পশ্চিমা মুখে আমার যাত্রা-৪
2023-10-07 16:04:00

গত সপ্তাহের অনুষ্ঠানে আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম যে, এনগারি অঞ্চলের পুলান জেলায় আমরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও শুয়ান নৃত্যের চিত্র ধারণ করেছি এবং এনগারি অঞ্চলে আমাদের ভিডিও শুটিংয়ের যাবতীয় কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আমাদের আরও দু দিনের মতো এনগারি অঞ্চলে থাকার কথা। তবে এ সময়ে কোনও শুটিংয়ের কাজ নেই। পুলান একটি সীমান্ত জেলা; নেপাল ও ভারতের সঙ্গে সীমানা রয়েছে এ জেলার। আমাদের সঙ্গে আসা নেপালি বিভাগের দুজন সহকর্মী সীমান্ত এলাকায় এবং নেপালি ব্যবসায়ীদের একটি বাজারে দেখতে চান। তাদের কথা শুনে আমারও আগ্রহ জাগে। তাই সিদ্ধান্ত নেই পরদিন আমরা সীমান্ত ও বাজার দেখতে যাবো।

এনগারি অঞ্চলে আসার দশম দিন অবশেষে আমরা মুক্তি পাই। আমরা যে আটকে ছিলাম তা নয়। আসলে কাজের কারণে সবসময় ইচ্ছা মতো কোথাও বেড়াতে বা কিছু দেখতে পারি নি। কাজকেই সবকিছুর আগে স্থানে দিতে হয়। তবে এখন আর কাজের চাপ নেই। আমাদের মনও চাপ ও উৎকণ্ঠাহীন। আমাদের হোটেল থেকে মাত্র ৩০ মিনিটের মতো গাড়ি চালিয়ে চীন-নেপাল সীমান্তের একটি বন্দরে পৌঁছাই। দুই দেশের মধ্যে একটি নদী আছে আর এ নদীই এখানে সীমান্ত। নদীর এ পাশে চীন আর অন্য পাশে নেপাল। নদীটি খরস্রোতা। নদীর এ তীরে দাঁড়িয়ে অন্য দিকে নেপালি গ্রাম দেখতে পাই। সেখানকার বাড়িঘরের মিল রয়েছে তিব্বতি স্টাইলের সঙ্গে। কথা না বলে বোঝার উপায় নেই কোনটি চীনা গ্রাম আর কোনটি নেপালি গ্রাম। শুনেছি নেপালি গ্রামের বাসিন্দারাও তিব্বতী ভাষা বোঝেন। সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে ‘সংস্কৃতির সীমানা’ তুলনামূলকভাবে অস্পষ্ট। এটা স্বাভাবিক একটি ব্যাপার।

সীমান্তে আমরা অল্প কিছুক্ষণ থাকি তারপর চলে যাই। এখানে দেখার তেমন কিছু নেই। আমরা এখানে ছবি তুলি এবং তারপর বাজারে যাই। এ বাজারে যেমন তিব্বতী মানুষ ব্যবসা করে, তেমনি ব্যবসা করে নেপালি মানুষও। তবে নেপালি মানুষের সংখ্যাই বেশি। তারা নেপালের ঐতিহ্যবাহী কাঠের পাত্র, জামাকাপড়, আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র, খাদ্য, প্রার্থনার সামগ্রীসহ নানা জিনিস বিক্রি করে। তারা কিছুটা তিব্বতি ভাষা এবং চীনা ভাষাও বলতে পারে। আমাদের জন্য সুবিধাজনক ব্যাপার হলো আমাদের সঙ্গে রয়েছেন নেপালি বিভাগের দুজন সহকর্মী। তারা নেপালি ভাষায় দোকান মালিকদের সঙ্গে কথা বললে কিছু অতিরিক্ত ডিসকাউন্টও পাই আমরা। দুই তলায় একটি চত্বরের মতো জায়গা আছে। প্রতি তলায় একের পর একটি দোকান। মেয়েরা কানের দুলসহ বিভিন্ন জিনিস পছন্দ করে। নেপালি স্টাইলের গয়না আমাদের থেকে ভিন্ন। বাংলা স্টাইলের গয়না জমকালো আর নেপালি গয়না এত চাকচিক্যকময় নয়, তবে রঙিন। দামও বেশি না। তাই আমরা মেয়েরা কিছু গয়না কিনি। তাছাড়া পরিবারের জন্য নেপালি চা , স্কার্ফসহ কিছু উপহার কিনি। এক ঘন্টার মতো কেনাকাটার পর আমরা ফিরে আসি।

