শত বছরের এমজি আরও বেশি প্রভাব সৃষ্টি করবে
2023-11-27 10:08:32

গাড়ি শিল্পে ১০-১২ বছর কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লরেন্স লেবাননে গাড়ি মার্কেটিংয়ের একজন কর্মী। কয়েক বছর আগে তিনি সাইক মোটর কর্পোরেশন লিমিটেডের (সাইক মোটর) মরিস গ্যারেজেজ ব্র্যান্ডের (এমজি) মধ্যপ্রাচ্য শাখায় যোগ দেন। এর আগে চীনা বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার যোগাযোগে সময় তাদের ব্যাপারে ‘ইতিবাচক’ মনোভাব তৈরি হওয়ার কারণে তিনি আবার চীনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতা চান।

আসলে এমজি ১৯২৪ সালে ব্রিটেনের অক্সফোর্ডে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এমজির উন্নয়ন দেশটির এমনকি বিশ্বের গাড়ি শিল্পের উন্নয়নের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশের সাক্ষী। ২০০৫ সালে এমজি চীনে আসে। তারপর ব্র্যান্ডটি ধাপে ধাপে পুনরুজ্জীবিত হয়ে ওঠে।

২০০৭ সালে ৬০টি নতুন এমজি গাড়ি চিলির বাজারে রপ্তানি করা হয়। তখন থেকে এমজির ‘বিদেশে যাওয়া’র যাত্রা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। পরবর্তী ১৬ বছরে এমজির গাড়ি ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ শতাধিক দেশে বিক্রি হয়। এর মধ্যে ১৭টি দেশে একক ব্র্যান্ডের বিক্রির তালিকায় প্রথম দশে ছিল এমজি। ‘২০২২ সালে বিদেশিদের সবচেয়ে পছন্দের চীনা ব্র্যান্ড’ নির্বাচিত হয় এবং এর মধ্য দিয়ে সাইক মোটরের ‘বিদেশে যাওয়া’র প্রতিনিধিতে পরিণত হয় এমজি।

মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে এমজি ফিরে আসার পর ২ কোটির বেশি ব্যবহারকারীকে কভার করেছে। ব্র্যান্ডটির প্রতি গ্রাহকদের দৃষ্টিভঙ্গি খুবই ইতিবাচক। লরেন্সের মতে, এর কারণ হলো চীনা ব্র্যান্ডের গাড়িতে সবচেয়ে অগ্রণী ফাংশন থাকে কিন্তু দাম খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক।

‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’-এর ‘পাঁচটি লিঙ্ক’ কাঠামো সংযোগের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে চীনের অবাধ বাণিজ্য, আর্থিক সংহতি এবং অবকাঠামো সংযোগসহ বিভিন্ন দিকের সহযোগিতা উন্নত হয়েছে। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য চীনের গাড়িনির্মাতাদের বড় বিদেশি বাজারে পরিণত হয়েছে। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসরের মতো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো আরও বেশি গ্রাহক ও ডিলার চীনা গাড়ি ব্র্যান্ড বাছাই করছেন।

কিছু পরিপক্ব আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের চেয়ে এমজির প্রতিষ্ঠান সংস্কৃতি ও ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত কর্মীদের অধিকতর স্বাধীনতা দেয়।

কর্মীদের দলটি প্রতিষ্ঠার পরপরই এ ব্র্যান্ড অন্য অঞ্চলের বিক্রয়-পণ্যের তুলনায় একদম নতুন গাড়ি মডেল চালু করতে চেয়েছিল। কিন্তু তখন পুরো অঞ্চল লকডাউনের অবস্থায় ছিল। সদরদপ্তরের পরিস্থিতি জানতে মধ্যপ্রাচ্য দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রেখে নতুন ফাংশনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান ডিলারদের কাছে স্থানান্তর করে। পাশাপাশি দলটিকে অনলাইন যোগাযোগের মাধ্যমে গ্রাহক সম্প্রসারণে সমর্থন দেয়। ফলে নতুন মডেলের গাড়ির বৈশিষ্ট্যময় ফাংশন ও তথ্য বাজারে হস্তান্তর হয়।

আরও উন্নতমানের পণ্য, আরও আন্তরিক পরিষেবা বিদেশে এমজি ব্র্যান্ডের পুনর্জীবনের গুরুত্বপূর্ণ যাদুকরী অস্ত্র। ব্র্যান্ডটি উন্নয়নের অন্য একটি যাদুকরী অস্ত্র হলো ‘উন্মুক্ততা ও অন্তর্ভূক্তি’। লরেন্সের দলের কর্মীরা ৬৭টি দেশ থেকে এসেছেন। প্রতিষ্ঠানের পরিবেশে তারা সম্প্রীতিময় পদ্ধতিতে কাজ করতে এবং ভাব বিনিময় করতে পারেন। সবাই একসাথে এক একটি বড় প্রকল্পে অংশ নেন এবং সবসময় তাদের মধ্যে নতুন ধারণা থাকে। ঠিক এ রকম বহুমুখী বৈচিত্র্যময় পোর্টফোলিওর কারণে এমজি দ্রুততার সাথে বিদেশে পণ্য পরিষেবা এবং উদ্ভাবন দক্ষতার অধিকারী হয়।

চীনা প্রতিষ্ঠান অব্যাহতভাবে বিদেশে সম্প্রসারণ করতে পারছে। এর কারণ কেবল দীর্ঘকালের সমর্থন নীতি নয়, বরং চীনে ‘স্মার্ট’ তৈরির প্রযুক্তিও আছে। একই সময় চীন সরকার প্রযুক্তি ও পরিবহন ক্ষেত্রে সামনে এগিয়ে যাওয়াকে সমর্থন করে। উচ্চপ্রযুক্তির শিল্প হিসাবে গাড়ির উন্নয়ন ভবিষ্যত প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত। ফলে এমজির ভবিষ্যতের প্রতি লরেন্সের আস্থা রয়েছে।

তিনি বলেন, আমি খুব খুশি তখন থেকে যখন চীনা প্রতিষ্ঠান সাইক মোটরে যোগ দিয়েছি। ভবিষ্যতে আমরা অব্যাহতভাবে উন্নতমানের পণ্য গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে থাকব এবং এমজির সঙ্গে আরও বড় প্রভাব সৃষ্টি করব। (প্রেমা/রহমান)