‘বৃষ্টিতে ঘুরে বেড়াই’
2023-09-14 10:00:04

 

আজকের অনুষ্ঠানে চীনের তাইওয়ানের একজন বিখ্যাত গায়িকার সঙ্গে আপনাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেবো, তার নাম ও ইয়াং ফেই ফেই। তিনি তার শক্তিশালী ও আকর্ষণীয় কণ্ঠের জন্য পরিচিত। তিনি চীনা সংগীত মহলের অনেক নতুন প্রবণতার নেতৃত্ব দিয়েছেন। গোটা জীবনে তিনি অনেক ক্লাসিক ও জনপ্রিয় গান গেয়েছেন। চীনা গায়িকা হলেও তিনি জাপানে বেশ জনপ্রিয়। বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা একসঙ্গে তার কিছু সুন্দর গান শুনবো। অনুষ্ঠানের শুরুতে শুনুন ও ইয়াং ফেই ফেই’র একটি সুন্দর গান ‘প্রস্থান ও প্রবেশ’।গান ১

 

ও ইয়াং ফেই ফেই ১৯৪৮ সালে তাইওয়ানের তাইপেই শহরের চুয়ান গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চ বিদ্যালয়ের শেষে তিনি শিশুদের নাটকে অভিনয় করা শুরু করেন। তবে তিনি অভিনয়ে আগ্রহী নন, শুধু গান গাইতে ভালোবাসেন। কিছুদিন পরেই তিনি সেই চাকরি ছেড়ে দেন এবং হোটেল ও বারে গান গান। ১৯৭০ সালে জাপানের জনৈক সংগীত প্রযোজক ও ইয়াং ফেই ফেই’র পারফরম্যান্স দেখে তার প্রতিভার ও মনোহরণে বিস্মিত হন। সে তাকে জাপানে গান গাওয়ার আমন্ত্রণ জানায়, আর ও ইয়াং ফেই ফেই রাজি হন। জাপানিজ না-বোঝা, কোনো পেশাদার সংগীত প্রশিক্ষণ না-নেওয়ার অবস্থায় ও ইয়াং ফেই ফেই জাপানে গিয়ে তার শিল্পী জীবন শুরু করেন। ১৯৭১ সালে তিনি তার প্রথম গান ‘বৃষ্টিতে ঘুরে বেড়াই’ প্রকাশ করেন। গানটি অপ্রত্যাশিতভাবে অল্প সময়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সেই গানের ১২.৫ লাখেরও বেশি কপি বিক্রি হয়, তিনিও সেই বছরের শ্রেষ্ঠ নতুন গায়িকার পুরস্কার পান। বন্ধুরা, এখন শুনুন ও ইয়াং ফেই ফেই’র সেই জনপ্রিয় গান  ‘বৃষ্টিতে ঘুরে বেড়াই’।গান ২

 

ও ইয়াং ফেই ফেই সেই সময়ে গায়িকাদের চেয়ে একদম আলাদা। তখনকার গায়িকাদের সাধারণত মিষ্টি কণ্ঠ আছে, কোমল, ধীর ও দুঃখের গান গাইতেন। তবে ও ইয়াং ফেই ফেই’র কণ্ঠ গভীর ও শক্তিশালী, তার গান তার মত শক্তিশালী, ইতিবাচক, প্রাণবন্ত। পারফরমেন্সের সময় অন্যান্য গায়িকা সাধারণত স্থির দাঁড়িয়ে বা বসে গান গায়। তবে ও ইয়াং ফেই ফেই শুধু গানই নয়, সঙ্গে নাচও করেন। বিশেষ চরিত্র, কণ্ঠ ও পারফরমেন্সের স্টাইলের জন্য ও ইয়াং ফেই ফেই সেই সময় দর্শকদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। আর তার বিশেষ স্টাইল দ্রুত দর্শকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়। বন্ধুরা, এখন শুনুন ও ইয়াং ফেই ফেই’র একটি সুন্দর গান ‘ডিস্কো কুইন’।গান ৩

 

