক্তি, ডিজিটাল অর্থনীতি, বিগ ডেটার প্রশাসন ও প্রয়োগ এবং ভিআর প্রযুক্তিসহ অনেক নতুন বিভাগ চালু করা হয়েছে।

 

২০২৩ সালে চীনের ‘দ্বৈত হ্রাস নীতি’ চালু করার তৃতীয় বর্ষ। এ ‘দ্বৈত হ্রাস নীতির’ মাধ্যমে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের অতিরিক্ত লেখাপড়ার চাপ ব্যাপকভাবে কমানো হয়েছে এবং গুণগত মানের শিক্ষার বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। ফলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার বিষয় দ্রুত বেড়েছে।

 

ফেব্রুয়ারি মাসে সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর অধিবেশনে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন, ‘দ্বৈত হ্রাস নীতি’ চালু করার পাশাপাশি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার ওপর নজর রাখা প্রয়োজন, যাতে চীনা ছাত্রছাত্রীদের কৌতুহল, কল্পনার দক্ষতা বাড়ে। এভাবে আরো বেশি বিজ্ঞানী বা বিজ্ঞান এ প্রযুক্তির গবেষক পাওয়া যাবে।

 

মে মাসে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ ১৮টি সরকারি বিভাগের যৌথ উদ্যোগে, ‘নতুন যুগে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা জোরদারের কর্মপ্রস্তাব’ প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে চীনের মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শিক্ষাদান আরও জোরদার করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষার ব্যবস্থা আরো সম্পূর্ণ করা হবে।

 

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শিক্ষাদান নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট ক্লাসের উপযোগী শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করতে নির্দেশনা দিয়েছে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্লাসের শিক্ষকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদান করার পাশাপাশি, বিভিন্ন স্কুলের পরীক্ষাগারে শিক্ষকের চাহিদা পূরণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ধাপে ধাপে প্রতিটি স্কুলে একজন করে প্রকৌশল বিভাগের মাস্টার্স ডিগ্রীধারী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শিক্ষক রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তা ছাড়া, শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ঘাঁটি নির্মাণে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, বিভিন্ন স্কুলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার সাথে জড়িত ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে, এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক স্থাপন করা জরুরি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

কাওখাও পরীক্ষাব্যবস্থায় সংস্কার আরেকটি বড় পরিবর্তন। ২০২৩ সালে চীনের বিভিন্ন প্রদেশে কাওখাও পরীক্ষা অর্থাত্ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ১ কোটি ২৯ লাখ ১০ হাজার জনে দাঁড়ায়, যা গত বছরের চেয়ে ৯.৮ লাখ বেশি; একটি নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। ২০২৩ সালে আরো অনেক এলাকায় নতুন পদ্ধতিতে ‘কাওখাও’পরীক্ষা চালু করা হয়।

 

বেইজিং, শাংহাই, শানতুং, চেচিয়াং, থিয়ানচিন আর হাইনানসহ কয়েকটি এলাকায় ‘৩ প্লাস ৩’ নতুন পরীক্ষা চালু হয় এবং লিয়াওনিং, ফুচিয়ান আর হুপেইসহ বিভিন্ন এলাকায় ‘৩ প্লাস ২ প্লাস ১’ পদ্ধতি চালু হয়। বিভিন্ন এলাকায় পরীক্ষার সময়ও আলাদা, ২ থেকে ৪ দিনের মধ্যে এ পরীক্ষা নেওয়া হয়।

 

বস্তুত, ২০১৪ সালে চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের উদ্যোগে ‘ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি-পরীক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের প্রস্তাব’ প্রকাশিত হয়। তখন থেকেই সংস্কারকাজ শুরু হয়। বর্তমানে চীনের বহু এলাকায় কাওখাও পরীক্ষার বহুমুখী সংস্কার সাধিত হয়েছে; পরীক্ষার বিষয়, পদ্ধতি ও ছাত্রছাত্রী ভর্তিসহ বিভিন্ন দিকে এই সংস্কার হয়েছে।

 

বেইজিং নর্মোল বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনের শিক্ষানীতি গবেষণাগারের সহকারী অধ্যাপক ওয়াং সিন ফেং বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের কাওখাও পরীক্ষায় সংস্কারের কারণে, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষাদান পদ্ধতিতেও পরিবর্তন এসেছে। এখন কেবল জ্ঞান অর্জনের ওপর নয়, বরং বহুমুখী কর্মদক্ষতার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।

