ডিসেম্বর ১৮: জিম্বাবুয়ের মুগাবে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পুনর্গঠনকাজ চীন ও জিম্বাবুয়ের যৌথভাবে বাস্তবায়িত ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের আওতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। চলতি বছরের জুলাই মাসে, পুনর্গঠিত বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। এটি স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে এবং দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার আরেকটি দৃষ্টান্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে।
জিম্বাবুয়ের রাজধানী হারারেতে অবস্থিত মুগাবে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর জিম্বাবুয়ের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর এবং সবচেয়ে ব্যস্ত প্রবেশদ্বার। এখানে আসলে দেখা যায় নতুন ও পুরানো দুটি টার্মিনালের ব্যবধান। নতুন টার্মিনালে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় খিলানযুক্ত ইস্পাত ফ্রেম ও বিশাল কাচের কাঠামো দেখা যায়, যা সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন। অনেক পর্যটক নতুন টার্মিনালের প্রশংসা করেন।
"আমি যখন এখানে আসি, তখন বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, নতুন টার্মিনাল এতো বিশাল ও সুন্দর। এটি আফ্রিকার সবচেয়ে আধুনিক বিমানবন্দর বলে আমি মনে করি। এখানে চেক-ইনসহ সব কাজ দ্রুত শেষ হয়। খুব কার্যকর। এক কথায় সবই চমত্কার।"
মুগাবে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পুনর্গঠনকাজ ২০১৮ সালের জুলাই মাসে দেশটির প্রেসিডেন্ট মানানগাওয়ার চীন সফরের সময় স্বাক্ষরিত একটি প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত হয়। এ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ৩৫ হাজার বর্গমিটারের নতুন আন্তর্জাতিক টার্মিনাল নির্মাণ, ৪০ হাজার বর্গমিটারের টারম্যাক নির্মাণ, এবং ট্র্যাকিং, টেলিযোগাযোগ, নেভিগেশন, নেভিগেশন বাতিসহ নানান ব্যবস্থার হালনাগাদকরণ। বর্তমানে পুরানো টার্মিনালের পুনর্গঠনকাজ ছাড়া, অন্য সব কাজ শেষ হয়েছে।
এ প্রকল্পের নির্মাতা কোম্পানি চায়না চিয়াং সু ইনারন্যাশনালের বৈদেশিক প্রকল্প কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক ও জিম্বাবুয়ের কোম্পানির ব্যবস্থাপক ওয়েই ওয়েই জানিয়েছেন, পুনর্গঠনকাজ চলাকালে বিমানবন্দরটির স্বাভাবিক কার্যক্রমও চালাতে হয়েছে, তাই কাজটি ছিল চ্যালেঞ্জিং। তিনি বলেন,
“প্রতি রাতে আমাদের মাত্র ৫ থেকে ৭ ঘন্টা সময় দেওয়া হয়। এর মানে, প্রতি রাতে ট্র্যাকিং বন্ধ এবং শেষ ফ্লাইটের উড্ডয়নকাজ শেষ হবার পর আমাদের কয়েক শত সরঞ্জাম মাঠে নামিয়ে কাজ শুরু করতে হয়। এ ট্র্যাক থেকে ওই ট্র্যাক পর্যন্ত, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কাজ ও তেল দেওয়া, যন্ত্রপাতি বসানোসহ নানান কাজ শেষ করতে হয়। পরের দিনের ফ্লাইটের স্বাভাবিক উড্ডয়ন ও অবতরণও নিশ্চিত করতে হয়। এতো অল্প সময়ে, বিশেষ করে আফ্রিকায় এ কাজ শেষ করা সহজ নয়।”
ওয়েই ওয়েই জানান, প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য এতে প্রায় ২০০ জন চীনা কর্মী এবং হাজারেরও বেশি স্থানীয় কর্মী নিয়োগ করা হয়। এতে স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এবং পাশাপাশি চীনের অগ্রসর প্রকৌশল ও প্রযুক্তি জিম্বাবুয়েতে এসেছে।
চীন ও জিম্বাবুয়ের কর্মীদের ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল চলতি বছরের জুলাই মাসে আনুষ্ঠানিতভাবে উদ্বোধন হয়। এর ক্ষমতা আগের বার্ষিক ১০ লাখ থেকে ৬০ লাখ পার্সন টাইমসে উন্নীত হয়েছে। জিম্বাবুয়ের বিমান কোম্পানির সিইও তাওয়ান্দা গুশা বলেন,
“এ প্রকল্প অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। অনেকে এখানে কাজ করছেন এবং পাশাপাশি কারিগরি বিদ্যা শিখতে পারছেন। এটি তাদের ভবিষ্যত উন্নয়নের জন্য সহায়ক। এ পুনর্গঠনকাজ বিমানবন্দরটির সক্ষমতাও বাড়িয়েছে। ভবিষ্যতে আরও বেশি এয়ারলাইন্স এখানে আসবে বলে অনুমান করছি আমরা।”
গুশা আরও আশা করেন, ভবিষ্যতে জিম্বাবুয়ে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের আওতায় যৌথনির্মাণের আরও কাজে অংশগ্রহণ করবে এবং চীনের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক গভীরতর হবে।
(রুবি/আলিম)