জীবনে প্রথম সংগীত পুরস্কার পাওয়ার পর ও ইয়াং ফেই ফেই তাইওয়ানে ফিরে যান। তবে জাপানে এত জনপ্রিয় হওয়ায় কেউ তাকে যেতে দিতে চায় না। ১৯৭২ সালে তিনি জাপানে তার ব্যক্তিগত কনসার্ট আয়োজন করেন এবং সেখানে খুব প্রভাবশালী সংগীত অনুষ্ঠান ‘Red and White Singing Contest’ অংশগ্রহণকারী প্রথম বিদেশি গায়ক হন। ১৯৭৩ সালে তিনি গান ‘বৃষ্টিতে বিমানবন্দর’ প্রকাশ করেন। গানটি জাপানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংগীত অ্যাওয়ার্ড ‘জাপানিজ ক্যাবল অ্যাওয়ার্ড’ জয় করে। পরে তিনি আরো কয়েকবার এই অ্যাওয়ার্ডটি অর্জন করেন। ও ইয়াং ফেই ফেই জাপানে এত জনপ্রিয় হন যে, জাপানি সংগীত মহলে ‘ফেই ফেই প্রবণতা’ গড়ে ওঠে। বন্ধুরা, এখন শুনুন তার খুব জনপ্রিয় একটি জাপানিজ গান ‘স্মরণ করা’।গান ৪

 

জাপানে জনপ্রিয় হওয়ার পরও ১৯৭৬ সালে ও ইয়াং ফেই ফেই তাইওয়ানে ফিরে যান। বিদেশ থেকে আসা ও ইয়াং ফেই ফেই তাইওয়ান সংগীত মহলে অনেক নতুন শক্তি যুগিয়েছেন। তিনি প্রথমবারের মত ডিস্কো, ডান্স, ইলেকট্রনিকসহ নতুন মিউজিক শৈলী তাইওয়ানে পরিচয়ে করিয়ে দেন। বন্ধুরা, এবার আমরা শুনবো ও ইয়াং ফেই ফেই’র গাওয়া একটি জনপ্রিয় ডান্স মিউজিক গান ‘উত্সাহিত মরুভূমি’। গানটি চীনা ডান্স মিউজিকের প্রতিনিধিত্বকারী একটি গান। অনেক বছর পার হলেও গানটি বার বার গাওয়া হয়। বন্ধুরা, এখন গানটি শুনি।গান ৫

 

গত শতাব্দীর ৭০ থেকে ৯০ দশকে ও ইয়াং ফেই ফেই জাপান ও তাইওয়ানের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী একজন গায়িকা। তার অনেক গানের চীনা ও জাপানি ভাষার সংস্করণ আছে, যাতে দু’দেশের দর্শক তার গান উপভোগ করতে পারে। বন্ধুরা, এবার আমরা শুনবো ও ইয়াং ফেই ফেইয়ের ১৯৮২ সালে প্রকাশিত একটি জনপ্রিয় গান ‘প্রেম শেষ’। গানটি দু’দেশের অনেক পুরস্কার জয় করেছে। এখন পর্যন্ত জাপানের ‘Red and White Singing Contest’-এ তার এই গানটি গাওয়া হয়। বন্ধুরা, এখন গানটি শুনি।গান ৬

 

বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে আমরা একসঙ্গে ও ইয়াং ফেই ফেই’র আরেকটি জনপ্রিয় গান ‘কৃতজ্ঞ মন’ শুনবো। গানে সরল ও আন্তরিক ভাষায় প্রিয় মানুষ, জীবন ও ভাগ্যের প্রতি কৃতজ্ঞ মন প্রকাশ করা হয়। যা অন্যতম ক্লাসিক চীনা গান হিসেবে বিবেচিত হয়। বন্ধুরা এখন গানটি শুনি। আশা করি, আপনারা তার গানগুলো পছন্দ করবেন।গান ৭

বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান তাহলে এখানেই শেষ করছি। আশা করি, আমাদের অনুষ্ঠানে প্রচারিত গানগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে।এখন বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন ও সুস্থ থাকুন। আবার কথা হবে। চাই চিয়ান।