এ যুগে মাও সে তুংকে স্মরণ করার তাৎপর্য কি?
2023-12-27 19:43:07

                              ২৬ ডিসেম্বর, সি চিন পিং ও অন্য নেতৃবৃন্দ বেইজিংয়ের থিয়ান আন মেন মহাচত্ত্বরে মাও সেতুং'র  দেহাবশেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন 

গণপ্রজাতন্ত্র চীনের প্রতিষ্ঠাতা মাও সে তুংয়ের ১৩০তম জন্মবার্ষিকী স্মরণে গত ২৬ ডিসেম্বর, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি মহাগণভবনে এক আলোচনাসভার আয়োজ করে।

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং সভায় বলেন, মাও সে তুং মার্কসবাদের চীনা রূপ সৃষ্টিকারী, চীনের সমাজতান্ত্রিক আনুধিকায়নের মহান ব্রতের প্রতিষ্ঠাতা এবং তাঁরই নেতৃত্বে চীনা জনগণ নিজের ভাগ্য বদলাতে ও দেশের চেহারা গড়ে তুলতে পেরেছে। মাও সে তুং বিশ্বজুড়ে বঞ্চিত মানুষের মুক্তি এবং মানব জাতির অগ্রগতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তাঁর সৃষ্ট মহানকাজ সামনে এগিয়ে নেওয়াই তাঁকে স্মরণ করার সবচেয়ে ভালো উপায় বলে মন্তব্য করেন সি।

মহান নেতা মাও সে তুংয়ের প্রতি চীনাদের গভীর আবেগ রয়েছে। তবে, এ প্রশ্ন উঠতেই পারে, এ যুগে তাঁকে স্মরণ করার তাৎপর্য কি?

মাও সে তুংয়ের মৃত্যুর ৪৭ পরও চীনা জনগণ কখনও তাকে ভুলেনি। তিনি চীনের আধুনিক ইতিহাসের দিকনির্দেশনা বদলে দিয়েছেন এবং চীনকে দুর্বল থেকে শক্তিশালী এবং পতিত থেকে সমৃদ্ধ হওয়ার বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। তিনি নতুন চীন বা গণপ্রজাতন্ত্রী চীন, একটি অগ্রসর পার্টি-সিপিসি এবং একটি গণ সশস্ত্র বাহিনী-চীনের গণমুক্তি ফৌজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। চীনের মহাপ্রাচীরের মতো মাও সে তুং চীনের বিশেষ চিহ্নে পরিণত হয়েছেন।

প্রতি বছরে তাঁর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সরকার থেকে বেসরকারী মহল পর্যন্ত, রাজধানী বেইজিং থেকে তাঁর গ্রামবাড়ী- হু নান প্রদেশের সাও শান শহর পর্যন্ত নিখিল চীনের বিভিন্ন স্থানে বিশেষভাবে তাঁকে স্মরণ করা হয়ে থাকে।

গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ১৩০তম জন্মবার্ষিকী স্মরণে আলোচনাসভায় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং আরও বলেন, ‘চীনের বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নের মাধ্যমে সার্বিকভাবে শক্তিশালী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং জাতির পুনরুত্থান বেগবান করা মাও সে তুংসহ প্রবীণ যোদ্ধাদের দর্শন ছিল। মাও সে তুংকে স্মরণের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ পদ্ধতি হবে তার সৃষ্ট কর্তব্যকে অব্যাহতভাবে সামনে এগিয়ে নেওয়া।

চীনের বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নের মাধ্যমে চীনা জাতির মহান পুনরুত্থান বেগবান করা হলো নতুন যুগে ও নতুন যাত্রায় নিখিল চীনে পার্টি, দেশ ও বিভিন্ন জাতির মানুষের প্রধান কাজ। চীনের বৈশিষ্ট্যময় সমাজতন্ত্র উন্নয়নের পথে সৃষ্ট হয় চীনের বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন। তাতেও মাও সে তুং গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

সি চিন পিং বলেন, ‘মাও সে তুং জনগণের মালিকানাধীন রাষ্ট্র গঠন করেছেন এবং অগ্রসর সমাজতন্ত্র সৃষ্টি করেছে’। পন্ডিতরা বলছেন, চীনের বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন মাও সে তুংয়ের চেষ্টা, তা ‘আধুনিকায়নের পশ্চিমাকরণে’র চিন্তাধারাকে বদলে দিয়েছে। তাঁর চেতনায় রয়েছে স্বাধীন এবং বাস্তবভিত্তিতে অবস্থান, নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও পদ্ধতি- যার সবই এখন পর্যন্ত সমান তাৎপর্যপূর্ণ।

(রুবি/হাশিম)