ইয়াং জি নদীর ব-দ্বীপ অঞ্চল বলতে বোঝায় শাংহাই, চিয়াংসু ও চেচিয়াং, ও আনহুই প্রদেশকে। আমাদের দর্শকদের কাছে সে সব প্রদেশ ও শহর পরিচিত হবার কথা। বিশেষ করে শাংহাইয়ের কথা মোটামুটি সবাই জানেন।
চীনের ৪ শতাংশ এ ভূমিতে ১০ শতাংশ জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগ জিডিপি সৃষ্টি হয়। এ অঞ্চল চীনের অর্থনীতির সবচেয়ে প্রাণবন্ত এবং সবচেয়ে উচ্চ মানের উন্মুক্ত ও উদ্ভাবনশীল অঞ্চলগুলোর একটি। চলতি বছর এ ব-দ্বীপ অঞ্চল উন্নয়ন কৌশল প্রবর্তনের পঞ্চম বার্ষিকী। গত ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং শাংহাই শহর পরিদর্শন করেন। ৩ ডিসেম্বর বেইজিং ফেরার পথে তিনি চিয়াংসু প্রদেশের ইয়ান ছেং শহর পরিদর্শন করেন। ৬ দিনব্যাপী পরিদর্শনে তিনি শাংহাই ফিউচার এক্সচেঞ্জ, শাংহাই বিজ্ঞান উদ্ভাবন প্রদর্শনী, মিনহাং ডিস্ট্রিক্ট-এর নতুন যুগের শহর নির্মাণকারী ও পরিচালনাকারীর হোম পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি, তিনি একটি আন্তর্জাতিক আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে শাংহাই-এর প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা সম্পর্কে জানতে, আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান উদ্ভাবনকেন্দ্র নির্মাণের কাজ ও কম ভাড়ার আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পর্কে খোঁজখবর নেন এর আগে গত ৩০ নভেম্বর তিনি শাংহাইয়ে ইয়াং জি নদীর ব-দ্বীপের একীকরণ উন্নয়নের কর্মসভায় সভাপতিত্ব করেন। এটি প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের তিন বছর পর আবার এ অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য বিশেষভাবে এক কর্মসভার আয়োজন।
স্থানীয় অঞ্চলে কর্মরত থাকাকাল থেকেই সি চিন পিং ব-দ্বীপের একীকরণ উন্নয়ন নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেছিলেন। চেচিয়াং প্রদেশের উন্নয়ন সম্পর্কে তিনি চেচিয়াং প্রদেশের বাইরে থেকে ভেবে প্রস্তাব করেন। শাংহাই ও চিয়াংসুসহ প্রতিবেশী প্রদেশ ও শহরগুলোকে সংযুক্ত করে সহযোগিতা জোরদার এবং একে-অপরের সুবিধা কাজে লাগিয়ে ব-দ্বীপের একীকরণের প্রক্রিয়া বেগবান করার নির্দেশনা দেন তিনি।
শাংহাইয়ের উন্নয়ন সম্পর্কে তিনি জোর দিয়ে বলেন, শাংহাইকে এককভাবে উন্নত করলে চলবে না। দেশের ইয়াং জি নদীর ব-দ্বীপের উন্নয়নের সমগ্র কার্যক্রমের মধ্যেই শাংহাইয়ের উন্নয়নের কথা ভাবা উচিত। শাংহাইকে এ অঞ্চলের নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
নতুন যুগে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং আঞ্চলিক সমন্বিত উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। তিনি ইয়াং জি নদীর ব-দ্বীপ অঞ্চলসহ নানা অঞ্চলকে গুণগত মানসম্পন্ন উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তিতে পরিণত করার নির্দেশনা দেন।
গত ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ব-দ্বীপের উন্নয়ন সংক্রান্ত কর্মসভায় সি চিন পিং ‘বাস্তবভাবে বেগবান’ থেকে ‘গভীরভাবে বেগবানের’ কথা জোর দিয়ে বলেছেন এবং বলেছেন, গভীরভাবে এ অঞ্চলের উন্নয়ন বেগবান করতে হলে ‘একীকরণ ও গুণগত মান’-এর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এ দুই বিষয়কে কেন্দ্র করে তিনি চারটি সমন্বিত কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা দেন। সেগুলো হলো: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং শিল্প খাতে সমন্বিত উদ্ভাবন; নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা পালন এবং নিজের সুবিধা সমন্বিতভাবে ব্যবহার; হাডওর্য়ার আন্তঃসংযোগ; এবং পরিবেশ রক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মধ্যে সমন্বয়। এতে গত ৫ বছরের সাফল্য তুলে ধরার পাশাপাশি, পরবর্তী কালের পরিকল্পনা প্রকাশিত হয়েছে।
তিনটি প্রদেশ ও একটি শহরের ভিত্তিতে সারা চীনের উন্নয়নের কথা ভাবা হলো। সমগ্র দৃষ্টিকোণ থেকে এক অঞ্চলের উন্নয়ন এবং এক অঞ্চলের উন্নয়ন থেকে সমগ্র উন্নয়ন সাধন করা সহজ নয়। ইয়াং জি নদীর ব-দ্বীপ অঞ্চল এ ভারী দায়িত্ব নিয়ে সামনে এগিয়ে চলেছে। (রুবি/আলিম)