সেপ্টেম্বর ২: গত ৩১ আগস্ট, জাপানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রাম ইমানুয়েল, বিশেষভাবে জাপানের ফুকুশিমায় গিয়ে সিফুড খেয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি প্রকারান্তরে ফুকুশিমার পারমাণবিক বর্জ্যপানি সমুদ্রে নিঃসরণের বিষয়টিকে সমর্থন করেন। পাশাপাশি, তিনি জাপানের তথ্যমাধ্যমে চীনের সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করেন। এমনকি, তিনি চীনকে মিথ্যা অপবাদও দেন; তিনি বলেন, ‘চীন সমুদ্রের পরিবেশ নষ্ট করছে।’
জাপানের কৃষি, বন, ও সমুদ্রবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপাত্ত অনুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে জাপান থেকে সামুদ্রিক পণ্যের আমদানি সবচেয়ে বেশি কমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র আমদানি কমিয়েছে—এমন তিনটি খাদ্য মূলত জাপানের পারমাণবিক বর্জ্যপানিপ্রভাবিত অঞ্চলে উত্পাদিত। যুক্তরাষ্ট্রের এহেন কাজে তার আসল ইচ্ছা প্রকাশিত হয়।
প্রশ্ন হচ্ছে: তাহলে কেন যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে জাপানকে প্রকাশ্যে সমর্থন করছে? আসলে যুক্তরাষ্ট্র নিজে সমুদ্রে “বিষ” নিঃসরণ করেছে অনেক বার। সব তার নিজের স্বার্থের জন্য। মার্কিন লস এঞ্জেলেস টাইমস পত্রিকার রিপোর্ট অনুসারে, ১৯৪৪ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত, মার্কিন সশস্ত্রবাহিনী ২৯ হাজার টন নার্ভ গ্যাস ও মাস্টার্ড গ্যাসের টক্সিক্যান্ট এবং ৫ শতাধিক টন র্যাডিও-অ্যাক্টিভ নিউক্লিয়ার বর্জ্য সমুদ্রে ফেলেছে। এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে সমুদ্রে প্লাস্টিক বর্জ্যের মূল উত্স। মাত্র ২০১৬ সালে, যুক্তরাষ্ট্র ৪.২ কোটি টন প্লাস্টিক বর্জ্য সৃষ্টি করে, যা একটি বিশ্বরেকর্ড।
অর্থনৈতিক স্বার্থ ও ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্র জাপানের এহেন আচরণকে সমর্থন করছে। কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, জাপানকে সমর্থন করার অন্যতম মূল কারণ হচ্ছে, নিউক্লিয়ার এনার্জি খাতে ফুকুশিমার পারমাণবিক বর্জ্যপানির নেতিবাচক প্রভাব এড়ানো।
তবে, জাপানের এহেন আচরণ গোটা মানবস্বার্থের পরিপন্থি। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের অপচেষ্টা অবশ্যই সফল হবে না। বাস্তবতার আলোকে এ কথা বলা যায় যে, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান একসঙ্গে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
(আকাশ/আলিম/মুক্তা)