নভেম্বর ২০: "চীন বিনিয়োগের সেরা গন্তব্যের সমার্থক হয়ে উঠেছে, এবং 'চীন'-এর পরও চীন হবে।" এপেক বিজনেস লিডারস সামিটে প্রদত্ত এক লিখিত বক্তৃতায়, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীনের অর্থনীতির অর্জন ও সুবিধা বিশদভাবে বর্ণনা করেন। তিনি ঘোষণা করেন যে, চীন অটলভাবে উচ্চ-মানের উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নেবে এবং উচ্চ-স্তরের উন্মুক্তকরণ ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, "আমরা দীর্ঘমেয়াদী ও স্থিতিশীল উন্নয়ন অর্জনে আত্মবিশ্বাসী, এবং চীনের নতুন উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্বকে প্রেরণা যোগাতে ও বিশ্বের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টিতে সক্ষম হবো।”
ক্রমাগত ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে চীন তার উন্নয়নে ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করেছে। চলতি বছরের শুরু থেকে, জটিল ও গুরুতর আন্তর্জাতিক পরিবেশ ও অভ্যন্তরীণ সংস্কার, উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার কঠিন কাজের মুখোমুখি হয়ে, চীন অনেক অসুবিধা মোকাবিলা করেছে। কিন্তু এসব কঠিনতা সত্ত্বেও, চীন ঠিকই এগিয়ে চলেছে। চীন অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও উন্নতি অব্যাহত রেখেছে, প্রবৃদ্ধির হারের দিক দিয়ে বিশ্বের প্রধান অর্থনীতিগুলোর মধ্যে এগিয়ে আছে, এবং উচ্চ-মানের উন্নয়নের জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে চীনের জিডিপি ৫.২% বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে তৃতীয় প্রান্তিকে বৃদ্ধি পেয়েছে ৪.৯%। উভয় সূচকের দিক দিয়েই চীনের অবস্থান প্রধান অর্থনীতিগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে। আশা করা হচ্ছে যে, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে চীনের অবদান এক-তৃতীয়াংশে পৌঁছাবে।
বাস্তবতা প্রমাণ করেছে যে, চীনের অর্থনীতি অত্যন্ত স্থিতিস্থাপক; এর যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এর দীর্ঘমেয়াদী ইতিবাচক মৌলিক বিষয়গুলো পরিবর্তিত হয়নি এবং পরিবর্তন হবেও না। চীন বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির বৃহত্তম ইঞ্জিন হিসাবে ভূমিকা রেখে যাবে এবং গোটা দেশের জন্য বিস্তৃত সুযোগ বয়ে আনবে।
চীনের উন্নয়নকে বিশ্ব থেকে আলাদা করা যায় না, বিশ্বের উন্নয়ন থেকেও চীনকে আলাদা করা যায় না। চীন উদ্ভাবন, সমন্বয়, সবুজ, উন্মুক্ততা এবং যৌথ উপভোগ করার নতুন উন্নয়ন ধারণাগুলোকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বাস্তবায়ন করেছে এবং অটলভাবে উচ্চ-মানের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। চীন অটলভাবে বহির্বিশ্বের সামনে নিজেকে উন্মুক্ত করছে, বিদেশীদের জন্য চীনা বাজারে প্রবেশাধিকার সহজতর করছে, এবং উত্পাদন খাতে বিদেশী বিনিয়োগের প্রবেশাধিকারের ওপর বিধিনিষেধ পুরোপুরি তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যেভাবেই পরিবর্তিত হোক না কেন, বাজারমুখী, আইনি ও আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরির জন্য চীনের সংকল্প পরিবর্তন হবে না। চীন বিদেশী বিনিয়োগের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি অব্যাহত রাখবে, বিদেশী বিনিয়োগ প্রবেশের জন্য নেতিবাচক তালিকা আরও কমিয়ে আনবে, এবং ডিজিটাল অর্থনীতির ক্ষেত্রে সংস্কার আরও গভীর করবে। ভবিষ্যতে চীনের উন্মুক্ততার দ্বার আরও বিস্তৃত হবে।
প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেছেন, "চীনের অর্থনীতি চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠেছে, স্থিরভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এবং উচ্চ-মানের উন্নয়ন অর্জন করেছে। আর এটা চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নের জন্য অনিবার্যও বটে।" এটি উল্লেখ করা উচিত যে, চীনা অর্থনীতির সূচনা ও লক্ষ্য হচ্ছে ১৪০ কোটি চীনা জনগণের জন্য আরও সুখী জীবন নিশ্চিত করা। চীনের আধুনিকায়ন মানে বিশ্বের জন্য একটি বিস্তৃত বাজার এবং অভূতপূর্ব সহযোগিতার সুযোগ।
চীন বিচ্ছিন্নভাবে আধুনিকায়নের জন্য চেষ্টা করে না। শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন, পারস্পরিক কল্যাণকর সহযোগিতা, এবং অভিন্ন সমৃদ্ধির বৈশ্বিক আধুনিকায়নের জন্য অন্যান্য দেশের সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক চীন। চীন অন্যান্য দেশকে চীনা আধুনিকায়নের প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের এবং চীনের উচ্চমানের উন্নয়নের বিপুল সুযোগ ভাগাভাগি করতে আহ্বান জানায়। (ইয়াং/আলিম/ছাই)