‘তারুণ্যের অগ্রযাত্রা’ পর্ব ৩৩
2023-08-30 15:56:04

 



‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ অনুষ্ঠানে স্বাগত জানাচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী।  দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার প্রধান হাতিয়ার তারুণ্য। তরুণরা চাইলেই পারে সমাজকে বদলে দিতে। এজন্য দরকার তাদের চিন্তা ও মেধার সমন্বয়। চীন ও বাংলাদেশের তরুণদের অফুরান সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবো এই অনুষ্ঠানে। তরুণদের সৃজনশীলতার গল্পগাঁথা নিয়েই সাজানো হয়েছে আমাদের তারুণ্যের অগ্রযাত্রা।       

১. ওয়েনচৌতে বিদেশে বসবাসরত চীনা নতুন প্রজন্মের উদ্ভাবনের উপর সম্মেলন

  

‘ওভারসিজ চাইনিজ কানেক্টিং দ্য ওয়ার্ল্ড, ইয়াং পিপল ক্রিয়েটিং দ্য ফিউচার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিদেশে অবস্থানরত চীনা নতুন প্রজন্মের উদ্ভাবন এবং উদ্যোক্তা বিষয়ক একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি পূর্ব চীনের চেচিয়াং প্রদেশের ওয়েনচৌতে স্টেট কাউন্সিল, অল-চীন ফেডারেশন অব রিটার্নড ওভারসিজ চাইনিজ এবং চেচিয়াং প্রাদেশিক সরকারের যৌথ উদ্যোগে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

বিদেশে অবস্থানরত চীনারা জনগণের মধ্যে কুটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি,  অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য বিনিময়ের প্রচার, প্রযুক্তিতে বহুপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে বলে জানান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান তিং ছাংলি।

সম্মেলনে নতুন প্রজন্মকে উদ্দেশ্য করে ফেডারেশনের ভাইস-চেয়ারম্যান ছং হং বলেন, এই প্রজন্মকে জাতীয় চেতনার উত্তরাধিকারী হতে হবে এবং উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তার কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে  কঠোর পরিশ্রমী, অগ্রগামী এবং উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

 

তরুণরাই চীনা জাতির পুনরুজ্জীবনে অবদান রেখে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ছং হং।

 

বিশেষজ্ঞ সামিট সংলাপ, ডিজিটাল ট্রেড ডায়ালগ এবং ব্যবসা ও যুব সংলাপের মতো ইভেন্টগুলো এই সম্মেলনের অংশ ছিলো।  চেচিয়াংয়ের বন্দর শহর ওয়েনচৌ সাম্প্রতিক কয়েক বছরে প্রবাসীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তাছাড়া বিদেশিদের কাছে সবচেয়ে বিখ্যাত শহরগুলির মধ্যেও একটি ওয়েনচৌ।

 

প্রতিবেদকঃ রওজায়ে জাবিদা ঐশী

সম্পাদকঃ মাহমুদ হাশিম

২.  চীনের ‘স্যালুট বয়’ খ্যাত লং চেং

আরও একবার সবার হৃদয় ছুঁয়েছে চীনের ‘স্যালুট বয়’ খ্যাত লং চেং। ২০০৮ সালে ওয়েনচুয়ান ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তুপ থেকে রক্ষা পাওয়া লং এবার কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় অসাধারণ ফলাফল করে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। লেখাপড়া শেষ করে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়ে দেশের মানুষের সেবা করতে  চায় সে।

 

 

২০০৮ সালে দক্ষিণ পশ্চিম চীনের সিছুয়ান প্রদেশে ভয়াবহ ওয়েনচুয়ান ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তুপ থেকে রক্ষা পায় তিন বছরের শিশু লং চেং। তাকে উদ্ধার করে যখন স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন ছোট শিশুটি সামরিক কায়দায় উদ্ধারকারী সেনাসদস্যদের স্যালুট দেয়।

 

ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে লং চেংয়ের সেই স্যালুট চীনাদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। তারপর থেকে স্যালুট বয় হিসেবে চীনাদে কাছে পরিচিতি পায় লং। ১৫ বছর পর এবারের বার্ষিক কলেজ ভর্তি পরীক্ষা কাওখাওতে অসাধারণ ফলাফল করে আবারও চীনের হৃদয় ছুঁয়েছেন লং চেং।

