অক্টোবর ৫: চলতি বছর বিদেশী কোম্পানিগুলোর অনেক বড় কর্তা চীন সফর করেছেন। এদিকে, চীনে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে। চীনের বিনিয়োগ পরিবেশের ওপর বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর আস্থা এতোটুকু কমেনি।
গত ২২ সেপ্টেম্বর ব্রিটেনের এচএসবিসি, জার্মানির বেয়ার, যুক্তরাষ্ট্রের স্টারবাকস ও ফ্রান্সের সানোফি গ্রুপসহ বিশ্বের ৫০০টি সেরা কোম্পানির অনেকেই বিনিয়োগের জন্য চীনের স্যিয়ংআন নতুন এলাকায় আসে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, এ বছরের আগষ্ট পর্যন্ত চীনে নতুন বিনিয়োগকারী বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৩৩১৫৪টি, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৩ শতাংশ বেশি। চীনের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি, বিদেশী কোম্পানিগুলোর চীনে বিনিয়োগের আস্থা স্থিতিশীল আছে। বিদেশী কোম্পানিগুলোর চীনে বিনিয়োগের স্বাভাবিক প্রবণতায় পরিবর্তন হয়নি।
গত আগষ্ট পর্যন্ত চীনের উচ্চ প্রযুক্তিগত উত্পাদিত শিল্পে বিদেশী মূলধনের প্রকৃত ব্যবহার ১৯.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। চিকিৎসা সরঞ্জাম ও উপকরণ উত্পাদন যথাক্রমে ৩৯.৭ ও ২৫.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। উচ্চ প্রযুক্তি পরিষেবা শিল্পে গবেষণা ও উন্নয়ন ও নকশা পরিষেবাগুলোতে বিদেশী পুঁজির প্রকৃত ব্যবহার ৫৭.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
চীনের বাণিজ্য ত্বরান্বিত সমিতির সম্প্রতি প্রকাশিত ‘২০২৩ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে চীনে বিদেশী বিনিয়োগ ও ব্যবসায় পরিবেশ জরিপ গবেষণা’-য় বলা হয়েছে, প্রায় ৭০ শতাংশ বিদেশী অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান আগামী পাঁচ বছরে চীনা বাজারের সম্ভাবনা সম্পর্কে আশাবাদী।
চলতি বছরের আগষ্ট পর্যন্ত, ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও জার্মানি থেকে চীনে প্রকৃত বিনিয়োগ যথাক্রমে ১৩২.৬, ১১১.২, ১০৫.৬, ৫৯.২ ও ২০.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ বছর জটিল আন্তর্জাতিক অবস্থায়, বৈশ্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্দা ছিল। সেজন্য চীনের বিভিন্ন বিভাগ বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ ও স্থিতিশীলতার জন্য ধারাবাহিক ব্যবস্থা নেয়।
চীনের নতুন উন্নয়ন অব্যাহতভাবে বিশ্বের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করছে। কিছুদিন আগেই অ্যাডিডাস গ্লোবালের সিইও বিয়র্ন গুল্ডেন চীন সফরকালে এক মতবিনিময় সভায় বলেন, তিনি বিশেষভাবে একটি নীল স্পোর্টস জ্যাকেট পরিধান করেন যাতে ‘চায়না’ শব্দটি মুদ্রিত আছে।
এ বছর টেসলার সিইও ইলন রিভ মাস্ক, অ্যাপলের সিইও টিম কুক, মার্সিডিজ-বেঞ্জ গ্রুপ এজি-এর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ওলা ক্যালেনিয়াস এবং স্টারবাকস গ্লোবাল সিইও লাক্সান নরসিমহান বিভিন্ন বিদেশী প্রতিষ্ঠানের কর্তারা চীন সফর করেছে এবং বিনিয়োগ করেছেন।
আগামী নভেম্বরে ষষ্ঠ চীনের আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা পুনরায় অফলাইনে আয়োজিত হবে। এ পর্যন্ত ৩ হাজারটি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণের আবেদন জানিয়েছে। এবারের মেলাস্থলের আয়তন ৩.৬ লাখ বর্গমিটার ছাড়িয়ে যাবে। এর মধ্যে ২ শতাধিক প্রতিষ্ঠান টানা ছয় বছর ধরে মেলায় অংশ নিয়ে আসছে। মেলার মাধ্যমে অধিক থেকে অধিকরত বিদেশী কোম্পানি চীনের সঙ্গে স্থায়ী চুক্তি স্বাক্ষর করছে এবং গভীরভাবে চীনের শিল্প ও উদ্ভাবন-চেইনে যোগ দিচ্ছে।
মার্কিন কোহেন গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াং ইং হুয়া বলেছেন, বাণিজ্যিক সুযোগ আসলে চাহিদা। বাজারের সুপ্তশক্তির উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উদ্ভাবন, ও জনগণের জীবনমান উন্নয়নে চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন ইতোমধ্যেই কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। চীন অবশ্যই অব্যাহতভাবে সারা বিশ্বের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করে যাবে। (ছাই/আলিম)