দীর্ঘ সময় ধরে চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের উন্নয়ন নিয়ে বিদেশে অনেক নেতিবাচক খবর প্রচারিত হয়ে আসছে। আর, যারা এমন খবর প্রকাশ করছে, তারা আসলে একবারও সিনচিয়াংয়ে আসেনি, বরং ঘরে বসে এমন খবর সৃষ্টি করছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের তথ্যমাধ্যমের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা সিনচিয়াং পরিদর্শন করেন, স্বচোখে দেখেন সিনচিয়াংয়ের মানুষের প্রকৃতি জীবন, সুন্দর জীবন। এমন বাস্তবতার সামনে সব মিথ্যা উধাও হয়ে যেতে বাধ্য। আসলে, বরাবরই চীন সরকার সিনচিয়াংয়ের উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে আসছে।
এবার ব্রিকস শীর্ষসম্মেলনে যোদগানের পর দেশে ফেরার পথে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বিশেষ করে সিনচিয়াংয়ে গিয়ে এক কর্মসভায় যোগ দেন। সেখানে সিনচিয়াংয়ের পরবর্তী উন্নয়নের জন্য নতুন নির্দেশনা দেন তিনি। সম্মেলন থেকে কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে? বিস্তারিত দেখুন আজকের ভিডিওতে।
প্রথমে বুঝতে হবে, সিনচিয়াংয়ের উন্নয়ন দেশের উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রয়েছে। সি চিন পিং বলেন, সিনচিয়াংয়ের কাজ শুধু আঞ্চলিক ব্যাপার না, বরং পুরো দেশের জন্য বড় কাজ। দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, সমাজের স্থিতিশীলতা ও দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তা, যা সিনচিয়াং উন্নয়নের মূল লক্ষ্য। শনিবার আয়োজিত সিনচিয়াং-বিষয়ক কর্মসভায় সি চিন পিং বলেন, আইনানুগভাবে সিনচিয়াং পরিচালনা করা, ঐক্যবদ্ধ হয়ে সিনচিয়াংয়ের স্থিতিশীলতা বাস্তবায়ণ করা, এবং সিনচিয়াংকে সমৃদ্ধ করাসহ বিভিন্ন কাজ ভালোভাবে করতে হবে।
২০১৪ সালে সি চিন পিং ‘তালিমের বীজ’ দিয়ে সিনচিয়াংয়ে বিভিন্ন জাতির মধ্যে সম্পর্ককে বর্ণনা করেছিলেন। তাঁর আশা, সিনচিয়াংয়ের বিভিন্ন জাতির মানুষ তালিমের বীজের মতো ঘনিষ্ঠভাবে থাকবে। এ থেকে বোঝা যায়, কেন্দ্রীয় সরকার থেকে জনসাধারণ পর্যন্ত, জাতীয় ঐক্য হল অভিন্ন আকাঙ্খা, এবং তা সরকারের কাজের প্রধান বিষয়।
এ ছাড়া, এবার সিনচিয়াং কর্মসভায় আরেকটি তথ্য জানা যায়, তা হল, সিনচিয়াং-এর উন্নয়নের ওপর সরকার খুব গুরুত্ব দিচ্ছে। মূল কথায়, উন্নয়ন হল সিনচিয়াং সমস্যা সমাধানের মূল উপায় এবং সিনচিয়াংয়ের দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি।
২০১৪ সালে সি চিন পিং সিনচিয়াং পরিদর্শনের সময় বলেছিলেন, যদি রেশমপথ অর্থনৈতিক এলাকা স্থাপন করা যায়, তাহলে সিনচিয়াং সমৃদ্ধির কেন্দ্রে পরিণত হবে। তার এক মাস পর, সি চিন পিং আবারও সিপিসি-র কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর সম্মেলনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, সিনচিয়াংকে রেশমপথ অর্থনৈতিক এলাকার কেন্দ্র হিসেবে উন্নয়ন করতে হবে। এর সঙ্গে সরকার আরও স্পষ্টভাবে সিদ্ধান্ত নেয় যে, সিনচিয়াংয়ের আঞ্চলিক সুবিধা কাজে লাগিয়ে, রেশমপথ অর্থনৈতিক এলাকার মূল অংশ হিসেবে, সিনচিয়াংকে অভ্যন্তরীণ উন্মুক্ততা ও সীমান্তে উন্মুক্ততার একটি উচ্চভূমিতে পরিণত করতে হবে।
এসব নীতির আলোকে, সিনচিয়াং-এ বৈশিষ্ট্যময় আধুনিক শিল্পব্যবস্থা গড়ে উঠেছে, আধুনিক কৃষি ও ফটোভোলটাইক্সের মতো শিল্পপার্ক বিকশিত হচ্ছে, এখন সিনচিয়াংয়ের সাথে মূল ভূখণ্ডের শিল্পসহযোগিতা ও কর্মীবিনিময় আরও জোরদার হচ্ছে; সিনচিয়াংয়ের উন্নয়নের পথ আরও মসৃণ হচ্ছে।
মোদ্দাকথা, এবারের কর্মসভায় সিনচিয়াংয়ের সমাজের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয়েরও ওপর বেশ গুরুতারোপ করা হয়। আমরা আশা করি, সরকার থেকে বেসরকারি পর্যায় পর্যন্ত, বিভিন্ন স্তরের চেষ্টায় সিনচিয়াং উন্নয়নের পথ ধরে সামনে এগিয়ে যাবে। (ফেই/আলিম)