১৯তম এশিয়ান গেমস আনুষ্ঠানিকভাবে ২৩ তারিখ সন্ধ্যায় একটি ছোট অথচ অত্যাশ্চর্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হয়। এশিয়ার ৪৫টি দেশ ও অঞ্চলের ১২ হাজারেরও বেশি ক্রীড়াবিদ এই গেমসে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের হাংচৌ এশিয়ান গেমস ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এশিয়ান গেমস। এবার সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতা ইভেন্ট থাকছে। এই ক্রীড়া ইভেন্টটি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং বিশ্বকে এশিয়ান জনগণের মধ্যে ঐক্য ও বন্ধুত্বের চিত্র দেখাচ্ছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এক খবরে বলেছে, ২৩ তারিখ সন্ধ্যায় এশিয়ান গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ইভেন্টের সমস্ত প্রধান উপাদানগুলো ফুটে ওঠে। ৮০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন স্টেডিয়ামটি পরিপূর্ণ ছিল। প্রতিবেদন অনুসারে, এই উচ্চ-প্রযুক্তিগত ক্রীড়া সভাটিকে "সবুজ গেমস" হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ঐতিহ্যবাহী আতশবাজির প্রদর্শনী ইলেকট্রনিক আতশবাজি দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ত্রি-মাত্রিক অ্যানিমেশন এবং ভার্চুয়াল মশাল-বাহক এবং অন্যান্য উচ্চ-প্রযুক্তির ব্যবহার ছিল নজরকাড়া। অনুষ্ঠানে "ডিজিটাল মানুষ" মশাল জ্বালিয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, হাংচৌ এশিয়ান গেমসের মাধ্যমে, চীন আশা করে যে, বিশ্ব "নতুন যুগে চীনের বিশ্বস্ততা, ভালোবাসার যোগ্যতা, ও সম্মানের যোগ্যতা দেখতে পাবে।"
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস আরও জানিয়েছে, এবারের হাংচৌ এশিয়ান গেমস অলিম্পিক গেমসের চেয়েও বড়, কারণ এতে অনেক এশিয়ান বৈশিষ্ট্যযুক্ত প্রতিযোগিতা ইভেন্ট রয়েছে, যা অলিম্পিক গেমসে দেখা যায় না, যেমন: ক্রিকেট, ড্রাগন বোট, মার্শাল আর্ট, সেপাক টাকরা এবং কাবাডি। এবারের এশিয়ান গেমসের ৪৮১টি ইভেন্টের মধ্যে অনেকগুলো ছোট দেশের ক্রীড়াবিদদের জন্য পদক জয়ের সুযোগ এনে দিয়েছে, যা সাধারণত অলিম্পিকে সম্ভব হয় না।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, প্রতিটি দেশ ও অঞ্চলের ক্রীড়াবিদরা স্টেডিয়ামে প্রবেশ করার সময় দর্শকদের কাছ থেকে ভালোবাসা পেয়েছে, উত্সাহ পেয়েছে। প্রতিবেদনে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, হাংচৌ এশিয়ান গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী আন্তর্জাতিক বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদও ছিলেন। আফগানিস্তানও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে, যার মধ্যে নারী ক্রীড়াবিদরাও ছিলেন।
হাংচৌ এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণকারী অনেক আন্তর্জাতিক বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকরা হাংচৌ শহরের প্রদর্শিত "ভবিষ্যত সম্ভাবনা" দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। "কোরিয়ান নিউজ" ২৪ তারিখে বিশেষ সংবাদদাতার লেখা একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়েছে, এই এশিয়ান গেমসের আয়োজক শহর হাংচৌ "ভবিষ্যতের একটি শহরের মতো"। প্রতিবেদক বলেন, হাংচৌতে খাবার, বাসস্থান বা পরিবহন নিয়ে কোনো অসুবিধায় পড়তে হয়নি। এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে নগদ অর্থ প্রদান করতে হবে। এ ছাড়া, বৈদ্যুতিক যানবাহন, মোবাইল পেমেন্ট এবং ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তিগুলো শহরটিকে বিশ্বের দ্রুততম ডিজিটাল শহরে পরিণত করেছে।
"রাশিয়ান গেজেট" ২৪ তারিখে বলেছে যে, আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সভাপতি থমাস বাখ হাংচৌতে এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, হাংচৌ এশিয়ান গেমস অনেক দিক দিয়ে একটি মডেল হয়ে থাকবে। প্রথমত, এটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এশিয়ান গেমস এবং দ্বিতীয়ত, গেমসের শূন্য-বর্জ্যনীতি। (ইয়াং/আলিম/ছাই)