বন্ধুরা, আজকের যে ছেং ইয়ু আমরা শিখাবো তা হল ‘盲人摸象’, এর অর্থ ‘অন্ধ হাতি স্পর্শ করে’। শব্দটির গল্প জানানোর আগে প্রথমে এর প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। পঞ্চম শতাব্দীর দিকে চীনে ঘন ঘন যুদ্ধ ঘটেছিল, চীন ও আশেপাশের জাতি ও দেশটির সঙ্গে বেশি আদান-প্রদান করত। এমন প্রেক্ষাপটে বৌদ্ধ ধর্ম চীনে জনপ্রিয় হয়, অনেক বৌদ্ধধর্মের বইও অনুবাদ করে চীনে প্রচার করা হয়। এই শব্দ একটি বৌদ্ধ বইয়ের একটি গল্প থেকে এসেছে।
সেই গল্পে বলা হয়, একদিন কয়েকজন অন্ধ একসাথে রাজপ্রাসাদে এসে রাজাকে দেখতে চায়। রাজা তাদের দেখেন এবং জিজ্ঞেস করেন তারা কি চায়? অন্ধরা বলে, রাজার বুদ্ধিমান প্রশাসনের জন্য তারা ভালো জীবনযাপন করছে। তবে, শুধু একটি ইচ্ছা আছে, তারা শুনেছে হাতি খুব বড় এক ধরনের প্রাণী, তবে কখনও দেখেনি, তাই হাতি স্পর্শ করতে চায়, যাতে বুঝতে পারে- হাতি কেমন প্রাণী! রাজা রাজি হন এবং একটি হাতি নিয়ে আসতে বলেন। হাতি আসার পর অন্ধরা তার কাছে গিয়ে হাত দিয়ে হাতি স্পর্শ করতে শুরু করে। তবে হাতি এত বড় যে তারা শুধু হাতির ছোট অংশ স্পর্শ করতে পারে। স্পর্শ করার পর রাজা তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, হাতি কেমন? অন্ধরা বলে, তারা বুঝতে পেয়েছে। রাজা বলেন, তাহলে বলো...। যে অন্ধ হাতির পা ধরেছিল সে বলল, হাতি একটি বড়, মোটা লাঠির মত। অন্যজন অন্ধ হাতির শুঁড় স্পর্শ করেছিল, সে বলল, হাতি মোটা অজগর সাপের মতো। অন্যজন হাতির কান ধরেছিল। সে বলল, হাতি বড় পাখার মতো! হাতির লেজ স্পর্শ করা অন্ধ বলল, তোমাদের কারও কথাই ঠিক নয়। হাতি লম্বা ও পাতলা, ঠিক যেন একটি দড়ি! আর যে অন্ধ হাতির শরীর স্পর্শ করেছিল সে বলল, হাতি আসলে দেয়ালের মতো! সবাই মনে করছে, অন্যের কথা ভুল, নিজের কথাই ঠিক। তাদের কথা শুনে রাজা বলেন, তোমরা প্রত্যেকেই শুধু হাতির একটি অংশ স্পর্শ করেছ, আর মনে করছ যে সেটাই হাতি, তা কিভাবে ঠিক হতে পারে?
