এবারের পর্বে রয়েছে
১. কৃষিখাতে সমৃদ্ধি অর্জনে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ইনার মঙ্গোলিয়া
প্রকৃতি সংরক্ষণে বিশেষ নজর দিয়েছে চীন
বিশ্ববাসীকে ক্ষুধামুক্ত রাখতে একটু একটু করে ভূমিকা রাখছে চীনের অত্যাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি। পেছনে পড়ে থাকা ছোট ছোট গ্রামগুলো মুক্তি পাচ্ছে দারিদ্রের শেকল থেকে। দিনশেষে স্বল্প পরিসরের উদ্যোগগুলো দেখছে সফলতার মুখ, হয়ে উঠছে সামগ্রিক অর্থনীতির অন্যতম অনুসঙ্গ।
কিন্তু কম সময়ে এত বড় সফলতার গল্প কীভাবে সম্ভব করলো চীন দেশের কৃষকরা? সে গল্পই আপনারা জানতে পারবেন “শেকড়ের গল্প” অনুষ্ঠানে।
কৃষিখাতে সমৃদ্ধি অর্জনে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ইনার মঙ্গোলিয়া
ইনার মঙ্গোলিয়ার প্রকৃতি আর কৃষি উন্নয়ন ভাবনা কল্পনায় এক অসাধারণ আবেশ তৈরি করে। সবার আগে চলে আসে এর বিস্তীর্ণ কৃষিভূমি। এ যেন সবুজের স্বর্গ।
একটা ভূখণ্ড কতটা সমৃদ্ধ হতে পারে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে ইনার মঙ্গোলিয়া। চীনের স্বায়ত্তশাসিত এই অঞ্চলটি একদিকে যেমন গড়েছে সবুজের রাজ্য তেমনি নির্মাণ করছে বিশাল আকারের কৃষিক্ষেত্র।
এ অঞ্চলের অসাধারণ এক উদ্যোগ 'সমবায় সমিতি'। একটা গ্রামের সবাই মিলে একজন ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেন কৃষিকাজ করার জন্য আর বছর শেষে যে মুনাফা অর্জিত হয় তা ভাগ করে দেওয়া হয় সমানভাবে। আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে এ অঞ্চলে।
বিস্তীর্ণ জমিতে চীনের বিভিন্ন প্রদেশে চাষ করা হচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় নানা রকম কৃষিপণ্য।
শরৎকালে ইনার মঙ্গোলিয়ার প্রকৃতি দারুণ কিছু উপহার দেয় পর্যটকদের। সোনালী রঙের পাতাগুলো এক অন্যরকম মায়া তৈরি করে চারপাশে, যেখান থেকে নজর ফেরানো কঠিন।
প্রচণ্ড শীতে বাংলাদেশসহ এশিয়ার অন্য দেশগুলো যখন স্থবির হয়ে পড়ে, তখন চীনের বিভিন্ন প্রদেশে দেখা যায় এমন প্রকৃতির বিরুদ্ধে প্রবল সংগ্রাম। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও স্থানীয় নাগরিকরা যেন ভালো থাকে সেজন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন তারা।
শীত পড়া শুরু হলে, সেটা স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনে বড় প্রভাব ফেলে। জীবনযাত্রায় কিছুটা বৈচিত্র্য আসলেও কৃষিকাজ এগিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে। এ নিয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছেন স্থানীয় সমবায় সমিতির উপ-প্রধান পাথু।
ছবি: পাথু, উপ-প্রধান, স্থানীয় সমবায় সমিতি
ভুট্টার সংগ্রহ শেষ হলে, এই গাছগুলো প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে বিশেষ ধরনের প্রাণীখাদ্য তৈরি করা হয়, যেগুলো রোদে শুকিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষণ করা যায়।
প্রচণ্ড শীতে যেন প্রাণীরাও পর্যাপ্ত খাবার পায়, সেজন্য এই ধরনের উদ্যোগ নিয়ে থাকেন ইনার মঙ্গোলিয়ানরা।
এভাবেই ছোট-বড় উদ্যোগের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ হচ্ছে পুরো প্রদেশের বিভিন্ন কৃষিক্ষেত্র। চীনের দেখানো এ পথে এখন যাত্রা শুরু করেছে অন্যান্য দেশের কৃষি উদ্যোগক্তারাও। ইনার মঙ্গোলিয়ায় সফরে গিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন চায়না মিডিয়া গ্রুপের বাংলা বিভাগের পরিচালক ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী।
ছবি: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী, চায়না মিডিয়া গ্রুপের বাংলা বিভাগের পরিচালক
অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বিভিন্ন উপজেলাতেও অত্যাধুনিক কৃষি-প্রযুক্তি আসবে বলে মনে করছেন করেন এদেশের সাধারণ মানুষ। আর এভাবেই চীনা কৃষির সঙ্গে শুরু হতে পারে দিন বদলের নতুন এক গল্প।
প্রতিবেদন: এইচআরএস অভি
সম্পাদনা: শিহাবুর রহমান
তুষারের ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে ইকো টুরিজমে
জাঁকিয়ে শীত নেমেছে চীনের বিভিন্ন প্রান্তে। আর এর প্রভাবে পাল্টে গেছে প্রকৃতির রূপ। সবুজ প্রকৃতি এখন হয়ে উঠেছে শ্বেত শুভ্র। চীনে তুষার-বরফ সম্পদকে ব্যবহার করে এখন ইকো টুরিজমকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
চীনের উত্তর অংশে এখন বেশ শীত পড়েছে। কোন কোন প্রদেশ ও অঞ্চলে তুষারপাত চলছে। তুষারপাত ও ভারী বরফ দৈনন্দিন জীবনে চলাফেরা ও কাজকর্মে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। তবে তুষার ও বরফ প্রকৃতির এক অনন্য সম্পদ। এই সম্পদকে ব্যবহার করে ইকো টুরিজম বা পরিবেশবান্ধব পর্যটনে নতুন গতি সৃষ্টি করা হচ্ছে। তুষার শুভ্র প্রকৃতির রয়েছে অসাধারণ সৌন্দর্য। এই সৌন্দর্য দেখতে বিশ্বের অনেক স্থান থেকে পর্যটকরা আসেন। পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করার ধারণা এখন অনুসরণ করছে চীন।
তুষার শুভ্র প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং প্রকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করার জন্য বিশেষ কিছু ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যেমন বন্য পরিবেশে বলগা হরিণ দেখার সুযোগ পাচ্ছেন পর্যটকরা। প্রাকৃতিক সংরক্ষিত বনাঞ্চলে তুষারের মধ্যে বলগা হরিণের বিচরণকে দেখতে পাচ্ছেন। কিছু কিছু রিসোর্টে বলগা হরিণের টানা স্লেজ গাড়িতে চড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। যা পর্যটকরা বেশ উপভোগ করছেন।
তুষার-বরফের মতো প্রাকৃতিক সম্পদকে ব্যবহার করে বিভিন্ন স্থানে গড়ে তোলা হচ্ছে স্কি রিসোর্ট। আয়োজন করা হচ্ছে বিভিন্ন তুষার ক্রীড়ার। রয়েছে কেবল কারে চড়ার আয়োজন।
শীতকালীন বিভিন্ন ফল ও খাদ্য উপভোগ করতে পারছেন তারা। চিনির রসে জাল দেয়া চেরী ফল শীতকালে চীনের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার। পর্যটকরা এর স্বাদ গ্রহণ করছেন।
শীত মৌসুমে প্রকৃতির একটি বড় ঘটনা হলো পরিযায়ী পাখিদের উত্তর থেকে দক্ষিণে চলে যাওয়া। মধ্য ও দক্ষিণ চীনের বিভিন্ন জলাশয়ে এখন উড়ে আসছে পরিযায়ী পাখিরা। এই পরিযায়ী পাখি দেখার জন্যও বিশেষভাবে বিকশিত হচ্ছে পর্যটন শিল্প। বিভিন্ন স্থানে পাখিদেখার জন্য বিভিন্ন রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে প্রকৃতিকে ক্ষতিগ্রস্ত না করেও প্রকৃতির সুন্দর সন্তানদের পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়।
শীতের প্রকৃতি ও তুষার শুভ্র চীনের দৃশ্য দেখার জন্য বিদেশ থেকেও আসছেন পর্যটকরা।
প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া
সম্পাদনা: শিহাবুর রহমান
এটি মূলত চায়না মিডিয়া গ্রুপ-সিএমজি বাংলার বাংলাদেশ ব্যুরোর কৃষি বিষয়ক সাপ্তাহিক রেডিও অনুষ্ঠান। যা সঞ্চালনা করছেন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট এইচআরএস অভি।
এ অনুষ্ঠানটি আপনারা শুনতে পাবেন বাংলাদেশের রেডিও স্টেশন রেডিও টুডেতে।
শুনতে থাকুন শেকড়ের গল্পের নিত্য নতুন পর্ব । যেখানে খুঁজে পাবেন সফলতা আর সম্ভাবনার নানা দিক। আর এভাবেই চীনা কৃষির সঙ্গে শুরু হোক আপনার দিন বদলের গল্প।
পরিকল্পনা ও প্রযোজনা: এইচআরএস অভি
অডিও সম্পাদনা: রফিক বিপুল
সার্বিক তত্ত্বাবধান: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী