বিশ্ব খাদ্যশস্য দিবসে স্বাগতম, ‘মহান খাদ্যের ধারণা’ বাস্তবায়ন
2023-10-16 16:00:16

অক্টোবর ১৩: আজ (সোমবার) ১৬ অক্টোবর হলো বিশ্ব খাদ্যশস্য দিবস। জাতিসংঘের খাদ্যশস্য ও কৃষি সংস্থা বিশ্বজুড়ে ‘পানি জীবনের উত্স, পানি খাদ্যশস্যের ভিত্তি’ শীর্ষক ধারাবাহিক কার্যকলাপ আয়োজন করেছে। পানি পৃথিবীতে প্রাণীর বিকাশ ও জীবনধারণের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ সপ্তাহ চীনের খাদ্যশস্য নিরাপত্তা প্রচার সপ্তাহ। এবারের সপ্তাহের প্রতিপাদ্য: ‘মহান খাদ্যের ধারণা বাস্তবায়ন এবং খাদ্যশস্যের নিরাপত্তা সংরক্ষণ’।

শরত্কালের প্রধান খাদ্যশস্য ধান। সম্প্রতি চীনের কৃষি ও গ্রাম মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে বলা হয়, এ বছর চীনের শরত্কালীন খাদ্যশস্যের ৪২.২ শতাংশ ফসল হয়েছে। হ্যনান-সহ যেসব এলাকায় আগাম ফসল কাটার গতি ধীর হলেও তা গত বছরের একই সময়ের সমান। ফসল সংগ্রহের দৃষ্টিকোণ থেকে- বর্তমানে ৫০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে, ৪০ শতাংশ ভুট্টা কাটা হয়েছে এবং প্রায় ৪০ শতাংশ সয়াবিন কাটা হয়েছে। অঞ্চলভেদে শীতকালীন গমের ২০ শতাংশেরও বেশি বপন করা হয়েছে ও প্রায় ৫০ শতাংশ শীতকালীন রেপসিড উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে বপন করা হয়েছে। শীতকালীন রেপসিডের ২০ শতাংশেরও বেশি ইয়াংজি নদীর মাঝামাঝি ও নিম্ন প্রান্তে বপন করা হয়েছে। হুয়াং নদী ও হুয়াই নদী চীনের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল থেকে শুরু হয়েছে।

উল্লেখ্য, খাদ্যশস্যের নিরাপত্তা হলো দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত পরিসংখ্যানে বলা হয়, এ বছর চীনের গ্রীষ্মকালীন খাদ্যশস্যের মোট পরিমাণ ছিল ২৯.২৩ বিলিয়ন জি বা প্রায় ১৫ বিলিয়ন কেজি। যা আগের তুলনায় বেশি।

প্রারম্ভিক চাল উৎপাদন ৫০ বিলিয়ন জি, মানে ২৫ বিলিয়ন কেজি ছাড়িয়েছে। এটি এ বছরে খাদ্যশস্যের ফলন বাস্তবায়নের জন্য শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করেছে। শরত্কালীন খাদ্যশস্য উত্পাদনের পরিমাণ প্রায় গোটা বছরের মোট পরিমাণের চার ভাগের তিন ভাগ। সেজন্য শরৎকালীন ফসলের ক্ষেত্রে, বার্ষিক শস্য উৎপাদন ১.৩ ট্রিলিয়নেরও বেশি জি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

বর্তমানে চীনে খাদ্যশস্য চাষের পরিমাণ ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। চাষের জমি ও জলজ সম্পদের উপর সীমাবদ্ধতা আরও কঠোর হচ্ছে। আয়তন সম্প্রসারণের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানোর সুযোগ কম। ফলন বৃদ্ধি শস্য উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হয়ে উঠেছে। এ বছর ব্যাপকভাবে শস্য উত্পাদনের পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করছে চীন।

খাদ্য সরবরাহ বৈচিত্র্যকরণ হলে জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তার ভিত্তি শক্তিশালী হতে পারে। গত এপ্রিল মাসে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং কুয়াংতং প্রদেশের চানচিয়াং শহর পরিদর্শনের সময় বলেছিলেন, চীন ১.৪ বিলিয়ন জনসংখ্যার একটি বৃহত্তম দেশ। খাবারের সমস্যা সমাধান ও খাদ্যশস্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের ‘মহান খাদ্যের ধারণা’ গড়ে তুলতে হবে। স্থল ও সমুদ্র থেকে খাদ্য সংগ্রহ করতে হবে।

‘মহান খাদ্যের ধারণাতে’ ধান ও গম ছাড়াও সবজি ও ফল অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ ছাড়া মাংস, ডিম, দুধ ও মাছসহ বিভিন্ন পশুখাদ্য এবং অণুজীব, সিন্থেটিক পদার্থ ও অন্যান্য ভোজ্য খাবার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বস্তুত, যেকোন মানুষের স্বাভাবিক জীবন কার্যক্রমের চাহিদা মেটাতে পারে ও মানুষের খাওয়ার জন্য যে পদার্থের জীবনকাল বাড়ানো প্রয়োজন- তাই খাদ্য বিভাগের অন্তর্ভুক্ত।

এদিকে খাদ্য উত্পাদন খাতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উদ্ভাবন উন্নীত করতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির আকর্ষণ ও সহায়তার মাধ্যমে মানবসমাজের চাহিদা ও সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। প্রজনন, শিল্প ও বিভিন্ন মানদণ্ড নিয়ে সংগঠিত ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। কৃষি ও খাদ্য খাতে জৈবপ্রযুক্তির প্রয়োগ এগিয়ে নেওয়া হবে। ঐতিহ্যবাহী খাদ্য সরবরাহ জোরদার করতে হবে, যাতে ‘মহান খাদ্যের ধারণা’ বাস্তবায়ন করা যায়।

১.৪ বিলিয়ন মানুষের খাবার নিশ্চিত করা হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। আমাদের অবশ্যই বৃহত্তর দৃষ্টিকোণ থেকে খাদ্য নিরাপত্তার সারমর্ম বুঝতে হবে এবং উপলব্ধি করতে হবে। খাদ্য বৈচিত্র্যের জন্য জনগণের ব্যবহারের চাহিদা সর্বাধিক করতে হবে। চীনা বৈশিষ্ট্যময় খাদ্যশস্য নিরাপত্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।

সিএমজি, বেইজিং থেকে- মুক্তা।

(ছাই/তৌহিদ)