ডিসেম্বর ৫: আজ ৫ ডিসেম্বর, আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছসেবক দিবস। স্বেচ্ছাসেবার মধ্য দিয়ে মানুষের অর্থবহ অবদানের মাধ্যমে আরো বেশি সমন্বিত ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠনের লক্ষ্য নিয়ে দিনটি পালন করা হয়।
১৯৮৫ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন সর্বপ্রথম প্রতি বছর ৫ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস উদযাপন শুরু করে। স্বেচ্ছাসেবী ও স্বেচ্ছসেবী সংস্থাগুলোর পক্ষে বিশ্ব সম্প্রদায়, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও), জাতিসংঘের সংস্থা, সরকারি কর্তৃপক্ষ এবং বেসরকারি খাতের সঙ্গে তাদের প্রচেষ্টাকে উত্সাহিত করা, কাজের প্রচার করা, মূল্যবোধ ভাগ করে নেয়ার এক অনন্য সুযোগ সৃষ্টি হয় এর মাধ্যমে।
বছরের পর বছর ধরে, আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস কৌশলগতভাবে ব্যবহার করা হয়েছে: অনেক দেশ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে স্বেচ্ছাসেবকদের অবদানের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে; দারিদ্র্য, ক্ষুধা, রোগ, স্বাস্থ্য, পরিবেশগত অবক্ষয় ও লিঙ্গ সমতা মোকাবিলায় তাদের ভূমিকা থেকে উপকৃত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবসের অর্থ হল স্বেচ্ছাসেবার চেতনা প্রচার করা এবং জনকল্যাণের শক্তি প্রকাশ করা। আধুনিক আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবা কার্যক্রম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শুরু হয়। বিভিন্ন দেশের স্বেচ্ছাসেবকরা স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন এবং বাড়িঘর পুনর্নির্মাণ, অর্থনীতির উন্নয়ন ও সামাজিক সভ্যতার অগ্রগতিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছেন।
সমাজে স্বেচ্ছাসেবকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও উত্সর্গকে জোরালোভাবে প্রচার, প্রশংসা ও সমর্থন করার জন্য অনেক দেশের সরকার এই দিনে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়। চলতি বছর ৩৮তম আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস উপলক্ষ্যে চীনের কমিউনিস্ট ইয়ুথ লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ও কেন্দ্রীয় সমাজকর্ম মন্ত্রণালয়সহ সাতটি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে চীনা যুব স্বেচ্ছাসেবক পরিষেবা বিনিময় কার্যক্রম কুয়াংতোং প্রদেশের শানথৌ শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এবারের ইভেন্টটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উদ্ভাবন, গ্রামীণ পুনরুজ্জীবন, সবুজ উন্নয়ন এবং সামাজিক পরিষেবাসহ যুব স্বেচ্ছাসেবক কাজের মূল ক্ষেত্রের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এবং প্রদর্শনী ও বিনিময়ে অংশগ্রহণের জন্য সারাদেশ থেকে এক শ অসামান্য স্বেচ্ছাসেবক পরিষেবা প্রকল্প নির্বাচিত করা হয়।
দৈনন্দিন জীবনে আমরা মাঝে মাঝে এক দল দয়ার মানুষ দেখতে পাই। তারা নিজেদের বুদ্ধি দিয়ে অন্যদের অধিকার রক্ষা করে থাকেন, বড় বড় প্রতিযোগিতায় নিজেদের দক্ষতা প্রদর্শন করে থাকেন, এবং গ্রামাঞ্চলের পুনর্জাগরণে নিজেদের ভূমিকা রেখে থাকেন।
আজকাল আরও বেশি সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী পরিষেবা প্রকল্প সামাজিক চাহিদাগুলোর ওপর ফোকাস করে এবং আরও পেশাদার ও পরিমার্জিত হয়ে ওঠে। নানা কমিউনিটিতে এই এলাকার বয়স্ক এবং একা একা বাস করা বয়স্কদের চাহিদা পূরণ করতে এক একটি জনকল্যাণমূলক স্বেচ্ছাসেবক সেবা প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একটি স্বেচ্ছাসেবকদের সেবা দল পেশাদার সমাজকর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে গঠিত। তারা বয়স্কদের ২৪ ঘন্টা জরুরি সহায়তাসহ পরিষেবা দিয়ে থাকে। স্বেচ্ছাসেবকরা বয়স্কদের বৈচিত্র্যময় চাহিদার ওপর ভিত্তি করে একটি পরিষেবা তথ্য ডাটাবেসও প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং সময়মতো বয়স্কদের সমস্যার দ্রুত সমাধান করেন।
আশা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে নানান স্বেচ্ছাসেবা প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আরও তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের আকৃষ্ট করা যাবে। বয়স্কদের সাহায্য করা, প্রতিবন্ধীদের সাহায্য করা, পরিবেশ সুরক্ষা করা, এবং আবর্জনা শ্রেণীবিভাগসহ স্বেচ্ছাসেবক পরিষেবার ক্ষেত্রগুলোর ওপর মনোযোগ বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে আমরা স্বেচ্ছাসেবক পরিষেবাগুলোর বিকাশের জন্য আরও ভালো নীতিসহায়তা এবং একটি ভালো প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশ প্রদানের আশা করি, যাতে স্বেচ্ছাসেবক পরিষেবাগুলো দেশের ভবিষ্যত উন্নয়ন এবং চাহিদায় আরও ভালোভাবে পরিবেশন করতে পারে। (লিলি/আলিম)