আজকের অনুষ্ঠানে চীনের একজন রক গায়িকার সঙ্গে আপনাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেবো, তার নাম চিয়াং সিন। তিনি চীনে স্বাধীন রক ও ব্যালাড গান গাওয়ার সবচেয়ে আগের এক ব্যাচ গায়িকার। তার সংগীত জীবনে বেশি গান না প্রকাশ করলেও তার গানগুলো জনপ্রিয় এবং ক্লাসিক। বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা একসঙ্গে তার কিছু সুন্দর গান শুনবো। অনুষ্ঠানের শুরুতে শুনুন চিয়াং সিনের একটি সুন্দর গান ‘বসন্তকাল’।গান ১
চিয়াং সিন ১৯৭১ সালে চীনের শানতোং প্রদেশের রাজধানী ছিংতাও শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ৬ বছর বয়সে তিনি বাবা মায়ের সঙ্গে বেইজিংয়ে বসবাস করতে শুরু করেন। চিয়াং সিন ছোটবেলা থেকেই সংগীত খুব পছন্দ করতেন। স্কুলজীবনে তিনি অনেক অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। তবে বাবা মায়ের বিরোধিতার কারণে তার কোনো পেশাদার সংগীত প্রশিক্ষণ নেওয়া হয়নি, গান গাওয়া শুধু তার অবসর সময়ের একটি শখ। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে চিয়াং সিন কিছু গান গাওয়ার বন্ধু তৈরি করেছেন। সেসব বন্ধু পরে চীনে সবার আগে স্বাধীন রক ও ব্যালাড গায়ক হয়েছেন। চিয়াং সিন তাদের সঙ্গে গান গান ও বিভিন্ন জায়গায় পারফর্ম করেন, পরে তিনি পেশাদার শিল্পী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৯৫ সালে চিয়াং সিন এক সংগীত কোম্পানিতে যোগ দেন এবং তার সংগীতজীবন শুরু করেন।গান ২
১৯৯৬ সালে চিয়াং সিন তার প্রথম অ্যালবাম ‘ফুল কখনো শুকায় না’ প্রকাশ করেন। অ্যালবামে রক, জ্যাজ, পপ, ব্যালাড ইত্যাদি শৈলীর গান রয়েছে, এতে তখনকার চীনে সবচেয়ে ফ্যাশনেবল সংগীত উপাদান শোনা যায়। গান গাওয়ার পাশাপাশি তিনি নিজে অ্যালবাম তৈরির কাজে অংশগ্রহণ করেন। এই অ্যালবাম সে বছরের শ্রেষ্ঠ অ্যালবামের পুরস্কার জয় করে, চিয়াং সিনও শ্রেষ্ঠ নতুন গায়িকার পুরস্কার লাভ করেন। বন্ধুরা, এখন শুনুন অ্যালবামে তার একটি সুন্দর গান ‘আমি উড়তে চাই’।গান ৩
চিয়াং সিনের প্রথম অ্যালবাম চীনা সংগীত মহলে উচ্চ প্রশংসিত হয়। তখনকার অনেকেই একই সংগীত শৈলীর গায়ক গায়িকার বন্ধু হন। ১৯৯৯ সালে চিয়াং সিন ও সিয়াও নান, সেছিন গেরেল, চাও ইয়ু ইত্যাদি বন্ধুর সঙ্গে যৌথভাবে একটি অ্যালবাম ‘দুই পঞ্চমাংশ’ প্রকাশ করেন, এই অ্যালবাম চীনের অ্যাভান্ট-গার্ড সংগীতের প্রতিনিধি হিসেবে বিবেচিত হয়। বন্ধুরা, এখন শুনুন এই অ্যালবামে চিয়াং সিনের একটি সুন্দর গান ‘বড় হওয়া’।গান ৪
২০০১ সালে চিয়াং সিনের দ্বিতীয় ব্যক্তিগত অ্যালবাম ‘মে মাস’ মুক্তি পায়। এই অ্যালবাম থেকে চিয়াং সিন রক সংগীতের চেয়ে আরো বেশি ব্যালাড গান গান, আর সব গানের কথা তিনিই লিখেছেন। সেই সময়ে চীনের ব্যালাড গিটার বেশি ব্যবহৃত হয়, তবে চিয়াং সিনের ব্যালাড গানে প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ও স্ট্রিংস সংগীত মিশ্রণ করা হয়, যা দর্শকদেরকে বিশেষ অভিজ্ঞতা দিয়েছে। বন্ধুরা, এখন শুনুন অ্যালবামে চিয়াং সিনের একটি জনপ্রিয় গান ‘কখনও কখনও’গান ৫
২০০৩ সালে চিয়াং সিন তার তৃতীয় অ্যালবাম ‘বিশুদ্ধ’ প্রকাশ করেন। তিনি ও তখনকার চীনা সংগীত মহলের অনেক বিখ্যাত ও জনপ্রিয় প্রযোজক, গায়ক ও সুরকারের সঙ্গে যৌথভাবে অ্যালবামটি তৈরি করেছেন। বলা যায় অ্যালবামের গানগুলো সেই সময়ে চীনা রক ও ব্যালাড সংগীত সর্বোচ্চ মানের। এই অ্যালবামও বার্ষিক শ্রেষ্ঠ রক অ্যালবামের পুরস্কার জয় করেছে। বন্ধুরা, এখন শুনুন এই অ্যালবামে চিয়াং সিনের গাওয়া একটি জনপ্রিয় গান ‘সূর্যমুখী’।গান ৬
২০০৭ সালে চিয়াং সিন তার শেষ অ্যালবাম ‘আমি সাধারণ ফুল নয়’ প্রকাশ করেন। অ্যালবামে জীবন, সংগীত, প্রেম নিয়ে তার মনোভাব স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এই অ্যালবামের জন্য তাকে চীনা স্বাধীন রক ও ব্যালাড গায়িকার প্রতিনিধি মনে করা হয়। এরপর চিয়াং সিন আর কোনো অ্যালবাম প্রকাশ করেননি, বরং সংগীত প্রযোজক ও লেখক হিসেবে কাজ করতে থাকেন। বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে আমরা একসঙ্গে সেই অ্যালবামে চিয়াং সিনের একটি সুন্দর গান ‘আমি সাধারণ ফুল নয়’ শুনবো, আশা করি, আপনারা তার গানগুলো পছন্দ করবেন।গান ৭
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান তাহলে এখানেই শেষ করছি। আশা করি, আমাদের অনুষ্ঠানে প্রচারিত গানগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে। এখন বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন ও সুস্থ থাকুন। আবার কথা হবে। চাই চিয়ান।