‘আমার ১৯৯৭ সাল’
2023-11-09 10:55:33

 

আজকের অনুষ্ঠানে চীনের একজন জনপ্রিয় গায়িকা, অভিনেত্রী ও শিল্পীর সঙ্গে আপনাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেবো, তার নাম আই চিং। চীনের প্রথম দফা স্বাধীন ব্যালাড গাওয়ার গায়িকা হিসেবে তিনি এক সময় চীনা ব্যালাডের প্রবণতা নেতৃত্ব করলেন এবং তার ‘ব্যালাড কবির’ খ্যাতিও রয়েছে। বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা একসঙ্গে তার কিছু সুন্দর গান শুনবো। অনুষ্ঠানের শুরুতে শুনুন আই চিংয়ের একটি সুন্দর গান ‘স্বপ্ন কিনা’।গান ১

 

আই চিং ১৯৬৯ সালে চীনের লিয়াও নিং প্রদেশের শেন ইয়াং শহরের একটি সংগীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা চীনের লোকসংগীত খুব পছন্দ করতেন এবং অনেক ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারতেন। তার মা একজন পিং অপেরা অভিনেত্রী। তাদের প্রভাবে আই চিং ছোটবেলা থেকেই সংগীত খুব পছন্দ করেন। প্রাথমিক স্কুলে পড়ার সময়ে তিনি শেনইয়াং টেলিভিশনের যুব গায়কদলে প্রধান গায়িকার ভূমিকাও পালন করেন। ১৬ বছর বয়সে তিনি শেনইয়াং গান ও নৃত্য দলে যোগ দেন এবং বিভিন্ন জায়গায় পারফর্ম করা শুরু করেন। সেই সময় আই চিং অনেক টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রের জন্য গান গেয়েছেন, যা পরে তার শিল্পী জীবনের ভিত্তি তৈরি করে।গান ২

 

গান ও নৃত্য দলে পারফর্ম করার সময়ে আই চিং একটি টিভি নাটকে অভিনয় করার সুযোগ পান। এজন্য তিনি অভিনয় পছন্দ করেছেন এবং বেইজিংয়ের কেন্দ্রীয় অপেরা একাডেমিতে ভর্তি হয়ে অভিনয় শিখেন। ১৯৯০ সালে আই চিং চলচ্চিত্র ‘পাঁচজন নারী ও একটি দড়িতে’ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রটি চীনে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়, তিনিও অনেক পরিচিতি পান। তবে আই চিং শুধু অভিনয় করেননি, সেই বছর আই চিং তার প্রথম অ্যালবাম ‘আমার ১৯৯৭ সাল’ প্রকাশ করেন। কাজের জন্য আই চিং অনেক সময় চীনের মূলভূখণ্ড ও হংকংয়ের মধ্যে যাতায়াত করেন। তিনি দেখেছেন দুই জায়গার মানুষ বিভিন্ন কারণে বিভক্ত হয় এবং আলাদা থাকে। হংকংয়ের চীনের কোলে ফিরে আসা তার মতো অনেকের অভিন্ন প্রত্যাশা। এজন্য তিনি গান ‘আমার ১৯৯৭ সাল’ রচনা করেন। গানটি মুক্তির পরই অনেক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, পরে তার প্রতিনিধিত্বকারী গানে পরিণত হয়। বন্ধুরা, এখন আই চিংয়ের গান ‘আমার ১৯৯৭ সাল’ শুনুন।গান ৩

 

আই চিংয়ের অ্যালবাম ‘আমার ১৯৯৭ সাল’ অত্যন্ত সফল হয়। গানে তিনি ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ দিয়ে বড় শহর ও সমাজের পরিবর্তন তুলে ধরেন, আর রক ও ব্যালাড সংগীত মিশ্রণ করে স্বাধীনতা ও মুক্তির চেতনা প্রকাশ করেন, যা সে সময় খুব অ্যাভান্ড গ্রেড  (avant-garde)। তার এই অ্যালবাম শুধু চীনেই জনপ্রিয় তা নয়, দক্ষিণ এশিয়া ও জাপানে অনেক কপি বিক্রি হয়েছে। বন্ধুরা, এখন শুনুন এই অ্যালবামে আই চিংয়ের একটি জনপ্রিয় গান ‘প্রেমিক তুমি কোথায়’।গান ৪

 

১৯৯৪ সালে আই চিংয়ের দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘ইয়ান ফেন রাস্তার গল্প’ প্রকাশ করেন। অ্যালবামটি তৈরির জন্য তিনি তাইওয়ান, হংকং, অস্ট্রেলিয়ার অনেক সুরকার, গীতিকার ও প্রযোজককে আমন্ত্রণ জানান। অ্যালবামের অনেক গান তার বাস্তব অভিজ্ঞতা অনুসারে রচিত হয়েছে। সহজ কথা ও সুন্দর কাঠামোর জন্য এই অ্যালবামের গানগুলো এক একটি কবিতার মতো। তাই এই অ্যালবামের জন্য আই চিংয়ের ‘ব্যালাড কবি’র খ্যাতি লাভ করেন। বন্ধুরা, এখন শুনুন এই অ্যালবামে আই চিংয়ের একটি সুন্দর গান ‘ইয়ান ফেন রাস্তার গল্প’।গান ৫

 

সংগীতের আরো বেশি সুযোগ খুঁজতে আই চিং ১৯৯৭ সালে নিউ ইয়র্কে যান। সেখানে তিনি ব্রডওয়ে, আন্ডারগ্রাউন্ড মিউজিকসহ বিভিন্ন ধরনের সংগীত সম্পর্কে জানতে পারেন এবং বিভিন্ন শৈলীর শিল্প দেখেন। এসব তার সংগীত রচনায় নতুন অনুপ্রেরণা দেয়। সেখানেই তিনি তার নতুন অ্যালবাম ‘Made In China’ তৈরি করেছেন। জন্মস্থান থেকে দূরে থাকার কারণে তিনি একটি নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে নিজের দেশ ও সংস্কৃতি দেখতে পারেন। এই অ্যালবাম হল সংগীতের মাধ্যমে প্রকাশিত তার চিন্তাভাবনা। বন্ধুরা, এখন শুনুন এই অ্যালবামে আই চিংয়ের একটি সুন্দর গান ‘Made In China’।গান ৬

 

২০০০ সাল থেকে স্বাস্থ্যগত সমস্যা কারণে আই চিং সংগীত মহল ছেড়ে যান। পরে তিনি চিত্রকলা শিখে একজন শিল্পী হন। এখন তিনি বিভিন্ন দেশে নিজের শিল্প প্রদর্শনী আয়োজন করেন। আর গান না-গাইলেও তার গানগুলো এখনও চীনা সংগীত মহলে প্রভাব বিস্তার করে আছে। বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে আমরা একসঙ্গে আই চিংয়ের আরেকটি সুন্দর গান ‘রক ভ্রমণ’ শুনবো। আশা করি, আপনারা তার গানগুলো পছন্দ করবেন।

বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান তাহলে এখানেই শেষ করছি। আশা করি, আমাদের অনুষ্ঠানে প্রচারিত গানগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে। এখন বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন ও সুস্থ থাকুন। আবার কথা হবে। চাই চিয়ান।