অক্টোবর ১৪: স্থানীয় সময় গত বৃহস্পিবার চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)-র ‘জার্নি থ্রু সিভিলাইজেশন্স ওয়ার্ল্ড ট্যুর’–এর ব্রিটেন প্রদর্শনী লন্ডনের রয়্যাল মিন্ট মিউজিয়ামের পুরানো স্থানে আয়োজিত হয়। এবারের প্রদর্শনী সিএমজির ইউরোপ শাখা স্টেশনের উদ্যোগে, কেমব্রিজ এশিয়ান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন এবং সোসায়েটি ফর অ্যাংলো-চায়নিস আন্ডারস্টান্ডিং-এর সহযোগিতায় আয়োজিত হয়। চীনের উপ-প্রচারমন্ত্রী ও সিএমজি-র মহাপরিচালক শেন হাই সিয়ুং এক ভিডিও-ভাষণে প্রদর্শনীর সাফল্য কামনা করেন। ব্রিটেনে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের কূটনীতিক, ব্রিটেনের বিখ্যাত পন্ডিত এবং তরুণ শিক্ষার্থীসহ ৮০ জনেরও বেশি অতিথি এতে অংশ নিয়েছেন।
শেন হাই সিয়ুং তাঁর ভিডিও-ভাষণে বলেন, মানবসমাজ এক গভীর পরিবর্তনের যুগে প্রবেশ করেছে। বিশ্ব, ইতিহাস এবং সময়ের সমস্যার মুখোমুখি হয়ে, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের উত্থাপিত বিশ্ব সভ্যতা উদ্যোগের আওতায়, চীনা জনগণ চীনা জাতির আধুনিক সভ্যতা গড়ে তোলার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে এবং মানবজাতির সভ্যতার বিকাশে নতুন অগ্রগতি প্রচার করছে। সিএমজি-র উদ্যোগে আয়োজিত "জার্নি থ্রু সিভিলাইজেশন্স ওয়ার্ল্ড ট্যুর’ প্রদর্শনী "সভ্যতা কী?"—এই প্রশ্নের জবাব দিতে "চীনা সভ্যতার" উৎপত্তির সন্ধান করে। "জার্নি থ্রু সিভিলাইজেশন্স" ওয়ার্ল্ড ল্ড ট্যুর ঐতিহ্যবাহী চীনা সংস্কৃতির আরেকটি অন্বেষণ। সিএমজি গণমাধ্যমের মিশনকে সমুন্নত রাখবে, চীনা সভ্যতাকে প্রচার করবে, চীন ও ইউরোপের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানকে শক্তিশালী করবে, চীনা ও ইউরোপীয় সভ্যতার মধ্যে পারস্পরিক শিক্ষার প্রসার ঘটাবে, এবং মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলায় বুদ্ধি ও শক্তি প্রদান করবে।
ব্রিটেনে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের শ্যাজে ডেফেয়ার্স ইয়াং সিয়াও কুয়াং তাঁর বক্তৃতায় বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলার চেতনা, বিশ্ব উন্নয়ন উদ্যোগ, নিরাপত্তা উদ্যোগ এবং একটি সভ্যতা উদ্যোগ প্রস্তাব করেছেন। এর সঙ্গে চীনা জাতির আধুনিক সভ্যতা গড়ে তোলার সাংস্কৃতিক মিশনও উত্থাপন করেছেন, যা গভীরভাবে বিশ্ব সভ্যতার বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধা, মানবজাতির সাধারণ মূল্যবোধের প্রচারের ওপর গুরুত্ব, সভ্যতার উত্তরাধিকার এবং উদ্ভাবনের প্রতি গুরুতারোপ, এবং আন্তর্জাতিক মানবিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতার গুরুত্বের প্রতিফলন ঘটায়। চলতি বছর, চীন ও ব্রিটেনের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আদান-প্রদান এবং কর্মী বিনিময় দ্রুত পুনরায় শুরু হয়েছে। আশা করা যায় যে, উভয় পক্ষই "জার্নি থ্রু সিভিলাইজেশন্স" ওয়ার্ল্ড ট্যুর-এর মতো প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দুই পক্ষের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং সহযোগিতাকে উত্সাহিত করবে ও সমর্থন করবে। ব্রিটেনে আয়োজিত এই বিশেষ প্রদর্শনী, মানুষে মানুষে আদান-প্রদান বাড়াতে এবং চীন-ব্রিটেন সম্পর্কের সুস্থ ও স্থিতিশীল উন্নয়নে সহায়তা করবে।
ইয়ানিক লিন্টজ হলেন ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ এশিয়ান আর্টসের প্রেসিডেন্ট। তিনি তাঁর ভিডিও-ভাষণে বলেন, বহু বছর ধরে, ইউরোপীয়রা চীনা সাংস্কৃতিক অবশেষকে ইউরোপীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে আসছে। সম্প্রতি, তিনি চীনের সি আন শহর পরিদর্শন করেন এবং জাদুঘরে সমৃদ্ধ থাং রাজবংশের সংগ্রহ পরিদর্শন করেন। এই অভিজ্ঞতা তাকে চীনের থাং রাজবংশের ইতিহাস সম্পর্কে একটি নতুন উপলব্ধি পেয়েছেন তিনি। এটি তাকে উপলব্ধি করতে সাহায্য করেছে যে, শুধুমাত্র সত্য চীনে গেলে বা চীনের আয়োজিত প্রদর্শনী থেকে, এবং শুধুমাত্র চীনা দৃষ্টিকোণ থেকে চীনের সভ্যতার গভীরতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে "জার্নি থ্রু সিভিলাইজেশন্স" শিরোনামে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। বেশ কয়েকজন ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞ ও পণ্ডিত ‘গৌরবময় ও দুর্দান্ত চীনা সভ্যতা বিশ্বে কেমন অবদান রেখেছে?’ শীর্ষক মতবিনিময়সভায় অংশ নেন।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি), ফক্স, সিবিএস, এবিসি, ব্রিটিশ মিডিয়া ওয়াচ, ব্রিটিশ ডেইলি নিউজ অনলাইন, এবং ব্রিটিশ কালচার জোন ওয়েবসাইটসহ বেশকিছু বিদেশি গণমাধ্যম এই অনুষ্ঠানের খবর প্রচার করেছে। (শুয়েই/আলিম)