অক্টোবর ১৮: চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং গতকাল (মঙ্গলবার) তৃতীয় বিআরআইয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শীর্ষ ফোরামে অংশ নিতে আসা অতিথিদের স্বাগত জানাতে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। অনুষ্ঠানে তিনি ভাষণও দিয়েছেন।
বেশ কয়েকটি দেশের ব্যক্তিবর্গ বলেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ভাষণ বিআরআইয়ের যৌথ নির্মাণে নতুন চালিকাশক্তি যুগিয়েছে এবং বিভিন্ন দেশের অভিন্ন সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন সাধনের জন্য ইতিবাচক শক্তি প্রদান করেছে। বিআরআইয়ের পরবর্তী সোনালি দশ বছরের নতুন অধ্যায় সৃষ্টির জন্য তারা প্রত্যাশা করেন।
২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং পরপর ‘রেশমপথ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ এবং ২১ শতাব্দীর সামুদ্রিক রেশমপথ’ উদ্যোগের প্রস্তাব করেছেন। গত দশ বছরে চীন ১৫০টিরও বেশি দেশ ও ৩০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে বিআরআইয়ের আওতায় ২৩০টিরও বেশি দলিল স্বাক্ষর করেছে।
এসব সাফল্য আকাশ থেকে পড়ে নি। অন্য কেউ দেয় নি। বরং বিভিন্ন দেশের সরকার, প্রতিষ্ঠান ও জনগণ পরিশ্রম, মেধা ও সাহসের মাধ্যমে তা অর্জন করেছে”।
সংবর্ধনানুষ্ঠানে বিআরআইয়ে অংশগ্রহণকারী সবার প্রতি এ কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট সি।
পাকিস্তানের শুল্ক বিভাগ ইসলামাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের চীন-বিষয়ক গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক তাশির আওয়ান বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের উত্থাপিত বিআরআইয়ের দৃষ্টি প্রসারিত, যা ব্যাপক উন্নয়নশীল দেশের পারস্পরিক কল্যাণ ও অভিন্ন জয় এবং অভিন্ন উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিচ্ছে।
গত দশ বছরে বিআরআইয়ের আওতায় হাজার হাজার বাস্তব সহযোগিতামূলক প্রকল্প চালু হয়েছে।
এ দিন হাজার মাইল দূরে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় কাও-১১৩৭ নম্বর ট্রেন ধীরে ধীরে হালিম স্টেশন থেকে রওয়ানা দিচ্ছিল। এ দিনই প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং শীর্ষফোরামে অংশগ্রহণকারী ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর সঙ্গে বৈঠক করেন। দু’নেতা যৌথভাবে জাকার্তা-বাংদু হাইস্পিড রেলওয়ে উদ্বোধন করেন। চীন ও ইন্দোনেশিয়ার বিআরআই’র যৌথ নির্মাণকাজ দৃষ্টান্তমূলক সাফল্য অর্জন করেছে।
বেশ কয়েকবার চীন সফরে আসা ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্র ও বিনিয়োগমন্ত্রী লুহুত পাঞ্জাইতান বলেন, চীনে আছে অত্যাধুনিক হাইস্পিড রেলওয়ে প্রযুক্তি এবং সমৃদ্ধ পরিচালনার অভিজ্ঞতা এবং উচ্চ পর্যায়ের পেশাদার নির্মাণকারী। ইন্দোনেশিয়া চীনের সঙ্গে বিআরআই’র আওতায় যৌথভাবে সহযোগিতা করেছে, যা ফলপ্রসূ হয়েছে। দু’দেশ পারস্পরিক কল্যাণে যৌথভাবে জয়লাভ করেছে।
শান্তি, উন্নয়ন, সহযোগিতা এবং যৌথ কল্যাণ অর্জনভিত্তিক ইতিহাসের ধারা, সুন্দর জীবনের প্রতি মানুষের আকাঙ্ক্ষা এবং বিভিন্ন দেশের যৌথ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জনের সদিচ্ছা বাধাগ্রস্ত করা যায় না বলে ভাষণে জোর দিয়ে উল্লেখ করেন সি চিন পিং।
শীর্ষফোরামে অংশগ্রহণকারী পাকিস্তানের চীন ও বিশ্বায়ন কেন্দ্রের গবেষক আহমেদ জর্ন বলেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের তিনটি ‘বাধাগ্রস্ত করা যায় না’ কথাগুলো ব্যাপক মেধা ও দায়িত্ববোধের প্রতিফলন। বিভিন্ন দেশের জনগণের সুন্দর জীবন কাটানোর আকাঙ্ক্ষা এতে প্রতিফলিত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকারের উচিত নিজ নিজ দেশের জনগণের সুন্দর জীবন সৃষ্টি করা। এটা আমাদের অভিন্ন দায়িত্ব। গত দশ বছরে বিআরআইয়ের অর্জিত সাফল্য প্রমাণ করেছে যে, অবিরাম প্রচেষ্টা এবং সংহতির মাধ্যমে লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবেই”।
(রুবি/তৌহিদ/লাবণ্য)