দুপুরের খাবার খাওয়ার পর আমরা এনগারি অঞ্চলের রাজধানীর উদ্দেশ্যে রওনা হই। রাজধানী বিমানবন্দরের কাছাকাছি এবং সেখানে দুদিন থাকার পর আমরা লাসা ফিরি। শ্যানসি ভবনের কথা আপনাদের মনে আছে? হ্যাঁ এনগারি আসার পর আমরা প্রথম যে হোটেলে উঠেছিলাম আবার সেখানে ফিরি আমরা। ফেরার পথে আবার গ্যাং রেনপোচে দেখতে যাই। পবিত্র পবর্তের নীচে আমরা একটি গ্রুপ ছবি তুলি। ওইদিন আবহাওয়াও ভাল ছিল। গ্যাং রেনপোচে পাহাড়কে স্পষ্টভাবে দেখা যায়। পুলান জেলা থেকে এনগারি অঞ্চলের রাজধানীতে ফিরে যেতে আসলে ৫ ঘন্টার মতো সময় লাগার কথা। তবে আমাদের চালক খুব দ্রুত গাড়ি চালান, যে কারণে ৪ ঘন্টারও কম সময়ে আমরা শ্যাংনসি ভবনে ফিরতে পারি।

পরিকল্পনার চেয়ে আগে আমাদের শুটিং শেষ হয়। আমরা ভাবি যদি পরিকল্পনার চেয়ে একদিন আগে বেইজিংয়ে ফিরে যেতে পারতাম, তাহলে ভাল হতো। তবে বিমানের টিকিট পাওয়া যায় না। আমি আগেই বলেছি, এনগারি ও লাসার মধ্যে দিনে মাত্র দুটি ফ্লাইট। আগে যদি বুকিং করা না হয়, তাহলে সহজে টিকিট পাওয়া যায় না। কী আর করা। এনগারি অঞ্চলে আরও একদিন থাকতে হয়। এদিন আমাদের কোনও কর্মপরিকল্পনা নেই। দীর্ঘ যাত্রার পর সবার ক্লান্ত বোধ করছেন। তাই আমরা সকালে নিজেদের রুমে খাবার অর্ডার করি, তবে রাতের খাবার একসাথে খেতে যাই।

অনলাইনে ভালো একটি রেঁস্তোরা খুঁজে পাওয়া যায় - চিকেন হটপট রেঁস্তোরা। সবাই বসে সুস্বাদু খাবার খাই, আড্ডা দিই। খুবই আনন্দদায়ক! এনগারি অঞ্চলের রাজধানী আসলে একটি ছোট শহর। এখানে প্রায় গাড়ি চড়ার দরকার হয় না; হেঁটে সব জায়গায় যাওয়া যায়। রেঁস্তোরা থেকে বেরিয়ে আমরা হোটেলের কাছে একটি চত্বরে আসি। আপনারা যারা চীন ভ্রমণ করেছেন বা চীন সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখেন, তারা নিশ্চয় চত্বরের নাচ দেখেছেন বা এ সম্পর্কে শুনেছেন। চীনে প্রবীণেরা বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা রাতে চত্বরে নাচ করতে পছন্দ করেন। তারা নানা স্টাইলের নাচ করেন। বিভিন্ন জায়গায় এ নাচের ভিন্ন রীতি ও স্টাইল আছে। তিব্বতেও এ রকম নাচ দেখি। তবে বেইজিংয়ের নৃত্য থেকে আলাদা। এখানে চত্বর-নাচে অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগ তরুণ। তাদের জন্য এটি এক ধরনের যোগাযোগের পদ্ধতি। যুবক ছেলে-মেয়েরা নাচ করার মাধ্যমে পরস্পরকে জানতে পারে। আমি লক্ষ্য করেছি, তিব্বতি মানুষেরা খুব ভাল নাচত পারে। শুধু তিব্বতী মানুষ নয়, আসলে চীনে ৫৫টি সংখ্যালঘু জাতির মানুষ আছে এবং প্রত্যেক জাতির নিজস্ব নাচ ও গান আছে। যেমন সিনচিয়াংয়ের উইগুর জাতি, কুয়াং সির চুয়াং জাতি, ইনার মঙ্গোলিয়ার মঙ্গোলীয় জাতিসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতির মানুষেরা ভাল গান ও নাচ করে। তিব্বতি মানুষও এর ব্যতিক্রম নয়। আনন্দ সংগীতে নাচ করা তাদের জন্য আরাম করার পদ্ধতি। চত্বরে কিছুক্ষণ নাচ দেখার পর আকাশ অন্ধকার হয়ে আসে। চত্বরে উন্মুক্ত চলচ্চিত্র প্রদর্শন শুরু হয়। আমিও ধীরে ধীরে হোটেলে ফিরে যাই। আগামীকাল সকালে সবার ফ্লাইট। এভাবে এনগারি অঞ্চলে আমার শেষদিন শেষ হয়।

পরদিন সকালে আমরা এনগারি অঞ্চলের বিমানবন্দরে যাই। তবে ফ্লাইট একটু বিলম্ব হয়। বিমানবন্দরটি বেশ ছোট; কোনও বিনোদনের ব্যবস্থা নেই সেখানে। চেয়ারে বসা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। তবে খুব বেশি দেরি হয়নি ফ্লাইটের; প্রায় ৪০ মিনিটের মতো দেরি হয়। বিমানে আমাদের দল ছাড়া সবাই ইউনিফর্ম পরিহিত সৈনিক। আমি জানতে পারি, ওরা অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক। এনগারি অঞ্চলে কয়েক বছর সেবা দিয়ে অবসর যাচ্ছেন তারা। তারা আমাদের সঙ্গে একই ফ্লাইটে লাসায় ফিরে যাচ্ছেন। তারপর নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাবেন তারা। আড়াই ঘন্টার পর বিমানটি লাসা বিমানবন্দরে অবতরণ করে। আমাদের পরিচিত এ বিমানবন্দরে গত ১০ দিনে এটা আমাদের তৃতীয় সফর। একদিন পর আমরা আবার এ বিমানবন্দর দিয়ে বেইজিংয়ে ফিরে যাবো।

