আমি সিল্ক রোডের সঙ্গে নিজেকেও বিকশিত করছি
2023-11-20 16:22:33

বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ উত্থাপনের দশবছরে বিশ্ব জুড়ে নতুন আশা আকাঙ্ক্ষা ছড়িয়ে দিয়েছে।  সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দেশের মানুষের জীবনে পরিবর্তনের গল্প এবং সমৃদ্ধির ছবি সৃষ্টি করেছে বেল্ট আ্যান্ড রোড উদ্যোগ।

২০১১ সালে ভারতীয় যুবক আনবু রাজ ভবিষ্যত্ ক্যারিয়ার গঠনের স্বপ্ন নিয়ে পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন অফ চায়নার রোড সিরিজ অব কাতার সিপি ওয়ান প্রকল্প বিভাগে যোগ দেন। সমৃদ্ধ পেশাগত জ্ঞান এবং চমত্কার কর্মক্ষমতা দিয়ে ২০১৭ সালে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়ে প্রকল্প ব্যবস্থাপনা প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পরপর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের তত্ত্বাবধান কাজে অংশ নেন।

পাওয়ার চায়নায় যোগ দেওয়ার আগে তিনি উপসাগর সহযোগী সংস্থা দেশসমূহের স্থাপত্য শিল্পে বেশ কয়েক বছর কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। এরমধ্যে বেশিরভাগ সময় তিনি চীনা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। সুতরাং চীনা সংস্কৃতির সঙ্গে তিনি বেশ ভালোই পরিচিত।

তার প্রযুক্তিগত দক্ষতা চমৎকার। যে কোন প্রকল্পে প্রযুক্তি ও নির্মাণ কর্মীদের দলের মধ্যে সমন্বয়ে তিনি যথেষ্ট সক্ষম।

২০২২ সালের মে মাসে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইতিহাদ রেলওয়ে প্রকল্পের কন্ট্রাক্ট ইঞ্জিনিয়ার হন। তিনি তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়ন করার প্রক্রিয়ায়  ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ সাফল্যের সঙ্গে মোকাবেলা করেছেন। কাজের প্রতি তিনি খুবই সতর্ক ও দায়িত্বশীল। ফলে তার হাতে প্রত্যেকটি প্রকল্প  সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যায়।

আনবু বলেন, তিনি মধ্য, পূর্ব ও উত্তর আফ্রিকায় কোম্পানির কাজের ফলে ধাপে ধাপে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা দেখেছেন। তিনি বলেন, “এ সময়ের মধ্যে আমি নতুন প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করেছি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অংশগ্রহণ বাড়িয়েছি, ইন্ডাস্ট্রি ও কোম্পানির কার্যক্রমকে আরও গভীরভাবে অনুভব করেছি। এসব অভিজ্ঞতা আমাকে একজন আরো দক্ষ ও আত্মবিশ্বাসী পেশাদার মানুষ হতে সাহায্য করেছে।’   

২০১৭ সালে বসনিয়া-হারজেগোভিনার নারী তিজানা পালাদিনা পাওয়ার চায়নায় যোগ দেন। তিনি তার আগেই চমৎকার চীনাভাষা জানতেন। এর ফলে তার কাজের বেশ সুবিধা হয়। তার চীনা নাম থিয়ান চিয়া।

বর্তমানে তিনি এই কোম্পানির বসনিয়া-হারজেগোভিনা প্রতিনিধি কার্যালয়ের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ।

পাওয়া চায়নায় যোগ দেওয়ার শুরুর দিকে তার এবং চীনা কর্মীদের সংস্কৃতি, অভ্যাস ও কাজের ধরনে কিছুটা ভিন্নতা ছিল। তবে তিনি দ্রুত নিজেকে খাপ খাইয়ে নেন। তিনি কাজের ধরন পরিবর্তন ও সমন্বয় করে চীনা প্রতিষ্ঠানের উপযোগী করে নেন। চীনা ভাষায় দক্ষতার থাকার ফলে তিনি চীনা রিপ্রেজেনটেটিভ অফিস, স্থানীয় সহযোগিতামূলক অংশীদার ও সরকারি সংস্থার মধ্যে যোগাযোগের একটা সেতু গড়ে তোলেন। তার মাধ্যমে তিনপক্ষের যোগাযোগ ভালোভাবে স্থাপিত হয়। সময়ের সাথে সাথে থিয়ান চিয়া আরো দক্ষতা অর্জন করেছেন। তিনি পেশায় আরো উন্নতিও করতে চান। এই উচ্চাকাঙ্ক্ষা থেকে তিনি অবসর সময়ে লেখাপড়া করে স্থানীয় আদালত প্রত্যায়িত অনুবাদ পরীক্ষা বা কোর্ট সার্টিফায়েড ট্রান্সলেশন এক্সাম পাশ করেছেন। এখন তিনি চীন থেকে বসনিয়ান এবং ইংরেজি থেকে বসনিয়ান ভাষায় অনুবাদের একজন দক্ষ ব্যক্তি। তিনি রীতিমতো মেধাশক্তিতে পরিণত হয়েছেন।

পাওয়া চায়নায় যোগ দেয়ার  কয়েক বছরে থিয়ানচিয়া শুধু নিজের উন্নতিই অর্জন করেননি, পাশাপাশি দেখেছেন তার জন্মভূমির ইতিবাচক পরিবর্তন ও উন্নয়ন। তিনি বলেন, তার চিন্তাভাবনা, কাজের পদ্ধতি, জীবন যাপনের ধারা, চেতনা সবকিছুরই বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। তিনি পেশাগত জ্ঞান ও সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। উচ্চতর শিক্ষার পথ তিনি অনুসরণ করছেন। আজকের থিয়ান চিয়া আগের তুলনায় অনেক বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কতব্য পালনে প্রস্তুত । বেল্ট অ্যান্ড রোড  উদ্যোগ এভাবেই  সমৃদ্ধ করছে তার জীবন।

(প্রেমা/শান্তা)