সবাইকে যুক্ত করে সুন্দর ভবিষ্যত সৃষ্টি করা
2023-12-04 15:17:50

যখন সাপ্লাই-চেইনের কথা আসে, আমার মনে জন্ম হয় কয়েকটি প্রশ্নের। সাপ্লাই-চেইন আসলে কী? সাধারণ মানুষের সঙ্গে এ কী সম্পর্ক রয়েছে? উত্তর খুঁজতে আমি চলে এসেছি প্রথম চীন আন্তর্জাতিক সাপ্লাই-চেইন এক্সপোতে।

 

প্রদর্শনী হলে ঢুকে আমি অবাক হই। এক লাখ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে স্মার্ট গাড়ি, সবুজ কৃষি, পরিষ্কার জ্বালানি, স্বাস্থ্যকর জীবন, ডিজিটাল প্রযুক্তির মতো থিম ও পরিষেবা নিয়ে এক্সপো চলছে। এটি বিশ্বের প্রথম জাতীয় পর্যায়ের সাপ্লাই-চেইন মেলা।

 

প্রদর্শনী হলে ক্রেতাদের ভিড় আছে, প্রদর্শকরা আছেন, আছেন আমার মতো সাধারণ মানুষ। সাধারণ পর্যটকরাও সাপ্লাই-চেইনের প্রতি আগ্রহী। প্রদর্শনীতে খাদ্যদ্রব্য আছে; আছে আধুনিক প্রযুক্তি, এআই, নতুন জ্বালানিও। বলা যায়, সবাই প্রদর্শনীতে নিজের জীবন বা কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত জিনিষ দেখতে পারেন। অব্যশই সাপ্লাই-চেইন এক্সপোতে একক পণ্য সবার জন্য প্রদর্শন করা হয় না। চুড়ান্ত পণ্যের সঙ্গে জড়িত আছে আপ, মধ্য ও ডাউন স্ট্রিমের কোম্পানি ও তাদের প্রযুক্তি।

 

আমি স্টারবাকসের স্টলে গেলাম। চীনাদের কাছে পরিচিত মার্কিন ব্র্যান্ড হিসেবে এবার স্টারবাকসের মতো সব বিদেশী প্রদর্শকের মধ্যে ২০ শতাংশ মার্কিন কোম্পানি। ১৯৯৯ সালে চীনে প্রথম দোকান খোলার পর থেকে গেল ২৫ বছরে, চীন স্টারবাকসের বৃহত্তম বৈদেশিক বাজারে পরিণত হয়েছে। আর মার্কিন কোম্পানির ব্যাপক অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে, তারা চীনা সরকারের ধারণার সঙ্গে একমত, আর তা হলো: আন্তঃযোগাযোগ সাধারণ ট্রেন্ড আর উন্মুক্ত ও সহনশীল সাপ্লাই-চেইন অন্বেষণ করা উচিত।

 

কফি বীজ থেকে ভোক্তার হাতে কফি পর্যন্ত এ সারা প্রক্রিয়ায় রয়েছে চাষ, বেকিং, প্যাকেজিং, স্টোরেজ ও লজিস্টিকসহ নানা অংশ আর প্রতিটি অংশের সাথে জড়িত আছে শতাধিক কোম্পানি। যেমন, স্টারবাকস চীনের ইউননান প্রদেশে কফি চাষে সাহায্য করে এবং ওখানের কফি শুধু চীন নয়, ইউরোপ ও আমেরিকায় রপ্তানি করে। পাশাপাশি চীনের চিয়াং সু প্রদেশের স্টারবাকসের একটি শিল্প পার্কে বেকিং কারখানা, লজিস্টিক কেন্দ্র ও অভিজ্ঞতাকেন্দ্রসহ নানা বিভাগ নিয়ে গঠিত একটি সম্পূর্ণ শিল্প-চেইন আছে। সহজ করে বললে, আমরা সাপ্লাই-চেইনকে একটি গাছের সাথে তুলনা করতে পারি। উত্পাদক এ গাছের মূল, ক্রয় কোম্পানি তার শাখা আর পাতা ও ফল আমরা ভোক্তারা। প্রতিজন হতে পারেন উত্পাদক, ভোক্তা এবং আমাদের কোম্পানি হতে পারে এ শিল্প-চেইনের একটি অংশ। তাই সবাই সবসময় সাপ্লাই-চেইনের সঙ্গে জড়িত আছে।

 

বর্তমানে এ বিশ্ব মাত্র মহামারীর আঘাত থেকে পুনরুদ্ধার হয়েছে এবং  আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংঘাতসহ নানা চ্যালেঞ্জের মুখে। এমন প্রেক্ষাপটে চীনের এ এক্সপো আয়োজন নিজের রপ্তানি, আমদানি বাণিজ্য ও অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য সহায়ক। পাশাপাশি, এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম সেখানে সবাই একসাথে সাপ্লাই-চেইনের নানা সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে পেতে পারে।

প্রথম সাপ্লাই এক্সপোতে মোট ১৫০ বিলিয়ন ইউয়ান মূল্যের চুক্তি হয়। তবে এ এক্সপো শুধু পণ্য বিক্রয় বা অর্ডার পাওয়ার জন্য নয়, বরং সাপ্লাই-চেইনের নানান অংশে থাকা কোম্পানির মধ্যে যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টির জন্য। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চ্যালঞ্জের মুখে এটি প্রয়োজনীয়।

 

এবারের এক্সপোর প্রতিপাদ্য হল: অভিন্ন ভবিষ্যত সৃষ্টি করতে বিশ্বকে যুক্ত করা। মেলা দেখার পর আমি আরও ভালোভাবে এ প্রতিপাদ্য বুঝতে পেরেছি। আমরা সবাই বড় এ সাপ্লাই-চেইনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ আর সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য সবার সহযোগিতা দরকার।(শিশির/আলিম/রুবি)