ডিসেম্বর ৫: গতকাল (সোমবার) চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং "ছংতু আন্তর্জাতিক ফোরাম, ২০২৩"-এর সাফল্য কামনা করে একটি শুভেচ্ছাবার্তা পাঠান। ফোরামে উপস্থিত চীনা ও বিদেশী অতিথিরা বলেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বার্তাটি সুদূরপ্রসারী ও অর্থবহ, যা সত্যিকারের বহুপাক্ষিকতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী শাসনব্যবস্থার ন্যায্য ও যুক্তিসঙ্গত উন্নয়নের কথা বলেছে।
ওয়ার্ল্ড লিডারশিপ অ্যালায়েন্সের চেয়ারম্যান ও স্লোভেনিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ছংতু আন্তর্জাতিক ফোরামের অন্যতম সংগঠক ড্যানিলো তুর্ক বলেন: “প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ফোরামে একটি বিশেষ শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন, যা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও বিনিময় প্রচারে চীনা সরকারের ধারাবাহিক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। এটা আমাদের জন্য অনেক সম্মানের বিষয়।"
প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং তার বার্তায় উল্লেখ করেছেন যে, প্রতিষ্ঠার পর থেকে ছংতু আন্তর্জাতিক ফোরাম বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা, টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন, এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়কে প্রভাবিত করে এমন অনেক বিষয়ে গভীরভাবে আলোচনা করার জন্য সারা বিশ্বের অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন লোকদের একত্রিত করেছে। আদান-প্রদান এবং পারস্পরিক শিক্ষা, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, এবং জনগণের মধ্যে বন্ধন বৃদ্ধির জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে এই ফোরাম।
"প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের বার্তাটি ফোরামের সফল আয়োজনের দিক নির্দেশ করে এবং শক্তিশালী অনুপ্রেরণা যোগায়।" অস্ট্রেলিয়া-চীন বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময় সমিতির পরিচালক ও ওয়ার্ল্ড লিডারশিপ অ্যালায়েন্সের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের চেয়ারম্যান চৌ চেরং বলেন, ফোরামটি "বহুপাক্ষিকতা: আরও বিনিময়, আরও সহনশীলতা, আরও সহযোগিতা"—এই মূল প্রতিপাদ্যের ভিত্তিতে আয়োজিত, যার লক্ষ্য হল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিনিময়ের মাধ্যমে বিচ্ছিন্নতা অতিক্রম করতে, সহনশীলতার মাধ্যমে বিরোধ মেটাতে, এবং সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়ন বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো।
বার্তায় প্রেসিডেন্ট সি জোর দিয়ে বলেন, বিশ্ব, যুগ ও ইতিহাসের অভূতপূর্ব পরিবর্তনের মুখে, মানবসমাজকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, পারস্পরিক শিক্ষা, উন্মুক্ততা ও অন্তর্ভুক্তির নীতি মেনে চলতে হবে, জয়-জয় সহযোগিতা চালাতে হবে, মানবজাতির সাধারণ মূল্যবোধকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, এবং যৌথভাবে একটি উন্নততর বিশ্ব নির্মাণ করতে হবে।
"প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বার্তাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।" শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার প্রাক্তন মহাসচিব ভ্লাদিমির নরভ বলেন, বর্তমানে মানবসমাজ অনেক ঐতিহ্যগত ও অপ্রথাগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। একতরফা সংরক্ষণবাদ নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং ভূ-রাজনৈতিক সংঘাত উস্কে দিচ্ছে। এতে সামাজিক বৈষম্য আরও বাড়াছে। বিশ্বকে ঐকমত্য গড়ে তুলতে হবে এবং সমস্যার ভালো সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। এটি এই ফোরামের মূল কথা।
"চীন সর্বদা বহুপাক্ষিকতাকে রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চীনা নেতাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে, আমি ব্যক্তিগতভাবে অনুভব করেছি যে, চীন সকল দেশের সাথে সমান আচরণ করার ওপর জোর দেয়।" নিজামী গঙ্গাভির ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারের কো-চেয়ারম্যান, প্রাক্তন লাটভিয়ান প্রেসিডেন্ট ভাইলা ফ্রেইবার্গ বলেন, আমরা যে বিশ্বে বাস করি তা শান্তিপূর্ণ নয়, এবং যদি এই সমস্যাগুলো বহুপাক্ষিকতার মাধ্যমে সমাধান করা না যায়, তবে সাধারণ সমৃদ্ধি সত্যিকার অর্থে অর্জিত হবে না। "প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং প্রস্তাবিত প্রধান উদ্যোগগুলো সাধারণ প্রবণতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং অংশীদারদের মধ্যে জয়-জয় সহযোগিতাকে উন্নত করবে। এতে আমরা বহুপাক্ষিকতার ব্যবস্থার অধীনে শান্তি, পারস্পরিক সম্মান ও সাধারণ সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারব।"
অংশগ্রহণকারীরা অত্যন্ত অনুপ্রাণিত ও উত্সাহিত ছিলেন। তাঁরা চীন ও বিশ্বের অন্যান্য দেশের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও বন্ধুত্ব বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে; বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌথভাবে সাড়া দিতে; এবং বিশ্বের শান্তি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। (জিনিয়া/আলিম)