চীনা প্রতিষ্ঠান-নির্মিত বাংলাদেশের তেল স্টোরেজ ও পরিবহন ধমনী
2023-12-18 10:50:21

বাংলাদেশের চট্টগ্রামে ১ লাখ টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ট্যাঙ্কারে বহন করা তেল চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (সিপিপি)-নির্মিত ‍সিঙ্গেল-পয়েন্ট মুরিং দিয়ে খালাস করা হয়েছে। আর এর মধ্য দিয়ে দেশটির প্রথম স্থল ও সমুদ্রের মধ্যে সংযোগকারী অতি বৃহৎ তেল সংরক্ষণাগার ও পরিবহন প্রকল্প চালু হয়েছে।

প্রকল্পের মালিক বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ বলেন, সফলতার সঙ্গে বাংলাদেশের বড় ট্যাঙ্কার মুরিং বাস্তবায়ন করার পাশাপাশি তেল খালাস করা বাংলাদেশ-চীন জ্বালানি সহযোগিতার একটি মাইলফলক। এছাড়া এটি দু’দেশের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ জ্বালানি সহযোগিতার একটি সাফল্য।

বাংলাদেশের তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্য প্রায় পুরোটাই আমদানি-নির্ভর। আমদানিকৃত তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্য ট্যাঙ্কারে করে চট্টগ্রাম আনা হয়। কিন্তু বন্দর এলাকায় গভীরতা কম হওয়ার কারণে ১ লাখ টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ট্যাঙ্কার বন্দরের বাইরে নোঙ্গর করে ছোট ট্যাঙ্কারে করে বন্দরে আনা হতো। এমন পরিবহন ব্যবস্থার দক্ষতা কম এবং খরচ বেশি হয়। আবার এতে পরিবেশ দূষণও ঘটে।

২০১৯ সালের প্রথম দিকে ‍সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের ব্যবস্থাপক সুন বিচুন জানান, প্রকল্পটি বাংলাদেশের জন্য জ্বালানি পরিবহনের ‘ধমনী’ হয়ে উঠেছে। আগে ১ লাখ ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ট্যাঙ্কারের তেল খালাস করতে যেখানে ১১ দিন সময় লাগতো, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ার পর এখন সেটা ৪৮ ঘন্টায় নেমে এসেছে। অনুমান করা হচ্ছে, এ প্রকল্পের কারণে প্রতি বছর তেল পরিবহন ব্যয়ের প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার সাশ্রয় হবে।

সিঙ্গেল-পয়েন্ট মুরিং প্রকল্পের পরিচালক শরিফ হাসনাত জানান, প্রকল্পটি বাংলাদেশে আমদানি তেল ও তেলজাত পণ্যের জন্য আধুনিক খালাস ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। এটা বাংলাদেশের জন্য, বিশেষ করে তেল ও জ্বালানি খাতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্পটি বাংলাদেশের একমাত্র অপরিশোধিত তেল শোধনাগারের বার্ষিক পরিশোধন ক্ষমতা ১৫ লাখ টন থেকে ৪৫ লাখ টনে উন্নীত করার জন্য নিরাপদ, উচ্চ-কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব পরিবহনের নিশ্চয়তা দেবে।

বাংলাদেশের ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প হিসাবে প্রকল্পটি চীনা অর্থ, চীনা প্রযুক্তি, চীনা সরঞ্জাম ও চীনা নির্মাণের ‘সম্পূর্ণ শিল্প চেইন’ অনুশীলন বাস্তবায়ন করেছে।

সুন বিচুন বলেন, প্রকল্পটির নির্মাণের মধ্য দিয়ে তারা একটি পরিপক্ব সামুদ্রিক প্রকল্প নির্মাণদল গঠন করেছে। প্রকল্পের সাফল্যের গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্য রয়েছে চীন-বাংলাদেশ আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা গভীরতর করার ক্ষেত্রে। দু’দেশ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে আরও বেশি বাস্তব সহযোগিতা চালাবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি। (প্রেমা/রহমান)