লাসা পৌঁছানোর পর আমরা সরাসরি হোটেলে যাই। বিকেলের অর্ধেক সময় এখনও আছে। সবাই নিজ নিজ পরিকল্পনা করে নিই। যেমন নেপালি বিভাগের সহকর্মী বারখো স্ট্রিটে তিব্বতী পোশাকের ছবি তুলতে যান। লাসায় অবস্থানের দ্বিতীয় দিন আমি এমন ছবি তুলেছিলাম, যেটা তার খুব ভাল লাগে। তাই লাসায় ফিরে আসার পর তিনিও এমন ছবি তুলতে চান। আমার পরিকল্পনা কী? আমি স্বর্ণা আপুর সঙ্গে কেনাকাটা করতে যাবো। যদিও নেপালি ব্যবসায়ীর দোকান থেকে আমরা অল্পকিছু কিনেছি, তবে ওগুলো তিব্বতের বৈশিষ্ট্যময় পণ্য নয়। আমরা স্থানীয় একটি দোকানে যাই কিছু জিনিসপত্র ও খাবার কিনতে। যাবার আগে আমরা রুমে লাঞ্চ সেরে নিই। এখানেও মজার একটি অভিজ্ঞতা হয় আমার। আপনারা হয়ত জানেন যে, চীনে ফুড ডেলিভারি ব্যবসা খুব জনপ্রিয়। রুম থেকে ফোনে প্রায় সব ধরনের খাবার অর্ডার করা যায়। প্রত্যন্ত অঞ্চল যেমন এনগারি অঞ্চলে অনলাইন খাবার অর্ডারের প্রচলন তেমন বেশি না, তবে লাসায় এটা খুব স্বাভাবিক। হোটেল অন্য একটি সেবা প্রদান করে। সেটা হলো রোবটের মাধ্যমে ডেলিভারি। আমি অনলাইনে খাবার অর্ডার করি তারপর ডেলিভারিম্যান তা হোটেলে পৌঁছে দেন। তবে তিনি আমার রুমে আসেন না; খাবার একটি রোবটকে দিয়ে দেন। অবশ্য দেওয়ার আগে তিনি আমাকে ফোন করে অনুমোদন নিয়ে নেন। ফ্রন্ট ডেস্কের কর্মীরা আমাদের রুম নম্বর ও ফোন নম্বর রোবটকে জানান। তারপর রোবট নিজে লিফ্‌ট ধরে আমার রুমে আসে। আমি দরজা খুলে দেখতে পাই একটি রোবট দাঁড়ানো আমার সামনে। রোবটের স্ক্রিন প্রেস করলেই তার বুক খুলে যায়। আমি সেখান থেকে আমার খাবার বের করি তারপর আবার স্ক্রিন প্রেস করি। রোবটের বুক বন্ধ হয়ে যায় এবং সে গান গাইতে গাইতে চলে যায়। অনেক অনেক মজার ব্যাপার। আগে আমি ইন্টারনেটে অনেকবার এমন রোবট ডেলিভারির ভিডিও দেখেছি। এবার নিজে সেটা ব্যবহার করলাম। এটিও এবারের যাত্রার একটি স্মৃতি হয়ে থাকবে।

রোবটের ডেলিভারি দেওয়া খাবার খাওয়ার পর আমি ও স্বর্ণা আপু বারখো শপিং মল নামের একটি জায়গায় যাই। লাসা যেহেতু আঞ্চলিক রাজধানী, তাই এখানে মানুষ অন্য জায়গার চেয়ে বেশি। অনেক দিন পর আমরা আবার যানজটে পড়ি। এ শপিং মলের ব্যাপারে আমি অনলাইনে অনেক খোঁজখবর নিয়েছি। বলা হয়, স্থানীয়রা এখানে বেশি কেনাকাটা করে। দর্শনীয় স্থানগুলোর তুলনা এখানে জিনিসের দাম কম। এ শপিং মল ঢুকে আমি অবাক হয়ে যাই। এত বড়‍! তিন তলা এ মলে স্টলগুলোর মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। মনে হয়, সহস্রাধিক স্টল আছে এখানে। এখানে আমরা এক ঘন্টার মতো ঘুরি। দশ-বারো ইউয়ান দিয়ে খুব সুন্দর একটি ব্রেসলেট কেনা যায়। কিচেনের জিনিস, কানের দুলসহ কিছু জিনিসপত্র কিনি। তবে এখানে খাবার কিনতে পারি না। তাই আমরা এখান থেকে গাড়িতে করে একটি সুপার মার্কেটে যাই। সুপার মার্কেটে প্রচুর পরিমাণে স্থানীয় খাবার পাওয়া যায়। স্থানীয় খাবার মূলত দুই ধরনের - দুগ্ধজাত পণ্য ও চা। তিব্বতের মাখন চা ও মিষ্টি চা খুব জনপ্রিয় ও বিখ্যাত।

