‘নেভার সে নেভার’ মুভির প্রধান অভিনেতা মা হু
2023-08-31 17:27:53

তার নাম মা হু। তিনিই ক্রীড়া-ভিত্তিক খুব জনপ্রিয় একটি মুভি ‘নেভার সে নেভার’-এর একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এ চরিত্রের নামও মা হু।

মা হু সম্প্রতি সিন হুয়া বার্তা সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, ক্রীড়া পাহাড়ে বাস করা ছেলে-মেয়েদের দেখার গণ্ডি প্রসারিত এবং তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের একটি পথ যুগিয়েছে।

চলচ্চিত্রটিতে একজন তরুণ মিশ্র মার্শাল আর্টিস্টের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি। তার শারীরিক গঠন ও চোখের অদম্য দৃষ্টি নিখুঁতভাবে চরিত্রটিকে প্রকাশ করেছে। তিনি স্বীকার করেন যে, পাহাড়ি এলাকার একটি ছেলের অবয়ব পেতে তিনি অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় ১৫ কেজি ওজন কমান এবং তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে মিশ্র মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ নেন। তিনি বলেন, “ওজন কমানো ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ খুব কঠিন। কিন্তু মুভিতে দেখানো প্রভাব দেখে এসব কষ্ট দূর হয়ে যায় বলে আমি মনে করি।”

এর আগে মা হু ‘টাফ আউট’ (Tough Out) নামের একটি চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রেও অভিনয় করেন। বারো বছর বয়সে তিনি উত্তর পশ্চিমের নিংসিয়া থেকে বেইজিংয়ে আসেন। তিনি বলেন, ‘টাফ আউট’ চলচ্চিত্রটি হলো তার প্রশিক্ষণ ও জীবনের সত্যিকারের রেকর্ড। তবে ‘নেভার সে নেভার’ মুভিতে তার অভিনীত সেই চরিত্রটি ক্রীড়া মহলে তার সবেমাত্র প্রবেশের অবস্থার মতো।

পরপর দু’টি জনপ্রিয় ক্রীড়া-থিমযুক্ত মুভিতে কারোর অভিনয় করা খুব একটা দেখা যায় না। তিনি এখন বেসবল অঙ্গনের মহাতারকা হয়ে উঠেছেন। তিনি মনে করেন, চলচ্চিত্র তার ভবিষ্যত উন্নয়নে একটি সম্ভাবনা যুক্ত করলেও বেসবল, যেটা তার ভাগ্য পরিবর্তন করে দিয়েছে, এখনও তার মনোযোগের প্রধান বিষয়।

তিনি জানান, ‘নেভার সে নেভার’ মুভিটি মুক্তি পাওয়ার পর চলচ্চিত্রের প্রতি তার মনোযোগ আগের চেয়ে বেড়েছে। তিনি বলেন, “মাঝেমাঝে এক দিনেই দুই-তিনটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছি। পরে আমি নিশ্চিয়ই বেসবল দলে ফিরে যাবো এবং কোচের সহায়তায় খেলার মান উন্নত করতে চাই।”

চলতি বছরের জুন মাসে মা হু বেসবল দলের সঙ্গে ফিলিপিন্সে অনুষ্ঠিত এশীয় অঞ্চলের অনূর্ধ্ব ১২ গ্রুপের প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এটি বিশ্বের বৃহত্তম যুব বেসবল ও সফটবল প্রতিযোগিতাগুলোর অন্যতম। প্রতি বছর ৫ লাখেরও বেশি তরুণ-তরুণী এতে অংশ নেন।

এই প্রতিযোগিতা প্রসঙ্গে মা হু বলেন, “অতীতে যখন আমি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে বিদেশে যেতাম, আমি সবসময় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিদেশি খেলোয়াড়দের সঙ্গে নিজের ব্যবধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করতাম। আসলে, এটি আমাদের শক্তি ও সুবিধা আবিষ্কার করার একটি সুযোগও বটে।”

বর্তমানে বেসবল দলে তার চেয়ে তরুণ সদস্যদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় অপ্রাপ্তবয়স্ক দলের সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

মা হু বলেন, “বেসবলের এই বড় পরিবারের প্রতিটি সদস্যের চোখই প্রকাশ করে যে, তারা পরাজয় স্বীকার করে না। তারা খেলায় এমনকি শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াই করার সাহস রাখে এবং সমষ্টিগত স্বার্থকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রাখে। এটি আমাদের সুবিধা। এই কারণেই আমরা অনেক বার বেসবল চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফি জিততে পেরেছি।”

মা হু মনে করেন, বেসবল হলো একটি দলগত খেলা আর মিশ্র মার্শাল আর্ট একটি ব্যক্তিগত ক্রীড়া। তবে তাদের একটি অভিন্নতা রয়েছে। সেটা হলো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আগে বিদেশি আধিপত্যপূর্ণ দুটি খেলায় চীনা উল্লাস প্রকাশ করা।

সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, “বেসবল দলে যোগ দেওয়ার শুরুতে আমি ম্যান্ডারিন বলতে পারতাম না। শত শত দর্শকদের সঙ্গে সামনে কথা বলা আমার কাছে অকল্পনীয় ব্যাপার ছিলো।”

ক্রীড়াজগতে নিজের ৫ বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে। ক্রীড়ার কারণে তিনি জন্মস্থানের পাহাড় থেকে বের হয়েছেন এবং সমতলের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এই জগতকে দেখতে পারছেন। তিনি মনে করেন, তিনি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী খেলোয়াড় হওয়ার যোগ্যতা রাখেন।

মা হু মনে করেন, ‘পথ খোঁজা’ হলো তার অভিনীয় দুটি মুভির আলোচিত বিষয়। তার মতো প্রায় একই পটভূমি থেকে আসা সমবয়সী তরুণদের জন্য উন্নয়নের একটি সঠিক পথ খুঁজে পাওয়া এখনও সহজ ব্যাপার নয়। তাদের শরীরে নানা সুবিধা নিহিত থাকে। তাই কোচ ও পরিচালকদের প্রয়োজন তাদের সে সুবিধা আবিষ্কার করা। এর ফলে পাহাড়ে বাস করা যুবকদের সম্ভাব্য শক্তি কাজে লাগানো সম্ভব হবে।

লিলি/রহমান