নভেম্বর ১৩: ইতিহাস থেকে বাস্তবতা পর্যন্ত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এক হাজার কারণে সুসম্পর্ক থাকা উচিত, কোনো কারণে সম্পর্ক নষ্ট হওয়া উচিত নয়। সম্প্রতি দু’দেশের বেসরকারি বিনিময় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সরকারি বিনিময়ও উন্নত হয়েছে। দু’দেশের সাম্প্রতিক ধারাবাহিক বিনিময় ও সংলাপের মধ্যে দুপক্ষের সম্পর্ক স্থিতিশীল করার ইতিবাচক সংকেত দেখা গেছে। যা আগামী সপ্তাহে দু’দেশের নেতৃবৃন্দের সানফ্রান্সিসকো সাক্ষাতের ভিত্তি তৈরি করেছে।
এ সাক্ষাত হবে- গত বছর বালি দ্বীপে সাক্ষাতের পর দু’দেশের শীর্ষনেতার প্রথম প্রত্যক্ষ সাক্ষাত। দু’দেশের সম্পর্ক, বিশ্বশান্তি ও উন্নয়ন সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গভীর মতবিনিময় হবে। এর সুফল প্রত্যাশা করছে বিশ্ব।
এ সাক্ষাত সহজ বিষয় নয়। ‘বালি দ্বীপের মতৈক্যে প্রত্যাবর্তন’ হলো মৌলিক বিষয়। গত বছর চীন-মার্কিন সম্পর্ক নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল। তার কারণ হলো বালি দ্বীপের মতৈক্যগুলোকে বাস্তবায়িত হয় নি। চীন সম্পর্কিত ভুল ধারণার কারণে মার্কিন কর্তৃপক্ষ চীনের প্রতি ভুল নীতি পালন করেছে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিক কার্যক্রমগুলো দু’দেশের নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্ত থেকে সরে গেছে। যা চীনের স্বার্থ নষ্ট করেছে এবং চীন-মার্কিন সংলাপ প্রক্রিয়াকে স্থগিত করেছে।
‘বালি দ্বীপের মতৈক্যে প্রত্যাবর্তনের’ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বাস্তব কর্মকাণ্ড। এর মধ্যে, তাইওয়ান বিষয় হচ্ছে চীনের মৌলিক স্বার্থ, যা চীন-মার্কিন সম্পর্কের একটি অনতিক্রম্য শেষ-সীমা। সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্র আবারো ঘোষণা করেছে যে তার ‘এক চীন নীতি’ পরিবর্তন হয় নি এবং যুক্তরাষ্ট্র ‘তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদে’ সমর্থন করে না। এ ছাড়া, মার্কিন কর্মকর্তা একাধিকবার জানান যে, ‘চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে না যুক্তরাষ্ট্র’। তাঁরা মনে করেন, দু’দেশের অর্থনীতি যদি বিচ্ছিন্ন হয়, ‘তাতে দু’দেশ ও বিশ্ব বিপর্যয়ে পড়বে।’ এ মনোভাবে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তাঁদের বাস্তব কর্মকাণ্ড।
বিশ্ববাসী আরো প্রত্যাশা করে যে, সানফ্রান্সিসকোতে সাক্ষাতের মাধ্যমে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র একে অপরকে সঠিকভাবে জানতে ও বুঝতে পারবে। চীন মনে করে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদার হওয়া উচিত, প্রতিপক্ষ হওয়া উচিত নয়; পারস্পরিক কল্যাণ ও উভয়ের জয় এগিয়ে নেওয়া উচিত, জিরো-সাম গেম খেলা উচিত নয়।
বর্তমানে বিশ্বের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে শক্তির অভাব রয়েছে, অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতা বাড়ছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির পরিমাণ বিশ্বের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি, জনসংখ্যার দিক থেকেও বিশ্বের প্রায় এক চতুর্থাংশ; দু’দেশের সম্পর্ক মানবজাতির লক্ষ্য অর্জনে বিপুল প্রভাব ফেলছে ও ফেলবে। বর্তমানে শান্তি ও উন্নয়ন হচ্ছে আন্তর্জাতিক সমাজের অভিন্ন প্রত্যাশা। বিশ্ববাসীরা প্রত্যাশা করে, সানফ্রান্সিসকোতে চীন-মার্কিন শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বে শান্তি ও উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গভীর মতবিনিময় হবে। এতে বিশ্ববাসীরও কল্যাণ হবে।
এবার সানফ্রান্সিসকোতে চীন-মার্কিন শীর্ষনেতার বৈঠকে চীনের আন্তরিকতা এবং চীন-মার্কিন সম্পর্ক ও বিশ্বের শান্তি ও উন্নয়নের প্রতি চীনের দায়িত্ববোধ প্রতিফলিত হয়েছে। আশা করা যায়, যুক্তরাষ্ট্র সত্যিকারের অর্থে দেশ ও জনগণের স্বার্থে ও বিশ্বের কল্যাণ বিবেচনা করে, চীনের সঙ্গে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত সংলাপ করবে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের স্থিতিশীল সুসম্পর্ক বাস্তবায়ন করতে চাইলে তা অবশ্যই সম্ভব হবে।
(আকাশ/তৌহিদ)