রোববারের আলাপন- স্টেডিয়াম নিশ্চিত করাসহ নানা ব্যবস্থায় গণশরীরচর্চা এগিয়ে নিয়েছে চীন
2023-08-27 06:36:38


আকাশ: সুপ্রিয় শ্রোতা, সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানে। আপনাদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের সাপ্তাহিক আয়োজন ‘রোববারের আলাপন’। আপনাদের সঙ্গে আছি আমি আকাশ এবং ...

বন্ধুরা ১৪ অগাস্ট সন্ধ্যা ৮টা ৪৯ মিনিটে, বাংলাদেশে ৫ মাত্রার ভূমিকম্প ঘটেছে। ভাই, এবারের ভূমিকম্পে কি অবস্থা বাংলাদেশে?

তৌহিদ: বাংলাদেশে গত মে মাস থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত প্রায় চার মাসে তিন বার ছোট থেকে মাঝারি আকারের যে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, তার মধ্যে প্রায় প্রতিটিরই উৎপত্তিস্থল ছিল দেশের সীমানার ভেতর বা আশেপাশে। মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস-এর তথ্য অনুযায়ী, এই ভূমিকম্পটির মাত্রা রিখটার স্কেলে ছিল ৫.৫ যা মাঝারি মাত্রার একটি ভূমিকম্প। আর এর উৎপত্তিস্থল ছিল বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের সিলেটের কানাইঘাট এলাকায়। গভীরতা ছিল মাত্র ১০ কিলোমিটার।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বার্মিজ প্লেট ও ইন্ডিয়ান প্লেটের পরস্পরমুখী গতির কারণেই এ ধরণের ভূমিকম্প হচ্ছে। এই দুটি প্লেটের সংযোগস্থলে প্রচুর পরিমাণে শক্তি জমে রয়েছে যেগুলো বের হয়ে আসার পথ খুঁজছে। আর সে কারণেই ঘন ঘন এমন ভূমিকম্প অনুভূত হচ্ছে।

এবিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, দু'দিন আগে বা পরে এই শক্তি বেরিয়ে আসবেই। আর সেটাই জানান দিচ্ছে এই ছোট ভূমিকম্পগুলো।

বাংলাদেশে সবশেষ ১৪ই অগাস্ট রাত ৮টা ৪৯ মিনিটের দিকে একটি ভূমিকম্প অনুভূত হয় রাজধানীসহ দেশের বেশিরভাগ এলাকায়।

ইতিহাস বাংলাদেশে ও এর আশপাশের অঞ্চলে ভূমিকম্প নতুন কিছু না হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব ভূমিকম্প নিয়ে সঠিক তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায় না। এছাড়া ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছিল তা বিভিন্ন নথিতে উল্লেখ পাওয়া গেলেও সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক প্রমাণ মেলে কম।

বাংলাদেশের সিলেট, চট্টগ্রাম এবং ঢাকায় ১৫৪৮, ১৬৪২, ১৬৬৩, ১৭৬২, ১৭৬৫, ১৮১২, ১৮৬৫, ১৮৬৯ সালে ভূমিকম্প হওয়ার ঐতিহাসিক উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে এসবের মাত্রা কত ছিল তা জানা যায় না।

এছাড়া ১৮২২ ও ১৮১৮ সালে সিলেট ও শ্রীমঙ্গলে ৭.৫ ও ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। তবে এর ক্ষয়ক্ষতির তেমন বর্ণনা পাওয়া যায় না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁঞা বলেন, বাংলাদেশে গত ১২০-২৫ মাঝারি ও বড় মাত্রার প্রায় শতাধিক ভূকম্প অনুভূত হয়েছে। তবে এসবের মধ্যে সাত বা তার চেয়ে বড় মাত্রার ভূমিকম্পের সংখ্যা খুব বেশি নয়।

ভাই, আমি উত্তরার থাকার সময় দুবার ভূমিকম্প অনুভূতি করেছিলাম। একটু ঝাঁকুনি বোধ করি। আপনি বাংলাদেশের ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা আমাদের কিছু বলতে পারেন?

তৌহিদ:...

ভাই, তাহলে ভয়াবহ ভূমিকম্প ঘটানোর সময় আমরা কি কি করতে পারি?

তৌহিদ:...

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিনিয়ত ভূমিকম্প হয়। এ কম্পন আগে থেকে আঁচ করা যায় না বলে তাৎক্ষণিকভাবে কী করবেন, তা বুঝে উঠতে পারেন না অনেকে।

ভূমিকম্প হলে সম্ভাব্য ক্ষতি কমাতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে, তা জানিয়েছে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস। বাহিনীর পক্ষ থেকে ১২টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।

১. ভূকম্পন অনুভূত হলে শান্ত থাকুন। যদি ভবনের নিচ তলায় থাকেন, তাহলে দ্রুত বাইরে খোলা জায়গায় বেরিয়ে আসুন।

২. যদি ভবনের ওপর তলায় থাকেন, তাহলে কক্ষের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিন।

৩. ভূমিকম্পের সময় বিছানায় থাকলে বালিশ দিয়ে মাথা ঢেকে নিন। অতঃপর টেবিল, ডেস্ক বা শক্ত কোনো আসবাবের নিচে আশ্রয় নিন এবং তা এমনভাবে ধরে থাকুন যেন মাথার ওপর থেকে সরে না যায়। এ ছাড়া শক্ত দরজার চৌকাঠের নিচে ও পিলারের পাশে আশ্রয় নিতে পারেন।

