সেপ্টেম্বর ২৫: ২০২৩ সাল হচ্ছে যৌথভাবে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ বাস্তবায়ন শুরুর ১০তম বার্ষিকী। উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাথে যৌথভাবে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের আওতায় একের পর এক বিভিন্ন চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠান কাজ করে আসছে। এ সব প্রতিষ্ঠানের নেওয়া ‘ছোট তবে সুন্দর’ বিভিন্ন প্রকল্প স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে আসছে এবং স্বাভাবিকভাবেই দারুণভাবে জনপ্রিয় হয়েছে।
সাও হোসে দোস ক্যাম্পোস শহর হলো ব্রাজিলের সাও পাওলো রাজ্যের একটি ‘অ্যারোট্রোপলিস’ বা ‘এভিয়েশন সিটি’। এমব্রায়ারর এসএ এবং ব্রাজিলিয়ান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্চসহ অনেক প্রতিষ্ঠান এখানে অবস্থিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই ‘অ্যারোট্রোপলিস’-এর পরিবহনব্যবস্থাকে সবুজে রূপান্তরের প্রচেষ্টা চলেছে। এ কাজেও চীনা কোম্পানিগুলো সাহায্য করেছে। চীনা কোম্পানি এবং ব্রাজিলের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম যৌথভাবে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের আওতায়, স্থানীয়ভাবে সবুজ পরিবহনব্যবস্থা অর্জনে সহায়তা করে আসছে।
২০২১ সালের শেষ থেকে সাও হোসে দোস ক্যাম্পোস শহরে প্রথম দ্রুতগতির বৈদ্যুতিক বাস চালু হয়, যার নাম দেওয়া হয় ‘গ্রীন লাইন’। পুরো লাইনটিতে মোট ১৩টি স্টপেজ আছে। লাইনের মোট দৈর্ঘ্য ১৪.৫ কিলোমিটার। ইলেকট্রিক বাসের চালক রদ্রিগো সাংবাদিকদের জানান, লাইনটি চালু হওয়ার পর থেকে যাত্রীরা ‘গ্রিন লাইন’ ইলেকট্রিক বাসের প্রশংসা করে আসছেন।
তিনি বলেন,
‘হ্যাঁ, যাত্রীদের প্রশংসা অব্যাহত আছে। এর স্থায়িত্ব ও দূষণমুক্ত প্রকৃতিসহ অনেক বৈশিষ্ট্য অনেক প্রশংসনীয়।’
‘গ্রিন লাইন’-এ চালু আছে ১২টি বৈদ্যুতিক বাস, যেগুলো চীনের বিওয়াইডি কোম্পানি উত্পাদন করেছে। প্রতিটি বাস সর্বোচ্চ ১৬৮ জন যাত্রী বহন করতে পারে। গাড়ির ব্যাটারি একবার পূর্ণাঙ্গ চার্জ করতে ৩ ঘন্টা সময় লাগে। সম্পূর্ণ চার্জ করা হলে এটি একটানা ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারে। বাসে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বায়ু জীবাণুমুক্ত করার জন্য ইউভি-সি সিস্টেমও স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া, বাসে প্রতিবন্ধীদের ওঠা-নামার সুবিধার্থে বাধা-মুক্ত সুবিধা আছে। বাসের প্রতিটি আসনে একটি করে ইউএসবি চার্জিং পোর্টও রয়েছে।
ভালদির নামের একজন যাত্রী ‘সবুজ লাইন’ বাসের একজন অনুরাগী। তিনি আবেগের সঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন,
‘খুবই চমত্কার। যারা সাধারণ বাস ও বৈদ্যুতিক বাসে চড়েছেন, তারা সবাই বুঝতে পারেন; এ এক ভিন্ন অনুভূতি।’
সংশ্লিষ্ট তথ্য অনুযায়ী, সাধারণ বাসের তুলনায় একটি ‘গ্রীন লাইন’ বৈদ্যুতিক বাস পরিচালনা করলে প্রতিবছর কমপক্ষে ১৮৪ টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন কমানো সম্ভব, যা ১৩১১টি গাছ লাগানোর সমতুল্য। ব্রাজিলের অনেক লোক আশা করছেন যে, এই ধরনের সবুজ, সুবিধাজনক ও দ্রুতগতির ইলেকট্রিক বাস অন্যান্য শহরেও দেখা যাবে।
জানা গেছে, সাও পাওলোসহ ব্রাজিলের আরও অনেক শহরেও গ্রিন বাস চালুর কাজ শুরু হয়েছে। ‘ইন্টেলিজেন্ট মেড ইন চায়না’ বৈদ্যুতিক বাস ইতোমধ্যেই ব্রাজিলের ১০টিরও বেশি শহরে চলাচল করছে। অদূর ভবিষ্যতে, ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের আওতায়, ব্রাজিলের রাস্তায় চীনের নতুন জ্বালানিচালিত যানবাহনের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। (লিলি/আলিম)