অক্টোবর ২৪: আজ (বৃহস্পতিবার ) অনেকের বিরোধী কণ্ঠস্বরকে উপেক্ষা করে, জাপানি সরকার ফুকুশিমার পারমাণবিক দূষিতপানি সমুদ্রে ফেলা শুরু করেছে। সমুদ্রের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যের ওপর রীতিমতো ‘হামলা’ শুরু হয়েছে যেন! এদিনকে বৈশ্বিক সামুদ্রিক পরিবেশের দুঃখের দিবস হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। জাপানি সরকার পুরোপুরি প্রাকৃতিক পরিবেশের ধ্বংসকারী ও বৈশ্বিক সমুদ্রদূষণকারী হয়ে গেছে। ইতিহাসে আরেকটি অমার্জনীয় দাগ রেখেছে জাপান।
মানবজাতি শান্তিপূর্ণভাবে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করতে চায়। অথচ প্রথমবারের মতো মানুষ নিজেই সমুদ্রে পারমাণবিক দূষিতপানি ফেলছে। নিঃসন্দেহে আন্তর্জাতিক সমাজ এক বিশাল ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির সম্মুখীন। টোকিও বিদ্যুত্ কোম্পানির পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ১৭ দিনের মধ্যে ৭৮০০ টন পারমাণবিক দূষিতপানি সমুদ্রে ফেলবে তারা। বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেন যে, সম্প্রতি জাপানে প্রায় ১৩ লাখ টন পারমাণবিক দূষিতপানি রয়েছে, যা নিঃসরণের সময় সম্ভবত ৩০ থে ৫০ বছর হবে। সংশ্লিষ্ট গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, পারমাণবিক দূষিতপানি সম্ভবত ২০২৬ সালের নভেম্বরে উত্তর আমেরিকার উপকূলে পৌঁছাবে। দূষিত এই পানি প্রায় উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরকে ঢেকে ফেলবে। আর ২০৩০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতীয় মহাসাগরে ছড়িয়ে পড়বে। আবার ১০ বছর পর প্রায় গোটা প্রশান্ত মহাসাগরে ছড়িয়ে পড়বে।
মানবজাতির জন্য এর মানে কী? বহু গবেষণা থেকে স্পষ্ট যে, ফুকুশিমার পারমাণবিক দূষিতপানিতে ট্রাইটিয়াম, কার্বন-১৪ ও কোবাল্ট-৬০সহ ৬০রটিও বেশি রকমের তেজস্ক্রিয় রেডিওনুক্লাইড পদার্থ রয়েছে। এসব পদার্থের দীর্ঘ প্রভাব সম্ভবত কয়েক বছর, কয়েক দশক বা কয়েক হাজার এমনকি কয়েক লাখ বছর স্থায়ী হবে। সমুদ্রে ফেলার এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম কার্যকরভাবে কাজে লাগানো পারবে কি না, সেটাও একটা প্রশ্ন। সংশ্লিষ্ট পরিচালনা ব্যবস্থা ও তত্ত্বাবধানমূলক ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে চলবে, এটাও নিশ্চিত করা সহজ কাজ নয়। জাপান সরকার এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে নারাজ বা তাদের কাছে এসব প্রশ্নের কোনো সদুত্তর নেই। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)