এই গল্প থেকে এসেছে চীনের ছেং ইয়ু ‘盲人摸象’, এর আক্ষরিক অর্থ ‘অন্ধ হাতি স্পর্শ করে’। পরে লোকজন এই শব্দ দিয়ে ‘যে বিষয় বা জিনিস সম্পূর্ণ বোঝা যায় না, তার ছোট অংশ ধরে অনুমান করার’ আচরণ বর্ণনা করা হয়।
মধ্যশরৎ উত্সব
২৯ সেপ্টেম্বর হল চীনের ঐতিহ্যবাহী মধ্যশরৎ উত্সব বা ‘中秋节’। চীনা চান্দ্রপঞ্জিকার অষ্টম মাসের ১৫ তারিখ উত্সবটি উদযাপন করা হয়। এদিন শরত্কালের মাঝামাঝি সময় হওয়ায় চীনা ভাষায় বলা হয় ‘中’, শরতের চীনা শব্দ ‘秋’, আর ‘节’ মানে ‘উত্সব’, তাই চীনা ভাষায় উত্সবকে ‘中秋节’ বলা হয়। মধ্যশরৎ উত্সব চীনাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উত্সব। এর অনেক রীতিনীতিও রয়েছে। বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আপনাদের মধ্যশরৎ উত্সব সম্পর্কিত কিছু শব্দ ও শুভেচ্ছামূলক কথা শিখাবো।
মধ্যশরৎ উত্সবের অন্য একটি নাম হল ‘পুনর্মিলনের উত্সব’। বাইরে থাকা মানুষ এই উত্সবে জন্মস্থানে ফিরে পরিবারের সঙ্গে মিলিত হয়। চীনা ভাষায় ‘পুনর্মিলন’কে বলা হয় ‘团聚’ (tuán jù)।
পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলন, ‘和家人团聚(hé jiā rén tuán jù)’, বন্ধুর সঙ্গে পুনর্মিলন, ‘和朋友团聚(hé péng yǒu tuán jù)’
তা ছাড়া চোং ছিউ চিয়ে চাঁদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। চান্দ্রপঞ্জিকার প্রতি মাসের ১৫ তারিখ পূর্ণিমা হয়, মধ্যশরৎ উত্সবের সময়ও পূর্ণিমা চলে। চীনা সংস্কৃতিতে পূর্ণিমা পুনর্মিলনের প্রতীক। যারা দূরে থাকে বাড়িতে ফিরতে পারেনা, তারাও এ রাতে আকাশের পূর্ণচন্দ্রের দিকে তাকিয়ে নিজের জন্মভূমির কথা স্মরণ করে।
月亮 yuè liàng চাঁদ
赏月 shǎng yuè চাঁদ উপভোগ করা
今晚适合赏月 jīn wǎn shì hé shǎng yuè আজ রাতে চাঁদ উপভোগ করার ভালো সময়
赏月是中秋节的传统习俗 shǎng yuè shì zhōng qīu jié de chuǎn tǒng xí sú চাঁদ উপভোগ করা মধ্যশরৎ উত্সবের ঐতিহ্যবাহী রীতি
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি হল মুনকেক খাওয়া। এটি ময়দা দিয়ে তৈরি গোলাকার কেক, ভেতরে সিমের পেস্ট, লবণাক্ত ডিমের কুসুম ও বাদামসহ বিভিন্ন উপাদান দেওয়া হয়।
月饼 yuè bǐng মুনকেক
吃月饼 chī yuè bǐng মুনকেক খাওয়া
মুনকেক সুস্বাদু হওয়ার পাশাপাশি সৌভাগ্য ও শুভকামনা বহন করে বলে বিশ্বাস করা যায়। তাই মধ্যশরৎ উত্সবের সময়ে লোকজন অন্যকে জিজ্ঞেস করে ‘তুমি মুনকেক খেয়েছো?’। তাকে চীনা ভাষায় বলা হয় ‘你吃月饼了吗?’ nǐ chī yuè bǐng le ma? তুমি মুনকেক খেয়েছো?
মধ্যশরৎ উত্সবের শুভেচ্ছামূলক কথা সাধারণত পুনর্মিলন, শান্তি, সুখী ইত্যাদি অর্থের সঙ্গে জড়িত। এবার কিছু মধ্যশরৎ উত্সবের সময় বেশি ব্যবহৃত শুভেচ্ছামূলক শব্দ জানাচ্ছি:
阖家团圆 hé jiā tuán yuán পরিবারের পুনর্মিলন হোক
花好月圆 huā hǎo yuè yuán আক্ষরিক অর্থ ‘ফুল সুন্দরভাবে ফোটে ও পূর্ণিমা’, মানে সুন্দর ও সম্পূর্ণ জীবন
幸福美满 xìng fú měi mǎn সুখী ও সব আশা পূরণ হোক
সবাইকে মধ্যশরৎ উত্সবের শুভেচ্ছা জানাই,中秋节快乐!