 

সিছুয়ানের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে মানবিক শাখায় শীর্ষ ৩০-এ স্থান পরে নেন লং। এমন অসাধারণ সাফল্যে লং ও তার পরিবার যারপর নাই খুশি। এরই মধ্যে লং চীনের রাজধানীর মর্যাদাপূর্ণ পিকিং ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছেন। আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে লেখাপড়া করবেন তিনি।

 

সিছুয়ানে ভূমিকম্প দুর্গতের সহায়তা ও প্রদেশের পুনর্গঠনের সঙ্গে জড়িত সকালের প্রতি আজও কৃতজ্ঞ লং চেং। পড়ালেকা শেষ করে সরকারি চাকরি কিংবা সেবামূলক কোনও কাজে যোগ দিয়ে দেশ ও জনগণের সেবা করতে চান চীনের এই জিনিয়াস বয়।

 

প্রতিবেদকঃ মাহমুদ হাশিম 

সম্পাদকঃ রওজায়ে জাবিদা ঐশী

৩.

সম্প্রতি চীন সরকারের বৃত্তি পাওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের একজন আশা আক্তার। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে নানচিং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরের জন্য যাচ্ছেন তিনি। চীন থেকে প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভিজ্ঞতা অর্জন করে বাংলাদেশে তা কাজে লাগাতে চান আশা। সম্প্রতি চায়না মিডিয়া গ্রুপকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি তার প্রত্যাশার কথা জানান।  

সাক্ষাৎকার গ্রহণঃ রওজায়ে জাবিদা ঐশী

৪.  চীন সবার জন্য উচ্চ মানের শিক্ষার সুযোগ দেয়

 

চীনের মধাঞ্চলীয় হুনান প্রদেশে, ৪ লাখ ৭৭ হাজার শিক্ষার্থী এই বছরের জাতীয় কলেজে প্রবেশিকা পরীক্ষা দেয়। তাদের মধ্যে ১৭২ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আবাসনের জন্য আবেদন করে। প্রতিবন্ধীদের জন্য ২০১৭ সাল থেকে নেয়া বিশেষ পদক্ষেপের কথা জানান প্রাদেশিক শিক্ষা বিভাগের একজন কর্মকর্তা ওয়েই ইয়ং।

 

 

 

‘২০১৭ সাল থেকে, বিভিন্ন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আমাদের প্রাদেশিক কলেজগুলোতে প্রবেশিকা পরীক্ষা প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে৷ এই উদ্যোগের লক্ষ্য শুধুমাত্র সমান শিক্ষার সুযোগই নয়, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আরও শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়া।’

সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ জানান, চীন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে, বিশেষ করে সম্মান ও ন্যায্যতার সাথে শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার কাজ করছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী কিছু শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষার ন্যায্য অধিকারও বাস্তবে পরিণত হচ্ছে।

 

বিশ্লেষকরা মনে করেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং অন্তর্ভুক্তির প্রসারের মাধ্যমে, চীন এমন একটি সমাজ তৈরি করার জন্য কাজ করছে যা তার সমস্ত নাগরিকের বিভিন্ন চাহিদা এবং আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান করে। 

এ ছাড়াও গ্রামীণ বিদ্যালয়ে আরও অনুদানের মাধ্যমে শিক্ষাগত বৈষম্য মোকাবিলায় আরো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। পাঠদানের জন্য দক্ষ শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এ ধরণের উদ্যোগ দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগগুলোতে ন্যায়সঙ্গত অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য একটি বৃহত্তর প্রতিশ্রুতির অংশ বলে মনে করেন তারা।  

 

প্রতিবেদকঃ রওজায়ে জাবিদা ঐশী

সম্পাদকঃ মাহমুদ হাশিম

 

আমাদের ‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ আজ এই পর্যন্তই। পরবর্তী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানিয়ে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। শুভকামনা সবার জন্য। আল্লাহ হাফেজ।

 

পরিকল্পনা ,পরিচালনা ও সঞ্চালনা : রওজায়ে জাবিদা ঐশী

অডিও সম্পাদনা:  রফিক বিপুল

সার্বিক সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী