সেপ্টেম্বর ৩: চীনের আন্তর্জাতিক পরিষেবা মেলা হলো চীনের উন্মুক্তকরণ বৃদ্ধি, সহযোগিতা জোরদার করা ও উদ্ভাবনীমূলক উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। ২ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ‘উন্মুক্তকরণ- উন্নয়নের নেতৃত্ব দেয়, সহযোগিতা- ভবিষ্যত জয় করে’ প্রসঙ্গে ২০২৩ সাল চীনের আন্তর্জাতিক পরিষেবা মেলা অর্থাত্ সিফটি বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মহামারির পর এ বছরই প্রথম চীন সম্পূর্ণ সরাসরি প্রদর্শনীটি শুরু করেছে।
এবারের সিফটি আন্তর্জাতিকীকরণ, কর্তৃত্ব এবং বিশেষীকরণকে তুলে ধরেছে। পাশাপাশি, এতে আরও প্রদর্শক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিনিময়, আলোচনা ও পারস্পরিক উপকারী সহযোগিতা ও পারস্পরিক সুবিধা এবং অভিন্ন কল্যাণ জোরদার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, মোট ২৪০০টিরও বেশি কোম্পানি অফলাইনে প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছে। এরমধ্যে বিশ্বের শীর্ষ ৫০০টি কোম্পানি ও শিল্প-প্রতিষ্ঠানের পরিমাণ পাঁচ শতাধিক। প্রদর্শনীর মোট আয়তন ১.৫৫ লাখ বর্গমিটার। অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা ও প্রদর্শনীর আয়তন উভয়ই আগের মেলার তুলনায় বেশি। এ ছাড়া, ৫৯টি দেশ এবং ২৪টি আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রদর্শনী ও সভা গঠন করেছে, যা আগের মেলার চেয়ে ১২টি বেশি এবং সামগ্রিক আন্তর্জাতিকীকরণের হার ২০ শতাংশের বেশি। মেলায় চীনের পরিষেবা বাণিজ্য উন্নয়ন প্রতিবেদন ও বিশ্ব পর্যটন শহরের উন্নয়ন প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন সাফল্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে।
২০১২ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ছয়বার বেইজিংয়ে মেলাটি আয়োজন করা হয়েছিল। ২০২০ সাল থেকে মেলাটি আনুষ্ঠানিকভাবে সিফটিতে পরিণত হয়। দীর্ঘ ১১ বছরে সিফটি বিশ্বের পরিষেবা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটি নেতৃস্থানীয় মেলায় পরিণত হয়েছে। সিফটি হলো চীন ও বিশ্বের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের একটি প্ল্যাটফর্ম।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে বলা হয়, ২০২২ সালে চীনের পরিষেবা আমদানি-রপ্তানির মোট পরিমাণ ছিল ৬ ট্রিলিয়ন ইউয়ান আরএমবি। যা আগের বছরের চেয়ে ১২.৯ শতাংশ বেশি। চীনের পরিষেবা বাণিজ্যের পরিমাণ টানা নয় বছর ধরে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে ছিল। এ বছরের প্রথমার্ধে চীনের পরিষেবা বাণিজ্যের পরিমাণ অব্যাহতভাবে বেড়েছে।
চীনের বিরাট বাজার ও সুযোগ রয়েছে। এটি বিশ্বের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অনেক কল্যাণকর। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিবাচকভাবে সিফটিতে অংশ নেয়। তারা চীনের বিরাট বাজার ও শিল্পের সুযোগ শেয়ার করতে চায়।
এদিকে ‘সবুজ ও নিম্ন কার্বন’ হলো এবারের মেলার একটি ফোকাস। কার্বন সম্পদ, কার্বন ক্রেডিট ক্রয় ও কার্বন নিরপেক্ষ বীমার উদ্ভাবনী সমাধানের মাধ্যমে মেলা চলাকালে উত্পন্ন গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন নিরপেক্ষ করা হবে এবং ‘শূন্য কার্বন পরিষেবা বাণিজ্যের’ লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা হবে।
এবারের মেলায় ডিজিটাল নেতৃত্বের ভূমিকা তুলে ধরা হয়। বহুমুখী প্রদর্শনী এবং ৯টি বিশেষ প্রদর্শনীতে চিপ প্রযুক্তি, কোয়ান্টাম পরিমাপ ও নিয়ন্ত্রণ, স্যাটেলাইট রিমোট সেন্সিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডিজিটাল চিকিত্সা যত্নে বিশেষ ও নতুন সাফল্য দেখানো হবে। সিফটি বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো পরিষেবা বাণিজ্যের নতুন নতুন ফর্ম্যাট, নতুন মডেল এবং নতুন ধারণা প্রদর্শনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছে। বিগ ডেটা, ইন্টারনেট, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেটাভার্সের ক্ষেত্রে ধারাবাহিক নতুন প্রযুক্তি, নতুন অ্যাপ্লিকেশন, নতুন সাফল্য ও নতুন পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে।
সিফটি’র আয়োজনে প্রতিফলিত হচ্ছে যে, চীন বাস্তব পদক্ষেপের মাধ্যমে অর্থনীতির বিশ্বায়ন এবং মানবজাতির অভিন্ন ভাগ্যের সমাজ গঠনের প্রক্রিয়া জোরদার করে আসছে। চীন বৈদেশিক উন্মুক্তকরণের মৌলিক জাতীয় নীতি মেনে চলছে এবং দৃঢ়ভাবে পারস্পরিক সুবিধা ও অভিন্ন কল্যাণকর একটি উন্মুক্ত কৌশল অনুসরণ করছে। পাশাপাশি, অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন আরও উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, ভারসাম্যপূর্ণ এবং বিজয়ী করার দিকনির্দেশনা দিচ্ছে।
(ছাই/তৌহিদ)