মাখন চা হলো এক ধরনের ঔষধি পানীয়, যার মূল উপাদান মাখন, চা ও লবণ। শীতে এই চা মানুষের শরীরকে গরম রাখে, পিপাসা মেটায় ও শক্তি যোগায়। মাখন চা ‘ঈশ্বরীক জিনিস’ হিসাবে পরিচিত। তিব্বতি ভাষায় এটাকে বলা হয় ‘ছিয়াসুমা’। এটি তিব্বতিদের একটি বিশেষ পানীয়। এটি মূল পানীয় হিসেবে খাবার টেবিলে পরিবেশন করা হয়।

কীভাবে এই চা তৈরি করবেন? প্রথমে একটি বিশেষ পাত্রে উপযুক্ত পরিমাণে ঘি ঢালুন, লবণ যোগ করুন, তারপর গরম ঘন চা ঢেলে দিন এবং একটি কাঠের ঘুটনি দিয়ে ঘুটতে থাকুন। এতে দুধের মতো পানীয় দেখা যাবে। তিব্বতিদের আশেপাশের কিছু জাতিগোষ্ঠীও মাখন চা পান করে।

তিব্বতের মালভূমির জাদুকরী ভূমিতে এই আর্দ্র পানীয় রয়েছে তিব্বতি জনগণের জীবনের অংশ ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার।তিব্বতি মাখন চা তিব্বতিদের পারিবারিক জীবনের একটি অপরিহার্য অংশও বটে। তিব্বতি পরিবারের সদস্যরা একসাথে বসে এই চা পান করে, যা কেবল শরীরকে উষ্ণ করে না, পরিবারের সদস্যদের আরও কাছাকাছি নিয়ে আসে।

মাখন চা তৈরির জন্য ইট আকৃতিতে সংরক্ষিত উন্নত মানের চা পাতা, মাখন ও লবণ প্রয়োজন, যা একটি অনন্য স্বাদ ও সুগন্ধের পানীয় তৈরি করে।

প্রথমত, নির্বাচিত চা পাতাগুলোকে সূক্ষ্ম চায়ের গুঁড়োতে পরিণত করা হয়, যা পরবর্তীতে ফুটন্ত পানির সাথে মেশানো হয়। তারপর পাত্রে ঘি ও লবণ যোগ করা হয় এবং আগুনে সেদ্ধ করা হয়। এতে মাখনের মিষ্টি গন্ধ পাওয়া যায়।

মাখন গলে গেলে ধীরে ধীরে সূক্ষ্ম চায়ের গুঁড়ো যোগ করতে হয় এবং নাড়তে থাকতে হয়। বারবার নাড়ার পর মাখনযুক্ত চা ধীরে ধীরে ঘন হয়ে ওঠে। অবশেষে এক আর্দ্র মাখন চা তৈরি হয়ে যায়। এক চুমুক চা মানুষকে নেশাগ্রস্ত করবে, সে কিছুক্ষণের জন্য ভুলে যাবে পৃথিবীর ব্যস্ততা।

মাখন চার তুলনায় মিষ্টি চা ও আমাদের খাওয়া দুধ চার মধ্যে বেশি মিল। তাই আমি উপহার হিসেবে অফিসের সবার জন্য মিষ্টি চা কিনি। বিকেলে কেনাকাটা শেষ করে আমরা হোটেলে ফিরে যাই আর এর মধ্য দিয়ে তিব্বতে আমার যাত্রাও শেষ হয়।পরবর্তী দিন লাসা থেকে বিমানযোগে বেইজিংয়ে ফিরে যাই।

তের দিনের যাত্রা শেষ হয় তবে এ মুহুর্তে আমার মন অশান্ত হয়ে ওঠে। তিব্বতের গল্প লিখতে লিখতে আমি যেন আবার মালভূমিতে ফিরে যাই। যাত্রা শেষ হয়, তবে স্মৃতি শেষ হয় না। তিব্বতের এ যাত্রা চিরদিনের মতো আমার মনে থাকবে। আর আমার লেখার মাধ্যমে আপনাদের সঙ্গে এ গল্প শেয়ার করেছি। এখন এ স্মৃতি আপনাদেরও স্মৃতিতে পরিণত হয়েছে। তাই না?(শিশির/রহমান/রুবি)