১৯ অক্টোবর, ৫ দিনব্যাপী ১৩৪তম ক্যান্টন মেলার প্রথম পর্যায় শেষ হয়। আয়োজন কমিটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শেষ দিন পর্যন্ত বিশ্বের ২১৫টি দেশ ও অঞ্চলের এক লক্ষাধিক বিদেশী ক্রেতা মেলায় অংশগ্রহণ করেন, যা ১৩৩তম ক্যান্টন মেলার তুলনায় অনেক বেশী। ১৯৫৭ সালের বসন্তকালে, প্রথম ক্যান্টন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তখন ১৯টি দেশ ও অঞ্চলের ১২০০ জন ক্রেতা তাতে অংশ নেন।
৬৬ বছরে ক্যান্টন মেলার বন্ধুর সংখ্যা ১০ গুণের মতো বেড়েছে। এবার মেলায় ইউরোপ ও আমেরিকান ক্রেতার সংখ্যা গত মেলার তুলনায় ৮.৬ শতাংশ বেশি ছিল। বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ (বিআরআই)-সংশ্লিষ্ট দেশগুলো থেকে আসা ক্রেতার সংখ্যা ১১.২ শতাংশ এবং আরসিইপি দেশগুলো থেকে আসা ক্রেতার সংখ্যা ১৩.৮ শতাংশ বেড়েছে। বিশ্বের শীর্ষ ৫০০ কোম্পানি ও খুচরাবিষয়ক শীর্ষ ২৫০ কোম্পানির অনেকগুলো এবং ১৪০টি প্রধান বহুজাতিক কোম্পানি এতে অংশগ্রহণ করেছে।
এবার মেলার প্রদর্শনস্থলের আয়তন ছিল সাড়ে ১৫ লাখ বর্গমিটার। স্টলের সংখ্যা ছিল ৭৪ হাজার। যারা প্রথমবারের মতো এ মেলায় আসেন, তাঁরা বলছেন, তিন ঘন্টায়াও গোটা প্রদর্শনী-এলাকা দেখে শেষ করা যায়নি।
একই সময় ১৮ অক্টোবর বেজিংয়ে অনুষ্ঠিত হয় বেল্ট অ্যান্ড রোড আন্তর্জাতিক শীর্ষ সহযোগিতা ফোরাম। উত্তর চীন ও দক্ষিণ চীনের দুটি শহরের দুটি বড় অনুষ্ঠান থেকে প্রতিফলিত হয় উন্মুক্তকরণ ও সহযোগিতার প্রশ্নে চীনের দৃঢ়প্রতিজ্ঞা।
চলতি বছর পালিত হচ্ছে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ প্রস্তাব উত্থাপনের দশম বার্ষিকী এবং গেল ১০ বছরে ক্যান্টন মেলা বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগসংশ্লিষ্ট দেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য বিনিময়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়। এবার ক্যান্টন মেলার বিদেশী অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৬০ শতাংশ বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগসংশ্লিষ্ট দেশগুলো থেকে আসেন।
২০১৩-২০২২ সালে, চীন ও বিআরআই-এর সাথে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে রপ্তানি ও আমদানির মোট পরিমাণ ১৯.১ ট্রিলিয়ন ডলার ছিল, গড়ে প্রতিবছর ৬.৪ শতাংশ বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগসংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে চীনের রপ্তানি ও আমদানি বেড়েছে ৩.১ শতাংশ।
১৩৪তম ক্যান্টন মেলার দ্বিতীয় পর্যায় অনুষ্ঠিত হবে ২৩ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত। তারপর ৫ নভেম্বর শাংহাই শহরে অনুষ্ঠিত হবে ষষ্ঠ চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা। বেইজিং, শাংহাই ও কুয়াংচৌ—এই তিনটি বড় নগরে ধারাবাহিক তিনটি বড় অনুষ্ঠান বিশ্বের কাছে যে সংকেত পাঠাচ্ছে, তা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির যত পরিবর্তনই ঘটুক না কেন, চীনের উন্মুক্তকরণ প্রসারিত হবে; চীনের বাণিজ্যিক পরিবেশ ও পরিষেবা উন্নত হবে। চীনের বৈদেশিক উন্মুক্তকরণের প্রতীক হিসেবে ক্যান্টন মেলা আরও বড় ভূমিকা পালন করতে পারবে বলে বিশ্বাস করা যায়। (শিশির/আলিম/রুবি)