বিদেশ ফেরত উদ্যোক্তা ছুই তি ফান
2023-09-21 16:29:31

প্রিয় বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে আমরা বিদেশ ফেরত উদ্যোক্তা ছুই তি ফান সম্পর্কে জানবো।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অধিকতর সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী তাদের যৌবন ও ঘামের অবদানের কারণে চীনে ফিরে আসা বেছে নিয়েছেন। তারা মাতৃভূমির বিশাল ভূমিতে তাদের স্বপ্নের বীজ বপন করেছেন। তাদের গল্পে আছে পরিবার, দেশ, বিশাল স্বপ্ন ও নিরলস পরিশ্রম। মাতৃভূমির সংস্কার ও উন্নয়নের মহান প্রচেষ্টায় তারা রচনা করেছেন তারুণ্যের সংগ্রামের এক একটি মর্মস্পর্শী গল্প। ছুই তি ফান তাদের মধ্যে অন্যতম।

ছুই তি ফান কুয়াংতোং প্রদেশের শেনচেন শহর থেকে এসেছেন। শেনচেন এমন একটি শহর যেখানে চীনের অন্য স্থানের আগে বেসবল শুরু হয়েছিল। বেসবল তার অনন্য কিশোর বয়সের প্রতিনিধিত্ব করে এবং এটি তার বর্তমান উদ্যোক্তা-স্বপ্নও। তিনি বলেন,

 

“বেসবল হলো সেই ব্যাপার, যার সঙ্গে আমি শৈশব থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছি। আমার চরিত্রটি বেসবল দ্বারা তৈরি হয়ে থাকতে পারে। আমি শৈশব থেকেই দলীয়ভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এবং আমার সতীর্থদের স্কোর করতে সাহায্য করার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে শিখেছি। একই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সবার সাথে কাজ করতে শিখেছি।”

প্রাথমিক স্কুলের প্রথম শ্রেণীতে থাকতে ছুই তি ফান বেসবল শিখতে শুরু করেন এবং ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় শেনচেন শহরের প্রতিনিধিত্ব করে জাতীয় যুব বেসবল চ্যাম্পিয়নশিপ জেতেন। মাধ্যমিক স্কুলে থাকতে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে অনুষ্ঠিত বিশ্ব যুব বেসবল চ্যাম্পিয়নশিপে চীনের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি বলেন, প্রতিটি পদক জিততেই ঘাম ঝরাতে হয়। জয়ের জন্য তার সমবয়সীদের মজার শীত ও গ্রীষ্মের ছুটি বিসর্জন দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ ঘণ্টার তীব্র প্রশিক্ষণ নিতে হয়। প্রশিক্ষণ তাকে শৈশব থেকে কষ্ট দিয়েছে, কিন্তু বেসবল তার জীবনে যে পরিবর্তন এনেছে, তার জন্য তিনি কৃতজ্ঞ।

ষোল বছর বয়সে ছুই তি ফান যুক্তরাষ্ট্রে যান পড়াশোনা করতে। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্টিন শাখা স্কুলে অর্থ ও গণিত বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। স্নাতক হওয়ার পর তিনি বেশ কয়েকটি সুপরিচিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। ২০১৬ সালে তিনি চীনে ফিরে আসেন। তিনি আবিষ্কার করেন যে, শেনচেনের বেসবল শিল্পে একটি বড় উন্নয়নের সুযোগ এসেছে। ক্রস-স্ট্রেট স্টুডেন্ট বেসবল লিগের ফাইনালের জন্য প্রস্তুতি নিতে শেনচেন ১৫ কোটি ইউয়ান ব্যয় করে একটি ‘বেসবল শহর’ তৈরি এবং একটি উচ্চ-মানের বেসবল স্টেডিয়াম নির্মাণ করে। তখন ছুই তি ফান মনে করেন, তার কাজ করার সুযোগ এসেছে। তাই তিনি দৃঢ়তার সাথে তার উচ্চ বেতনের চাকরি ছেড়ে দিয়ে বেসবলের বিশেষ ক্ষেত্রে নিজেকে নিয়োজিত করেন।

তিনি বলেন,

 

“২০১৭ সালে আমি শিল্প সৃষ্টি করতে শুরু করি। ২০১৭, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে আমার কোম্পানি লোকসান দেয়। আমাদের কোম্পানি ব্রেক-ইভেন পয়েন্টে আসে ২০২০ সালের জুন মাসে। এতদিন কোনও লাভ হয়নি। আসলে তখন চাপ ছিল অনেক বেশি। পরিবারের সদস্যরা আমাকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করতেন। বন্ধুরাও ভাবতেন যে, আমাদের উন্নয়ন হচ্ছে না কেন?”

যুক্তরাষ্ট্রে অর্জিত আর্থিক জ্ঞান, গণিতবিদ্যার শিক্ষা এবং আর্থিক শিল্পে কয়েক বছরের অভিজ্ঞতার পর ছুই তি ফান একগুঁয়েভাবে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের উপর বিশ্বাস করেছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ঝুঁকিও নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি বলেন,

 “বেসবল নিয়ে শিল্প সৃষ্টি করা আমার স্বপ্ন হলেও একটি ক্লাব বা কোম্পানি পরিচালনার জন্য মুনাফা অর্জন করতেই হয়।”

নিজের ক্লাবটির বিকাশ বজায় রাখার সঙ্গে সঙ্গে ছুই তি ফান উচ্চ আদর্শ ধারণ করে চলেছেন। তিনি মনে করেন না, বেসবল স্পোর্টস ক্লাবের মধ্যে সীমাবদ্ধ; এটি একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা।

তিনি বলেন, “আমি শৈশব থেকেই বিভিন্ন খেলাধুলা থেকে উপকৃত হয়েছি। তাই আমি এই স্বাস্থ্যকর জীবনধারাকে আরও বেশি লোকের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। আমার আদর্শ উপলব্ধি করার জন্য বেসবল একটি ভাল সূচনাবিন্দু বলে আমি মনে করি।”

লিলি/রহমান