চীনের আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা
2023-11-06 11:00:04

নভেম্বর ৬: চীনের ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা (সিআইআইই) ৫ থেকে ১০ নভেম্বর পর্যান্ত শাংহাইয়ে আয়োজিত হবে। এটি মহামারীর পর সিআইআইই-এর প্রথম অফলাইন আয়োজন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সিআইআইই চীনের উচ্চমানের বৈদেশিক উন্মুক্তকরণের সংকল্পকে প্রতিফলিত করে।

২০১৮ সাল থেকে সিআইআইই টানা পাঁচ বছর সফলভাবে আয়োজিত হয়। মেলার মান ও স্তর অব্যাহতভাবে উন্নত থেকে উন্নততর হচ্ছে। প্রতিবছরই মেলায় লেনদেনের অংক বাড়ছে। দুই সহস্রাধিক নতুন পণ্য, নতুন প্রযুক্তি ও নতুন পরিষেবা মেলায় প্রদর্শিত হয়েছে। সিআইআইই চীনের উচ্চমানের বৈদেশিক উন্মুক্তকরণের একটি প্ল্যাটফর্মের পরিণত হয়েছে।  মেলাটি বিশ্বের সাথে চীনের ইতিবাচক অর্থনৈতিক যোগাযোগ ও সহযোগিতার আগ্রহকে প্রতিফলিত করে।

আমদানির থিম নিয়ে বিশ্বের প্রথম আন্তর্জাতিক মেলা হিসাবে সিআইআইই হলো বিশ্বের সকল প্রতিষ্ঠানের জন্য চীনের উচ্চমানের বৈদেশিক উন্মুক্তকরণ উপভোগের একটি প্লাটফর্ম। এটি চীনের বৈদেশিক উন্মুক্তকরণ ক্রমাগত সম্প্রসারণের অন্যতম সাক্ষী। চীনের অব্যাহত কার্যকর উন্মুক্তকরণের নতুন ব্যবস্থাগুলো শুধু বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করছে তা নয়, বরং বিশ্বের কাছে চীনের দৃঢ় উন্মুক্তকরণের তথ্যও প্রকাশ করছে।

চীন বাংলাদেশের সঙ্গে সিআইআইই’র প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় অবাধ বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া দ্রুততর করবে। সম্প্রতি বাংলাদেশে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বাংলাদেশের গণমাধ্যম ডেইলি স্টার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকে চীনের মূল ভূখণ্ড বরাবরই বাংলাদেশের বৃহত্তম একক বাণিজ্যিক অংশীদার। চীন নিজের বিরাট বাজার দিয়ে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের জন্য অভিন্ন সুযোগ সৃষ্টি করে। চীন বাংলাদেশী রপ্তানিকারকদের চীনে রপ্তানিকৃত ৯৮ শতাংশ বাংলাদেশী পণ্যের জন্য অগ্রাধিকারমূলক শুল্ক সুবিধা প্রদান করে এবং সিআইআইই-সহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বাংলাদেশের ব্রান্ড প্রচার করতে উত্সাহ দেয়।

চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর সম্প্রতি প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে চীনের মোট জিডিপি ৫.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্প্রতি প্রকাশিত পরিসংখ্যানে বলা হয়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চীনে নতুন বিনিয়োগকারী বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৩৭.৮১৪ হাজারটি, যা আগের বছরের চেয়ে ৩২.৪ শতাংশ বেশি। আর উত্পাদিত শিল্পে ব্যবহৃত বিদেশী মূলধনের প্রকৃত পরিমাণ ছিল ২৬২.৪১ বিলিয়ন ইউয়ান, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২.৪ শতাংশ বেশি।

বর্তমান বিশ্ব অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এই পটভূমিতে চীনা অর্থনীতি এখনও সামগ্রিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় রেখেছে। সেজন্য চীনের ভালোভাবে ষষ্ঠ সিআইআইই আয়োজনের আস্থা ও সংকল্প আছে। সিআইআইই’র সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিশ্বের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আরও বেশি অবদান রাখবে চীন।

চলতি বছর হলো ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ (বিআরআই) উত্থাপনের  দশম বার্ষিকী। এবারের মেলায় ৭২টি দেশের মধ্যে ৬৪টি হলো বিআরআই-সংশ্লিষ্ট দেশ। সম্প্রতি বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী ঢাকায় সাংবাদিককে জানান, বিআরআই বাংলাদেশের জন্য একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। এটি বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য ও পর্যটনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্প উন্নয়নের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করে। দু’দেশ বিআরআই-এর কাঠামোয় বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করবে বলে আশা করা যায়।

সিআইআইই উত্পাদন, বৈদেশিক বাণিজ্য ও পরিবহনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিআরআই-সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর জন্য উন্নয়নের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করে। পাশাপাশি, চীনের বিরাট বাজার ও বৈদেশিক উন্মুক্তকরণ নীতি ও ব্যবস্থাগুলো সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক কল্যাণকর সহযোগিতা উন্নয়নের জন্যও সহায়ক। মুক্তা, সিএমজি, বেইজিং থেকে।  (ছাই/আলিম)