৪. উঁচু বাড়ির জানালা, বারান্দা বা ছাদ থেকে লাফ দেবেন না।

৫. ভূমিকম্পের প্রথম ঝাঁকুনির পর ফের ঝাঁকুনি হতে পারে। সুতরাং একবার বাইরে বেরিয়ে এলে নিরাপদ অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত ভবনে প্রবেশ করবেন না।

৬. রান্নাঘরে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব বের হয়ে আসুন। সম্ভব হলে বাড়ির বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মেইন সুইচ বন্ধ করুন।

৭. মোবাইল বা ফোন ব্যবহারের সুযোগ থাকলে উদ্ধারকারীদের আপনার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন।

৮. দুর্ঘটনার সময় লিফট ব্যবহার করবেন না।

৯. যদি কোনো বিধ্বস্ত ভবনে আটকা পড়েন এবং আপনার ডাক উদ্ধারকারীরা শুনতে না পায়, তাহলে বাঁশি বাজিয়ে অথবা হাতুড়ি বা শক্ত কোনো কিছু দিয়ে দেয়ালে বা ফ্লোরে জোরে জোরে আঘাত করে উদ্ধারকারীদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করুন।

১০. ঘরের বাইরে থাকলে গাছ, উঁচু বাড়ি, বিদ্যুতের খুঁটি থেকে দূরে থাকুন।

১১. গাড়িতে থাকলে ওভারব্রিজ, ফ্লাইওভার, গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি থেকে দূরে গাড়ি থামান। ভূকম্পন না থামা পর্যন্ত গাড়ির ভেতরেই থাকুন।

১২. ভাঙা দেয়ালের নিচে চাপা পড়লে বেশি নড়াচড়ার চেষ্টা করবেন না। কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রাখুন এবং উদ্ধারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করুন। ব্যাটারীচালিত রেডিও, টর্চলাইট, পানি এবং প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম বাড়িতে রাখুন।

সংগীত

গত ৮ আগস্ট ছেংতু ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমস শেষ হয়েছে। এবার ছেংতুতে বিশ্বের তরুণ-তরুণীদের ক্রীড়া সম্মেলনে মানুষদের ক্রীড়ার আগ্রহ অনেক উন্নত হয়েছে। 

ছেংতুর জনৈক বাসিন্দা লং ছেং বলেন, এটি আগে ছিল ছেংতু ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমসের স্টেডিয়াম, তা এখন আবার খুলে দেওয়া হয়েছে। আমি এখানে আসতে পেরে অনেক খুশি। এখানকার পরিবেশ ও উপকরণ অনেক ভাল। 

আসলে, ক্রীড়া স্টেডিয়াম ও স্থাপনা হচ্ছে ছেংতুকে দেওয়া ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমসের গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়া ঐতিহ্য। ৩৯টি স্টেডিয়ামের মধ্যে ১৩টি ছিল নতুন নির্মিত। বাকিগুলো ছিল পুরানো স্টেডিয়াম থেকে সংস্কার করা। এসময় এসব স্টেডিয়াম বিনামূল্যে বা কম খরচে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। যাতে আরো বেশি লোক ছেংতু ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমসের ঐতিহ্য উপভোগ করতে পারে।

অন্যদিকে, চিয়াং সি প্রদেশের নান ছাংয়ের একটি প্রাথমিক স্কুলের ক্রীড়া মাঠে অনেক ক্রীড়া অনুরাগী দেখা যায়। তারা সেখানে খেলাধুলার আনন্দ উপভোগ করছেন। শুধু শিক্ষার্থীই নয়, আশেপাশের বাসিন্দারাও আছেন। 

নান ছেংয়ের বাসিন্দা ইউয়ান ইয়াং বলেন, আমার বাসা সেখান থেকে বেশি দূর নয়। বৈদ্যুতিক সাইকেলে করে মাত্র ৫-৬ মিনিট। আমরা এখানে ব্যাডমিন্টন ও বাস্কেটবল খেললে অনেক খরচ সাশ্রয় করতে পারব। 

নান ছেংয়ের একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান চাং ইউ বলেন, শহরের শিক্ষা ব্যুরোর দিক-নির্দেশনায়, আমরা আমাদের ক্রীড়া স্থাপনা আশেপাশে বসবাস করার বাসিন্দাদের জন্য বিনাম্যূলে খুলে দিয়েছি। এতে তারা অনেক ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। এখন গ্রীষ্মের ছুটিতেও আমাদের স্কুলের স্টেডিয়াম ও মাঠ সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগছে। প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় ছাত্রছাত্রীদের বাবা-মা বা আশেপাশের বাসিন্দারা এখানে দৌড়াতে পারেন এবং ব্যায়াম করতে পারেন। 

এ বছরের ৮ অগাস্ট গণশরীরচর্চা দিবসের আগে, নান ছাং শিক্ষা ব্যুরো ঘোষণা করেছে যে, তাদের এলাকার ২৪টি প্রাথমিক স্কুল ও মাধ্যমিক স্কুলের স্টেডিয়াম ও স্থাপনা বাসিন্দাদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। 


ভাই, চীনের গণশরীরচর্চার আপনার কিছু নিজের অভিজ্ঞতা আমাদের বলতে পারবেন কি?

তৌহিদ:...

(আকাশ/তৌহিদ)