সেপ্টেম্বর ৫: ২০২৩ চীন আন্তর্জাতিক পরিষেবা বাণিজ্যমেলা বা সিফটিস (CIFTIS) বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সিফটিসে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। যারা এবার মেলায় অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের মতে সিফটিস বিশ্বে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে যেখানে সবাই পরিষেবা বাণিজ্যের সুবিধা ভাগাভাগি করে। এ মেলা পরিষেবা বাণিজ্যের উন্নয়ন এগিয়ে নেওয়া, বিশ্বের মতৈক্য সংযুক্ত করা এবং আন্তর্জাতিক বিনিময় জোরদার করার গুরুত্বপূর্ণ একটি প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে।
এবার সিফটিস আরও আন্তর্জাতিক মেলা হয়ে উঠেছে। বিশ্বের ৫৯টি দেশ ও ২৪টি আন্তর্জাতিক সংস্থা এ মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। যা গত মেলার তুলনায় ১২টি বেশি। এর মধ্যে জর্জিয়া, বেনিন, ইউনিসেফসহ ৮টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রথমবারের মতো সরকার ও সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে সিফটিসে অংশগ্রহণ করেছে।
বিভিন্ন দেশের প্রদর্শনীতে মূলত ডিজিটাল অর্থনীতি, সাংস্কৃতিক পরিষেবা, পর্যটন পরিষেবা ও চিকিত্সা পরিষেবাসহ বৈশিষ্ট্যময় ও সর্বশেষ উন্নয়নের ফলাফল দেখা যায়। যা অনেক পর্যটক ও কোম্পানিকে আকর্ষণ করেছে। এর মধ্যে ইতালির প্রদর্শনী এলাকায় তিনটি স্পেস রয়েছে। তা হল- প্রদর্শনী, সম্মেলন ও অভ্যর্থনা এলাকা। ইতালিতে চীনা বণিক সমিতির মহাসচিব ই ল্য সি দ্বিতীয়বারের মতো সিফটিসে এসেছেন। তাঁর মতে চলতি বছরের মেলা আরও আন্তর্জাতিক মেলা হয়েছে এবং তিনি আশা করেন ইতালির প্রদর্শনী এলাকা আরও বেশি চীনা কোম্পানি ও পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পারবে। যা দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার জন্য আরও সম্ভাবনা বনে আনবে।
তিনি বলেছেন, আমি মনে করি এবার আরও বেশি মানুষ মেলায় অংশগ্রহণ করছে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণকারীর সংখ্যাও বেড়েছে। বিভিন্ন দেশ নিজের পরিষেবা ও পণ্য নিয়ে এসেছে। ইতালিও এর ব্যতিক্রম নয়। গত বছর আমিও এসেছিলাম। যদিও এবার মেলার হোস্ট দেশ যুক্তরাজ্য তবে আমরাও গভীরভাবে এতে অংশগ্রহণ করি।
ইরানের প্রদর্শনী এলাকায় ১০টি ইরানি কোম্পানি নিজস্ব বৈশিষ্ট্যময় পণ্য ও পরিষেবা নিয়ে এসেছে। চীনা ইরান নবায়ন কেন্দ্রের পরিচালক আমিরও দ্বিতীয়বারেরর মতো সিফটিসে এসেছেন। তিনি মনে করেন, সিফটিস ভালো একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে সবাই নিজের পরিষেবা ও পণ্য প্রচার করতে পারে এবং চীনের সঙ্গে তাদের সহযোগিতা জোরদার করবে। তিনি আরও বলেন, চলতি বছর ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ যৌথ নির্মাণের দশ বছর পূর্তি এবং ইরান ও চীনের সহযোগিতা উন্নত করার ভালো একটি সুযোগ।
তিনি বলেন, ইরান হচ্ছে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ যৌথ নির্মাণের গুরুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে অন্যতম। পাশাপাশি, ইরান চীনের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদী সার্বিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যা চীন ও ইরানের সহযোগিতা, বিশেষ করে উচ্চ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতার ভাল সুযোগ। আমরা আশা করি, ই-বাণিজ্যিক প্ল্যাটফর্ম ইরানি পণ্য চীনে রপ্তানিতে সাহায্য ও সমর্থন করবে। পাশাপাশি, ইরানের কাছে চীনের পণ্য তুলে ধরবে এবং ইরানে চীনা কোম্পানির ব্যবসায় সাহায্য করবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রদর্শন এলাকা খুব জনপ্রিয় একটি এলাকা। কারণ, এখানে মজার ও ইন্টারেক্টিভ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া যায়। দক্ষিণ কোরিয়া পর্যটন ব্যুরোর বেইজিং কার্যালয়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তি পার্ক হো-সং জানান, দক্ষিণ কোরিয়া টানা চার বছরের মতো সিফটিসে অংশ নিচ্ছে। তবে এবার তারা সবচেয়ে বেশি সময়ে সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছে। চীনে দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাসের মিনিস্টার ইউহ পোক-কেউন বলছেন, এ মেলা চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সহযোগিতা করবে বলে আশা করেন তিনি।
তিনি বলেন, সিফটিস দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের কোম্পানির জন্য আরও উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। আমরা দু’পক্ষ অর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা ও যোগাযোগ জোরদারে উত্সাহ দেই।
এবারের মেলায় নানা দেশের প্রদর্শক, পর্যটক ও কোম্পানি আরও যোগাযোগ করেছে এবং উন্মুক্তকরণ, সম্প্রসারণ, গভীরতর সহযোগিতা ও নবায়নের সফলতা ভাগাভাগি করেছে।
(শিশির/তৌহিদ/রুবি)