তেল মজুদ ও পরিবহনে বাংলাদেশকে সহায়তা করছে চীনা প্রতিষ্ঠান
2023-11-27 10:05:38

বাংলাদেশের চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় লাল রঙের পোশাক পরা চীনা প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ-ব্রিগেডের সদস্যরা স্থানীয় কর্মীদের সঙ্গে সুশৃঙ্খলভাবে নির্মাণকাজ করছেন। তারা একসঙ্গে দেশটির প্রথম স্থল ও সমুদ্রকে সংযোগকারী সুপার বৃহৎ তেল স্টোরেজ ও পরিবহন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন।

বাংলাদেশের তেল ও তেলজাত পণ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল। বিদেশ থেকে ট্যাঙ্কারের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরে তেল আনা হয়। কিন্তু বন্দর এলাকার গভীরতা কম হওয়ার কারণে ১ লাখ টন তেল পরিবহনে সক্ষম ট্যাঙ্কার বন্দরের বাইরে অবস্থান করে এবং ছোট ট্যাঙ্কারের মাধ্যমে তেল বন্দরে নেওয়া হয়। এতে তেল খালাসের কার্যকারিতা কম হয় এবং খরচও বেশি পড়ে। এছাড়া পরিবেশ দূষণও হয়।

এ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের প্রথম স্থল ও সমুদ্রের মধ্যে সংযোগকারী সুপার বৃহৎ তেল স্টোরেজ ও পরিবহন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। চীন সরকারের দেওয়া রেয়াতি ঋণের আওতায় চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০১৯ সালের প্রথম দিকে কাজ শুরু করে চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (সিপিপি)।

কিন্তু এমন একটি প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেওয়া সহজ নয়। প্রযুক্তিগত সমস্যা সমাধান করার জন্য প্রকল্প বিভাগ বার বার নকশা করে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায় এবং বিশ্বে দু’টো অগ্রণী নির্মাণ পরিকল্পনা কার্যকর করে। নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চীনে কখনও ব্যবহার করা হয়নি এমন সামুদ্রিক ‘ডুয়েল চ্যানেল সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং সিস্টেম’ স্থাপন প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এ প্রকল্পে চীনা অর্থ, চীনা প্রযুক্তি, চীনা সরঞ্জাম এবং চীনা নির্মাণের ‘সম্পূর্ণ শিল্প চেইন’ ব্যবহৃত হয়েছে।

প্রকল্প তত্ত্বাবধান কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি বুলেন্ট ডেমিরদামাল জানান, মৌসুমি বৃষ্টিপাত, সমুদ্রের পরিবেশসহ বিভিন্ন উপাদানের প্রভাবে প্রকল্পটি খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল। কিন্তু চীনা প্রতিষ্ঠান সবসময় উচ্চ কার্যকারিতায় সমস্যার সমাধান করতে পারে।

জানা গেছে, বর্তমানে প্রকল্পটি কার্যক্রম শুরু করার মতো অবস্থায় রয়েছে। কার্যক্রম শুরু হলে এটা বাংলাদেশের নতুন জ্বালানি ধমনীতে পরিণত হবে এবং দেশের জ্বালানি সংকট প্রশমিত করবে। ধারণা করা হচ্ছে, এ পাইপলাইনের কারণে তেল পরিবহন খাতে বছরে প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার সাশ্রয় হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নকালে ৪ হাজার ব্যক্তির জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়, যাদের মধ্যে ৮৫ শতাংশ স্থানীয় কর্মী।

বাঙ্গালী কর্মী সুমন চীনে লেখাপড়া করেছেন। স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি এ প্রকল্পে যোগ দেন। নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি অনেক নতুন দক্ষতা অর্জন করেছি। এখানকার কাজ খুবই মূল্যবান। আমার ভবিষ্যত উন্নয়নের ক্ষেত্রে এটা অনেক কাজে লাগবে।” (প্রেমা/রহমান)