অক্টোবর ৪: সম্প্রতি চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য-কার্যালয় ও সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের গণসরকারের তথ্য কার্যালয়ের যৌথ উদ্যাগে, রেশমপথ অর্থনৈতিক অঞ্চল সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর গণমাধ্যমের কর্মীরা সিনচিয়াং পরিদর্শন করেন। বেলজিয়াম, কানাডা, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইরান ও কাজাখস্তানসহ ১৭টি দেশের ২২ জন সাংবাদিক সিনচিয়াংয়ের উরুমুছি, কাশগর প্রিফেকচার ও ইলি কাজাখ স্বায়ত্তশাসিত বান্নার পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে বিদেশী সাংবাদিকরা স্থানীয় নাগরিকদের সঙ্গে আলাপ করেন এবং বিভিন্ন আলোচনা ও মতবিনিময়সভার মাধ্যমে সিনচিয়াংয়ের সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করেন।
উরুমুছি আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর, চীন-ইউরোপ রেলপথ সমাবেশকেন্দ্র, কাশগর প্রাচীন নগর, ও ইলি শহরের লিউসিং সড়ক পরিদর্শন করেন বিদেশী সংবাদিকরা। তাঁরা সিনচিয়াংয়ের অর্থনীতির সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন, সমাজের সম্প্রীতি ও স্থিতিশীলতা, সমৃদ্ধ সংস্কৃতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তাঁরা বিগত দশ বছরে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ থেকে অর্জিত সাফল্যেরও প্রশংসা করেন।
উরুমুছিতে অবস্থিত সিনচিয়াং আন্তর্জাতিক বাজারে জার্মানির বার্লিনার জেইতুং প্রত্রিকার অর্থনীতি সম্পাদক সাইমন জেইজার ভিড়ের মধ্যে হেঁটে তাঁর মেয়ের জন্য উপহার কেনেন। তিনি বলেন, এখানে সিনচিয়াংয়ের অর্থনীতির সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন অনুভব করা যায়।
মালয়েশিয়ার নিউ স্ট্রেইটস টাইমস’র সিনিয়র সম্পাদক আরমান বিন আহমেদ সিনচিয়াংয়ের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে খুবই আশাবাদী। তিনি বলেন, “আমি মনে করি, সিনচিয়াংয়ের অর্থনীতির উন্নয়নের আরও সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী কয়েক বছরে, ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ যত সামনে এগিয়ে যাবে, সিনচিয়াং ততই সমৃদ্ধতর হবে।”
এমন একটি অঞ্চল যেখানে প্রাচীনকাল থেকেই একাধিক সংস্কৃতি সহাবস্থান করে আসছে। সিনচিয়াংয়ের বিভিন্ন জাতির সংস্কৃতি চীনা সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইরানের সাংবাদিক মোহাম্মদ রেজা নওরোজপুর বলেন, সিনচিয়াংয়ের বহু জাতির সংস্কৃতি একটি সুন্দর ফরাসি কার্পেটের মতো। বিভিন্ন রঙ ও নকশার সাথে একত্রে বোনা একটি সুন্দর শিল্পকর্ম যেন এটি।
এ ছাড়া, সাংবাদিকরা সিনচিয়াং ইসলামিক একাডেমি ও কাশগর ইদ কাহ মসজিদ পরিদর্শন করেন। তাঁরা আইন অনুযায়ী সিনচিয়াংয়ের বিভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বাসীদের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়ে ধারণা পেতে একটি বিশেষ ফোরামে অংশগ্রহণ করেন।
কানাডার সাংবাদিক ডোনোভান রালফ মার্টিন বলেন, সিনচিয়াংয়ে মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা আছে। যারা মনে করে যে, সিনচিয়াংয়ের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা নেই, তারা অজ্ঞ।
চলতি বছর হলো ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ উত্থাপনের দশম বার্ষিকী। বিদেশী সাংবাদিকরা মনে করেন, চীন-ইউরোপ রেলপথ, উরুমুছি সমাবেশকেন্দ্র, ও কাশগর বহুমুখী শুল্কমুক্ত এলাকাসহ বিভিন্ন সাফল্য এসেছে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ বাস্তবায়ন থেকে। এ অর্জন অসাধারণ।
কাজাখস্তানের সাংবাদিক ইয়েরজান বাগদাতোভ চীন-কাজাখস্তান হরগোস আন্তর্জাতিক সীমান্ত সহযোগিতাকেন্দ্র পরিদর্শন করার সময় উত্তেজিতভাবে বলেন, ‘আমি যেন বাড়িতে আছি!’ তিনি বলেন, এই সহযোগিতা কাজাখস্তান ও চীন, চীন ও ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে একটি সেতু হয়ে উঠতে পারে।
সিনচিয়াংয়ে সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিষয়ভিত্তিক একটি প্রদর্শনী পরিদর্শন করার সময় ছবি ও ভিডিও উপকরণের মাধ্যমে বিদেশী সাংবাদিকরা গভীরভাবে সন্ত্রাসদমন ও মৌলবাদবিরোধী ক্ষেত্রে সিনচিয়াংয়ের প্রচেষ্টা ও সাফল্য বুঝতে পারেন। (ছাই/আলিম)