অক্টোবর ১২: তৃতীয় ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ (বিআরআই) আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শীর্ষ ফোরাম ১৭ থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে। এবারের ফোরামের প্রতিপাদ্য হলো উচ্চ মানের সাথে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ নির্মাণ এবং অভিন্ন উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জন’। এ পর্যন্ত ১৩০টি দেশ ও ৩০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা এবারের ফোরামে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা যৌথভাবে বিআরআই নির্মাণের ১০ বছরের সাফল্যের প্রশংসা করেন এবং আসন্ন তৃতীয় বিআরআই আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শীর্ষ ফোরামের ব্যাপারে প্রত্যাশায় পূর্ণ তারা।
সম্প্রতি কঙ্গো (ব্রাজাভিল)-এর প্রেসিডেন্ট ডেনিস সাসু-গুয়েসো এবারের ফোরামে অংশগ্রহণের কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, যৌথভাবে বিআরআই নির্মাণ তাঁর দেশের জনগণের জন্য সত্যিকারের কল্যাণ বয়ে এনেছে। চীন তাঁর দেশে ব্যাপক অবকাঠামো ব্যবস্থা নির্মাণ করেছে। এটি স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নীত করেছে। তিনি আরও বলেন,
‘চীন-বাস্তবায়িত কঙ্গো (ব্রাজাভিল) ন্যাশনাল এক নম্বর হাইওয়ে প্রকল্প রাজধানী ব্রাজাভিল ও আমাদের দ্বিতীয় শহর পয়েন্টে-নোয়ারকে সংযুক্ত করেছে এবং দুর্গম মায়োম্বে পর্বতমালার মধ্য দিয়ে গেছে। এটি কঙ্গো (ব্রাজাভিল)কে শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে সহায়তা দেবে এবং এটি এমন একটি দেশ হবে যেখানে সবার কাজ থাকবে। কঙ্গো (ব্রাজাভিল) বিআরআইতে যোগদানের সিদ্ধান্ত সঠিক।”
থাইল্যান্ডের জাতীয় আইনসভার প্রেসিডেন্ট এবং আইনসভার নিম্নকক্ষ অর্থাৎ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ওয়ান মুহাম্মাদ নূর মাথা বিভিন্ন দেশে উন্নয়ন ও সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য বিআরআই’র প্রশংসা করেন। তিনি বলেন,
“বিআরআই বিভিন্ন দেশকে সংযুক্ত করেছে এবং বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি যুগিয়েছে। থাইল্যান্ডও অনেক উপকৃত হয়েছে। এটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও পরিবহনে সহায়তা করবে এবং বিশ্ব আরও সমৃদ্ধ হবে।”
চলতি বছর বিআরআই উত্থাপনের দশম বার্ষিকী এবং এ উদ্যোগের আওতায় চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর চালু হওয়ার দশম বার্ষিকী। পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্যমন্ত্রী মুর্তজা সোলাঞ্জি সম্প্রতি বলেন, এটি পাকিস্তানের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,
“পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে লাহোর অরেঞ্জ মেট্রো লাইন, সিন্ধু প্রদেশের থার কয়লা খনি এবং বেলুচিস্তান প্রদেশের গোয়াদর বন্দরসহ চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের আওতাধীন প্রকল্পগুলো থেকে পাকিস্তানের জনগণ অনেক উপকৃত হয়েছে। পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে লৌহকঠিন ভ্রাতৃত্ব, যারা সম্পদ ও দুর্ভোগ ভাগ করে নেয়। আমি বিশ্বাস করি, আসন্ন তৃতীয় বিআরআই আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শীর্ষ ফোরাম পাকিস্তান-চীন সর্বকালের কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বকে একটি নতুন স্তরে উন্নীত করবে। পাকিস্তান চীনের সঙ্গে খনি, কৃষি ও তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে ইচ্ছুক। এছাড়াও চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের কারণে শুধু পাকিস্তান ও চীন লাভবান হবে না; ইরান, আফগানিস্তানসহ মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতেও এটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
ইথিওপিয়ার অর্থমন্ত্রী আহমেদ সিদ সম্প্রতি বলেন, “গত দশ বছরে বিআরআই’র আওতায় ইথিওপিয়া দ্রুত গতিতে উন্নত হচ্ছে। এটি হলো সহযোগিতার একটি আদর্শ উদাহরণ। আমরা আসন্ন তৃতীয় বিআরআই আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শীর্ষ ফোরামের মহান সাফল্যের অপেক্ষায় রয়েছি। বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করার পাশাপাশি আফ্রিকান দেশগুলোর আর্থিক বোঝাপড়ার উন্নতিতে সামিট ফোরামের ইতিবাচক ভূমিকার উপর ফোকাস করা হবে।”(ছাই/রহমান)