বহুমুখী দক্ষতার পর্যালোচনা নতুন দফার কাওখাও পরীক্ষার সংস্কারের একটি আকর্ষণীয় বিষয়। নতুন কাওখাও পরীক্ষায় মাধ্যমিক স্কুলের বহুমুখী দক্ষতার পর্যালোচনা ফলাফল এবং পরীক্ষার পর ভর্তির সময় একসাথে বিবেচনা করা হয়।উচ্চবিদ্যালয়ে নৈতিকতা, পড়াশোনার দক্ষতা, মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য, শিল্পকলার যোগ্যতা এবং সামাজিক অনুশীলনসহ বিভিন্ন দিক থেকে ছাত্রছাত্রীদের বহুমুখী দক্ষতা পর্যালোচনা করা হয়।

 

কাওখাও পরীক্ষার সংস্কারের সাথে সাথে বিভিন্ন পর্যায়ের ভর্তির ব্যবস্থা ধাপে ধাপে বাতিল করা হয়। এভাবে ছাত্রছাত্রী এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরস্পরকে বেছে নেওয়ার সুযোগ বেড়েছে।

চলতি বছরের মে মাসে চীনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক প্রশিক্ষণের ওপর আরো বেশি গুরুত্ব দিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন সরকার। গুণগত মানসম্পন্ন শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের দল গঠন করা জরুরি। জুলাই মাসে চীনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে। এ পরিকল্পনায় চীনের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলের জন্য মাস্টার্স ডিগ্রীধারী শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রথম দলের পরীক্ষামূলক প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩০টি। এর সঙ্গে সঙ্গে, নর্মোল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণ প্রকল্প অব্যাহতভাবে চলছে। ২০২৩ সালে চীনের বিভিন্ন নর্মোল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ভর্তি পরিকল্পনায় মোট ৮৩০০ জন শিক্ষার্থী গ্রহণ করে, যারা বিনা খরচে নর্মোল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিভাগে ভর্তি হয়েছে। আগস্ট মাসে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রেস ব্রিফিং থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত চীনের শিক্ষা খাতে অর্থ বরাদ্দের মোট পরিমাণ ২১.৪ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে দাঁড়িয়েছে, বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ।

মোদ্দাকথা, শিক্ষার মান উন্নত করতে চাইলে শিক্ষকদের বহুমুখী দক্ষতা উন্নয়ন সবচেয়ে জরুরি ও কার্যকর পদ্ধতি। তাই শিক্ষকদের বেতন বাড়িয়ে দেওয়া এবং কর্মদক্ষতা জোরদারে সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ দেওয়া নতুন যুগে চীনের শিক্ষার মান উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।


২০২৩ সালের আগস্ট মাসে চীনের সিছুয়ান প্রদেশের ছেংতু শহরে ৩১তম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের গ্রীষ্মকালীন গেমস সাফল্যের সঙ্গে আয়োজিত হয়। চীনের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদল এ গেমসে মোট ১০৩টি সোনার পদক, ৪০টি রূপার পদক আর ৩৫টি ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে। চীনাদের ক্রীড়ার প্রতি সঠিক সচেতনতা থাকার কারণে, আরো বেশি পিতামাতা বাচ্চাদের ক্রীড়াদক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্ব দেন। এমন পরিস্থিতিতে, চীনা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ক্রীড়া চর্চার আগ্রহও অনেক বেড়েছে। চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চমানের ক্রীড়াদল আছে, যারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি, উচ্চমানের ক্রীড়া প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতেও পারে। এভাবে, বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গ্রীষ্মকালীন গেমসসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইভেন্টে আরো বেশি শ্রেষ্ঠ চীনা খেলোয়াড় দেখা যায়। অতীতকালে চীনা খেলোয়াড়রা কেবল পরিশ্রমের সাথে খেলাধুলা করতেন। আর বর্তমানে তাদের পড়াশোনার ফলাফলও বেশ ভালো।  শারীরিক অবস্থা উন্নয়নের সাথে সাথে, তাদের কাওখাও পরীক্ষায় নিম্ন স্কোর করলেও চলে। এটা বিশেষ সুবিধা। পেশাদার ক্রীড়া প্রশিক্ষণ ছাড়া স্বাস্থ্যকর জ্ঞান, পুষ্টিকর বিভাগ, মৌলিক ক্রীড়া দক্ষতাসহ বিভিন্ন শাখা বিভাগ চালু হয়ে। ক্রীড়া ও প্রশিক্ষণের ভালো সংমিশ্রণ একটি সার্বিক ও বহুমুখী কাজ, যা চীনা যুবকদের বিজ্ঞানসম্মত যোগ্যতা ও শারীরিক অবস্থার উন্নয়নের সাথে জড়িত।

অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রীর প্রশাসন ব্যবস্থা আরো সম্পূর্ণ করা হয়েছে। সবাই জানেন, স্নাতক ডিগ্রী শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান ও কর্মদক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ। তাই স্নাতক ডিগ্রীর মান দক্ষ ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণের মান ও মর্যাদার সাথে জড়িত।চলতি বছরের আগস্ট মাসে চীনের স্নাতকপত্র আইন খসড়া ১৪তম এনপিসি’র কমিটির পঞ্চম অধিবেশনে পর্যালোচনা করা হয়েছে। এ খসড়ায় বলা হয়েছে, যদি শিক্ষার্থীদের স্নাতকপত্র অর্জনে সংশ্লিষ্ট থিসিস বা অনুশীলনের ফলাফল কোনো নকল তথ্য বা চুরির বিষয় থাকে, তাহলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের স্নাতকপত্র বাতিল করা হবে এবং অপরাধ হলে সংশ্লিষ্ট শাস্তি আরোপ করতে হবে। এ খসড়ার প্রকাশে স্নাতকপত্র অর্জনে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণায় যে কোনো চুরি বা একাডেমিক জালিয়াতি সহ্য করা হবে না। সেটি চীনের পেশাদার গবেষণা ও শিক্ষাদানের মর্যাদা রক্ষার জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

 

পারিবারিক শিক্ষার ভুমিকার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। পারিবারিক শিক্ষা এক মানুষের বড়  হওয়ার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী।চীনের নারী ফেডারেশনের প্রকাশিত চীনের পারিবারিক শিক্ষা জরিপ থেকে জানা গেছে, ৬০ শতাংশেরও বেশি পিতামাতা কোনো পারিবারিক শিক্ষার বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেননি এবং শিশুদের মনোবিজ্ঞান ভালো জানা পিতামাতার সংখ্যা ১০ শতাংশের চেয়ে কম। এ প্রেক্ষাপটে, সেপ্টেম্বর মাসে চীনে ‘পারিবারিক শিক্ষার নির্দেশক যোগ্যতার মানদন্ড’সহ ৬৬টি নতুন পেশার মানদন্ড প্রকাশিত হয়েছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পারিবারিক শিক্ষার নির্দেশক একটি নতুন চাকরি হিসেবে চীন সরকারের স্বীকৃতি পেয়েছে।

প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের শিক্ষাগ্রহণ চীনের শিক্ষা খাতের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। জুন মাসে চীন সরকারের প্রকাশিত দলিলে ‘মৌলিক গণশিক্ষা পরিষেবা ব্যবস্থা আরো উন্নত করার প্রস্তাবে’ বলা হয়েছে, চীনের বাধ্যতামূলক শিক্ষা পর্যায়ে বিশেষ শিক্ষা স্কুল আরো বেশি নির্মাণ করা প্রয়োজন, যাতে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের শিক্ষার চাহিদা মেটানো যায়। কেবল স্কুল নয়, প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের জন্য কিন্ডারগার্টেন নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।২০২৫ সালে চীনের শেনচেন এবং চিনান শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের কিন্ডারগার্টেন থেকে উচ্চবিদ্যালয় পর্যন্ত টানা ১৫ বছরের বাধ্যতামূলক শিক্ষা প্রদান করবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।

সেপ্টেম্বর মাসে ইউনেস্কোর শিক্ষা তথ্যায়ন পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে চীনের জাতীয় বুদ্ধিমান শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম সংশ্লিষ্ট পুরস্কার লাভ করেছে। ইউনেস্কোর কর্মকর্তারা মনে করেন, চীনের জাতীয় বুদ্ধিমান শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম জনসাধারণের পড়াশোনার জন্য একটি চমত্কার প্ল্যাটফর্ম, যা বিশ্বের জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি দিয়ে অনলাইনে পড়াশোনার অভিজ্ঞতা প্রদান করেছে।


২০২২ সালের মার্চ মাসে এ প্ল্যাটফর্ম চীনে চালু হয়, এখন চীনের ৫ লাখ ২৯ হাজারটিরও বেশি স্কুল, ১ কোটি ৮৪ লাখ ৪০ হাজার জনেরও বেশি শিক্ষক এবং ২৯.১ কোটিরও বেশি ছাত্রছাত্রী ও নাগরিক এ প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রয়োজনীয় ক্লাস বা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে সক্ষম। শিক্ষার ডিজিটায়নের একটি মূল উদ্দেশ্য শিক্ষাদানের সমতা বাস্তবায়ন করা,এভাবে শিক্ষার অনুন্নত এলাকায় আরো বেশি সম্পদ নিয়ে যাওয়া। এটি চীনের শিক্ষার মান উন্নয়নের একটি নতুন পরীক্ষা। ভবিষ্যতে এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে  আরও বেশি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর উপকৃত হবে।

(সুবর্ণা/আলিম/মুক্তা)