সেপ্টেম্বর ২৬: যে-কোনো আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য ক্রীড়াবিদদের চিকিত্সাসেবা এবং অ্যান্টি-ডোপিং কার্যক্রম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাংচৌয়ে ১৯তম এশিয়ান গেমস পুরোদমে চলছে। প্রশ্ন হচ্ছে: এশিয়ান গেমসের অ্যান্টি-ডোপিং কার্যক্রম কেমন চলছে?
এশিয়ান অলিম্পিক কাউন্সিলের মেডিকেল কমিটি এবং অ্যান্টি-ডোপিং কমিটির চেয়ারম্যান বুসাইদি হাংচৌতে প্রদত্ত চিকিত্সাসেবা নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট। তিনি বলেন,
“হাংচৌয়ের সকল স্থাপনা ও সরঞ্জাম সব ঠিকঠাক হয়েছে এবং সবকিছু চমত্কার হয়েছে। সাম্প্রতিক কয়েক দিনে আমি কিছু চিকিত্সা সংস্থায় গিয়েছি এবং আমার সহকর্মীরা বেশ কয়েকটি ভেন্যুর চিকিত্সাকেন্দ্রেও গিয়েছে। সবাই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সব পারফেক্ট হয়েছে।”
এশিয়ান অলিম্পিক কাউন্সিলের মেডিকেল কমিটি ও অ্যান্টি-ডোপিং কমিটির উপদেষ্টা এবং অনারারি চেয়ারম্যান জেগত্সান বলেন, বড় আকারের গেমসের জন্য চিকিত্সা পরিষেবা গুরুত্বপূর্ণ। হাংচৌ এ ক্ষেত্রে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন, এটি একটি “স্বাস্থ্যকর ও উদ্বেগমুক্ত” এশিয়ান গেমস হবে। ডোপিংবিরোধী কাজে চীনের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এশিয়ান গেমসের জন্য শক্তিশালী সমর্থন প্রদান করেছে।
জেগত্সান বলেন,
“অ্যান্টি-ডোপিং কাজে প্রথমে স্থানীয় বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট কর্মীদের সমর্থন জরুরি। এই ক্ষেত্রে চীন অ্যান্টি-ডোপিং সেন্টারের শক্তিশালী সক্ষমতা রয়েছে। তারা আমাদের অনেক সহায়তা প্রদান করেছে এবং আন্তর্জাতিক পরিদর্শন সংস্থার সাথে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা চালিয়েছে।”
জেগত্সান বলেন, ইতিমধ্যেই ১৫০ থেকে ২০০ জন ক্রীড়াবিদ এশিয়ান গেমসে ডোপিং পরীক্ষা গ্রহণ করেছেন এবং তাদের নমুনা সংগ্রহের পরপরই পাঠানো হয় বেইজিং-এর ওয়ার্ল্ড অ্যান্টি-ডোপিং এজেন্সি বা ডাবলিউএডিএয়ের পরীক্ষাগারে। সারা বিশ্বে এই ধরনের পরীক্ষাগার রয়েছে মাত্র ৩০টির মতো। বর্তমানে, এখনও কোনো ক্রীড়াবিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।
তা ছাড়া, এশিয়ান গেমস চলাকালে ২৪ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর চীন অ্যান্টি-ডোপিং সেন্টার এবং ওয়ার্ল্ড অ্যান্টি-ডোপিং এজেন্সির এশিয়া ও ওশেনিয়া আঞ্চলিক অফিসের উদ্যোগে আয়োজিত তৃতীয় আন্তর্জাতিক অ্যান্টি-ডোপিং ওয়ার্ক প্রফেশনাল সেমিনারও হাংচৌতে অনুষ্ঠিত হয়। এই সেমিনারের থিম, জাতীয় ডোপিংবিরোধী সংস্থাগুলোর পরিচালনার সক্ষমতা তৈরি করা। স্টেট স্পোর্টস জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ডেপুটি ডিরেক্টর লি ইনছুয়ান সেমিনারে বলেন, চীন সরকার সবসময়ই ডোপিংবিরোধী কাজকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে আসছে। চীন ডোপিং বিষয়ে ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতি মেনে চলে।
তিনি বলেন, “চীন তার ফৌজদারি আইনে ডোপিং-কে যুক্ত করেছে। ২০২২ সালে প্রকাশিত “গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ক্রীড়া আইনে” একটি বিশেষ অ্যান্টি-ডোপিং অধ্যায় রাখা হয়। সরকার ডোপিংয়ের অবৈধ উত্পাদন, বিক্রয়, আমদানি ও রপ্তানি কঠোরভাবে দমন করে। ডোপিং-বিষয়ক আন্তর্জাতিক বিনিময় ও সহযোগিতায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে, আমরা একটি প্রধান দেশ হিসেবে নিজেদের দায়িত্ব ও আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা আন্তরিকভাবে পালন করে থাকি।”
লি ইনছুয়ান আরও বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের অ্যান্টি-ডোপিং সেন্টার ডোপিংবিরোধী ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে, ডোপিং নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা জোরদার করেছে, এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধির মাধ্যমে ইতিবাচক ফলাফল ও অগ্রগতি অর্জন করেছে। (লিলি/আলিম)