পিনহাই চংকুয়ানছুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এলাকা
2023-11-11 17:48:30

থিয়ানচিন পিনহাই চংকুয়ানছুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এলাকা পিনহাই নতুন এলাকার পেইথাং এলাকায় অবস্থিত। বেইজিং দক্ষিণ ট্রেন স্টেশন থেকে সেখানে যেতে দ্রুতগতির ট্রেনে প্রায় এক ঘন্টা লাগে। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাস থেকে মাত্র দুই বছরে এলাকায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে নিবন্ধিত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ হয়েছে ১০.৯ বিলিয়ন ইউয়ানের বেশি।

পিনহাই চংকুয়ানছুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এলাকা অবস্থিত পেইথাংয়ের তিনটি নদীর সংযোগস্থলে। পশ্চিমাঞ্চলে সংরক্ষণাগার এবং বনপার্ক রয়েছে, পরিবেশ খুবই সুন্দর ও আরামদায়ক। কিন্তু প্রায় দশ বছর আগে এটি একটি ছোট মাছ ধরার গ্রাম ছিল। থিয়ানচিন পিনহাই চংকুয়ানছুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এলাকা পরিচালনা কমিশনের বিনিয়োগ ও ত্বরান্বিত ব্যুরোর পরিচালক ওয়াং স্যিয়াও ওয়েই বলেন, ২০০৮ সাল থেকে বিভিন্ন সরকারি বিভাগের প্রচেষ্টায় পেইথাংয়ে পরিবর্তন এসেছে। এলাকাটি এখন পিনহাই নতুন এলাকা উন্নয়নের টেমপ্লেটে পরিণত হয়েছে। পেইথাং প্রাচীন থানাসহ ঐতিহাসিক জায়গা রক্ষা ছাড়াও এটি বাসযোগ্য এবং কর্মসংস্থান ও উদ্যোগ প্রতিষ্ঠার জন্য উপযুক্ত একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিল্প নতুন জেলায় পরিণত হয়েছে। ৱ

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন এলাকা নির্মিত হয় ২০০৮ সালে। তখন এটা ছিল একটি ছোট গ্রাম। আসলে ২০১২ সালে নতুন এলাকা মোটামুটি নির্মিত হয়ে যায়। আমরা ছোট গ্রামটিকে একটি আধুনিক নগরে রূপান্তরিত করেছি।’

থিয়ানচিন পিনহাই নতুন এলাকার চংকুয়ানছুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এলাকা চালু হওয়ার পর তিন বছর গত হয়েছে। তিন বছর ধরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এলাকাটি নতুনত্ব ও বাজারের সঙ্গে আরও সংগতিপূর্ণ উন্নয়নের কাঠামো অনুসন্ধান করে আসছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এলাকায় উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবন খাতে বিনিয়োগ করতে উত্সাহিত করা হয়। এ সম্পর্কে ওয়াং স্যিয়াও ওয়েই বলেন, ‘আমরা অব্যাহতভাবে অবকাঠামো ব্যবস্থা উন্নয়ন করছি। এলাকায় ক্রীড়া ও সংস্কৃতির কেন্দ্র রয়েছে। এলাকায় বিনোদনের জায়গা রয়েছে। এ ছাড়াও, এলাকায় থাকার ব্যবস্থা আছে। দাম বাজার মূল্যের চেয়ে কম। রেস্তোরাঁও রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্ডন নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।’

অবকাঠামো খাতে উন্নয়ন ছাড়াও, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এলাকা ঋণ ও ট্যাক্স রিফান্ড ক্ষেত্রে যথাসম্ভব স্থানীয় প্রতিষ্ঠাগুলোকে সমর্থন করে থাকে। এ ছাড়া, এলাকার কর্মীদের ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টাও আছে। থিয়ানচিন ফ্লাইস্কাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার লিয়াং হং শেং বলেন, ‘আগে আমাদের কোম্পানি বেইজিংয়ে ছিল। কিন্তু এখানকার নির্ভুল অবকাঠামো ও সেবার জন্য আমরা কোম্পানি বেইজিং থেকে থিয়ানচিনে স্থানান্তরিত করেছি। আমাদের অধিকাংশ কর্মী কোম্পানির সঙ্গে এসেছেন। বিশেষ করে গবেষণা ও উন্নয়নদল।’

ছেং সাহেব হলেন লিয়াং হং শেং'র কোম্পানির পুরাতন কর্মী। তিনি কোম্পানির বেইজিং থেকে থিয়ানচিনে স্থানান্তর বিষয় নিয়ে বলেন, ‘আমাদের কোম্পানির বেতন খুবই ভালো। আমি কোম্পানিতে তিন বছর ধরে কাজ করছি। এখানে আমার সুপরিচিত পরিবেশ রয়েছে। এ ছাড়াও, আমি থিয়ানচিনের সাংস্কৃতিক পরিবেশ খুবই পছন্দ করি। আমি বর্তমান পেশা পছন্দ করি। সেজন্য আমি কোম্পানিতে থাকবো।’

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এলাকায় অবস্থিত থিয়ানচিন পেইইয়াং বিওট্রানস  বায়োলজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কোং লিমিটেডের চেয়ারম্যান ছিয়াও ছাং শেং'র অন্য একটি পরিচয় আছে। তিনি হলেন থিয়ানচিন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব প্রকৌশল কলেজের অধ্যাপক। এলাকার সমর্থনে তিনি তাঁর শিক্ষার্থীদের নিয়ে ব্যাপক গবেষণা ও পরীক্ষা করে থাকেন।  বৈজ্ঞানিক গবেষণার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিল্পের সঙ্গে সংযুক্ত করতে চেষ্টা করছেন তিনি। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা এলাকায় মাস্টার্স শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়ার্কস্টেশন গড়ে তুলেছি। আমি, আমার সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং অন্যান্য অধ্যাপক, ও ডক্টরেট শিক্ষার্থীরাও আমাদের পরীক্ষাগারে কাজ করেন। প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী। আমরা আশা করি, শিক্ষার্থীরা দ্রুত এখানে শিল্পের সঙ্গে সংযুক্ত হবেন।’

যদিও অনেক অগ্রগতি হয়েছে, তবুও থিয়ানচিন পিনহাই চংকুয়ানছুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এলাকা এখনো উন্নয়নের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ওয়াং স্যিয়াও ওয়েই মনে করেন, এলাকায় বর্তমান মূল প্রতিষ্ঠানের কাজ হল গবেষণা ও উন্নয়ন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সাফল্য প্রচুর হবে ভবিষ্যতে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রের আয়তন বেশি না। প্রায় ১০ বর্গকিলোমিটার। আমাদের এলাকা ছাড়াও কাছাকাছি এলাকায় উন্নয়ন ক্ষেত্র, প্রাকৃতিক নগর এবং উচ্চ ও নতুন প্রযুক্তি এলাকা উন্নত হচ্ছে। এটিও আমাদের সাফল্য লাভ করার একটি কারণ।’

পিনহাই চংকুয়ানছুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এলাকা হচ্ছে বেইজিং-থিয়ানচিন-হ্যপেই বৃহত্তর এলাকার অভিন্ন উন্নয়নের জন্য গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় কৌশলের একটা অংশ। ওয়াং স্যিয়াও ওয়েই আশা করেন, আরও বেশি নব্যতাপ্রবর্তন এবং প্রতিভাবান ব্যক্তিদের আগমন এই এলাকার জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ সৃষ্টি করবে। (ছাই/আলিম)